স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল কারাগারে

0
406

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার সকালে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান আবজাল। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। 

আবজাল হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। মামলা দুটির মধ্যে একটিতে আবজাল হোসেন একা আসামি এবং অন্যটিতে তার স্ত্রী রুবিনা খানম যৌথভাবে আসামি।

গত বছর ২৭ জুন দুদক উপ-পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ অবৈধ সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করেন। মামলার পর থেকে আবজাল পলাতক ছিলেন।

দুদক সূত্র জানায়, আবজাল হোসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। তিনি সব মিলিয়ে বেতন পেতেন ৩০ হাজার টাকার মতো। অথচ দেশে-বিদেশে তার বাড়ি, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার ফ্ল্যাট-প্লট রয়েছে। চড়েন দামি গাড়িতে। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তার স্ত্রী রুবিনা খানম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার সাবেক স্টেনোগ্রাফার। তিনি রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে ব্যবসা করেন। এই দম্পতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমে গত বছরের ১০ জানুয়ারি আবজালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

মামলায় বলা হয়, আবজালের অবৈধ আয়কে বৈধ করার পূর্ব পরিকল্পনায় নিজ নামে ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও রুপা ফ্যাশনের নামে তফসিলি ব্যাংকের ২৭টি হিসাবের মাধ্যমে ২৬৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা স্থানান্তর, হস্তান্তর ও মানি লন্ডারিং করেন, যা ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২(য) ধারায় বর্ণিত সন্দেহজনক অস্বাভাবিক লেনদেন হিসেবে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

এ ছাড়া রুবিনা খানম নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের যে হিসাব দুদকে দাখিল করেন, তাতে তিনি ৫ কোটি ৯০ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন।

দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, তিনি ৩১ কোটি ৫১ লাখ ২৩ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। এ কাজে স্ত্রীকে সহায়তার জন্য স্বামী আবজাল হোসেনকেও আসামি করা হয়।

আরেক মামলায় আবজালের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা মানি লন্ডারিং এবং ২ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয় মামলায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − 11 =