প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের এপিএস-ভাগ্নের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা

0
582

যশোর প্রতিনিধি:
যশোরের মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের শ্লীলতাহানি, কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি, গালিগালাজ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও এপিএস কবির খান সহ পাঁচজনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে।

যশোর জেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মণিরামপুর আমলী আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম ভুক্তভোগীর অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সিআর মামলা নম্বর-২৫০/২০।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আবদুল লতিফ জানান, মামলার আসামিরা হলেন—মণিরামপুরের ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু, ভোজগাতি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, মণিরামপুর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জলি আক্তার, মণিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও মণিরামপুরের মৃত ইব্রাহিম খানের ছেলে কবীর খান।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২২ জুলাই-২০২০ মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সভাপতিত্বে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ও উপদেষ্টা হিসেবে মামলার বাদী নাজমা খানম উপস্থিত ছিলেন। সভায় শুরুতে বাদী নাজমা খানম পৌর এলাকায় চারটি প্রতিষ্ঠানে চুরি সংঘটিত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করলে প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় প্রতিমন্ত্রীসহ সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের পুত্র তার ফেসবুকে জনপ্রতিনিধিদের কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিচার দাবি করেন এক নম্বর আসামি ।

তবে এজেন্ডাবর্হিভূত বিষয় হলেও বাদী যুক্তিসঙ্গত জবাব দেন। এরপর আসামিগণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে হট্টগোল, হইচই করে জামার হাতা গুটিয়ে বাদীকে গালিগালাজ ও মারপিট করতে যায়। আসামিদের অপতৎপরতা বুঝতে পেরে বাদী দ্রুত মিলনায়তন ত্যাগ করে পাশে থাকা জিপ গাড়িতে উঠার সময় আসামিরা পেছনে গিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আসামিদের কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গিমা, এমনকি বাদীর পরনের কাপড় টানাটানি করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। আসামিদের এমন কর্মকাণ্ডে উপস্থিত লোকজনের সামনে বাদী অপমাণিত ও ভীষণভাবে লজ্জা পেয়েছেন। টানা হেঁচড়ার এক পর্যায়ে বাদীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মূল্যবান কাগজপত্র ও একটি শাওমি মোবাইল ফোন পড়ে যায়। তিন নম্বর আসামি মোবাইল ফোন ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়।


এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, উপস্থিত আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সদস্য ও সাক্ষীগণ উপস্থিত ছিলেন। আসামিরা দ্রুত মিলনায়তনে প্রবেশ করে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকায় দুর্নীতিবাজ আসামিগণ বাদীকে হেনোস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এদিকে, আসামি উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু যশোর-৫ আসনের এমপি ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে ভাগ্নে। আর কবির খান হলেন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 1 =