স্টাফ রিপোর্টারঃ নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায় অবস্হিত পাঁচগাঁও তহশিল অফিসে বিভিন্ন অনিয়ম, হয়রানী ও জালিয়তীর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কাজী নিজাম, যিনি তহশিলদার নামে পরিচিত, তার উদ্যোগে অকল্পনীয় সব দুই নম্বরী কাজের মাধ্যমে জনগণের হয়রানি এবং টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে আসছে। সম্প্রতি প্রবীণ এক সাংবাদিক যিনি ভীমপুর-এর বাসিন্দা, এসেছিলেন তহশিল অফিসে খাজনা দিতে। তিনি যথারীতি তাঁর পরিচয় সম্বলিত কার্ড দিয়ে পরিচিত হন এবং খাজনা প্রদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কি কি কাগজ আছে জানতে চাইলে তিনি কিছু কাগজ তহশিলদারের হাতে দেন। কাজী নিজাম কিছুক্ষণ কাগজগুলো দেখে ফেরত দেন। এরপর কাজী নিজাম সব অদ্ভূত এবং জালিয়াতীর কাজগুলো করেন। তিনি দুই হাজার তিন শত আশি টাকার একটি খাজনার রশিদ লেখেন। খাজনা প্রদানকারী মাইন উদ্দিন আহমেদ-এর জমির দাগ ও খতিয়ানে খাজনা জমা না দিয়ে তা তাঁর মৃত পিতার আমলের দাগ-খতিয়ানে জমা দেন। এখানেই ঘটনা শেষ হয়নি। তহশিলদার তার ষড়যন্ত্রের জাল আরো বিস্তার করেন। তিনি একটি পূরণ না করা ফর্মে মাইন উদ্দিনের দস্তখত নেন এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের পটোকপি রাখেন। জমাখারিজ করার কথা বলে আরও দশ হাজার টাকা নেন। একই ব্যক্তির সাথে দুটো জালিয়াতি করার পরও তহশিলদারের তৎপরতা শেষ হয়নি।
তিনি সপ্তাখানেক পরে মাইন উদ্দিনকে ফোন করে জানান যে:– আপনার অংশে ছয় শতাংশ জায়গা কম আছে। আপনি বললে আমরা একটা বিভাগীয় মামলা চালু করতে পারি।
টাকা খরচ করলে সংশোধিত বন্টকনামা করে জমি উদ্ধার করে দিতে পারি। মাইন উদ্দিন সাহেব অসুস্হ থাকাতে তাঁর ছোট ভাইকে খোঁজ নিতে বলেন। তার ছোট ভাই কাজী নিজামের কাছে জানতে চান:– এই জমির মিউটেশন হয়েছে ২০১৩ সালে, আপনি ৫ বছর পর আবার কি জমাখারিজ করছেন? এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তহশিলদার তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
টেলিফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক মাইন উদ্দিন সাহেব বলেন:– মিডিয়ার লোক হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা এই যে, পরিচয় পাবার পর আমাদের সাথে কেউ দুই নম্বরী করেনা কিন্তু এই লোক যে সামান্যতম পেশাগত বিশ্বস্ততাও বজায় রাখবেনা, তা আমি ভাবিওনি।
একজন প্রবীণ, প্রথম সারির সাংবাদিকের সাথে যিনি এরকম প্রতারণা করতে পারেন তিনি সাধারণ মানুষের সাথে কি কি করতে পারেন তা কল্পনারও বাইরে! মাইন উদ্দিন আহমেদ সাহেবের ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, কাজী নিজামেরা কিছু অশুভ শক্তির ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে টাকা বানাচ্ছে।
তার বড় ভাইয়ের দস্তখত ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আরও কোন জালিয়াতী নিজাম করছে কিনা সে বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই সব অপকর্মকারীরা সরকারের সমস্ত কল্যাণমূলক কাজকে মলিন করে দিচ্ছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন।