হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করায় বিজিবি’র মহাপরিচালককে আদালতে তলব

0
1105

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলাধীন সাড়ি নদী বালু মহলের বৈধ ইজারাদার মেসার্স সুহেল বিল্ডাসের মালিক সুহেল মিয়ার রাজস্ব আদায় কার্যক্রম জোড়পূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে লালাখান বিজিবি কর্তৃপক্ষ। এঘটনায় ইজারাদার সুহেল মিয়ার গত ১৮ ডিসেম্বর-২০১৯ তারিখের দাখিলকৃত আবেদনর প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন নং-১৯০৮/২০২০ এর জন্য ১০ ফেব্রুয়ারী-২০২০ তারিখে একটি আদেশ হয়। আদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক কর্তৃক ইজারাদারের সমস্যা নিষ্পত্তি করে দেয়ার নিদের্শনা প্রদান করা হয়। কিন্তু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম আদালতের আদেশ মোতাবেক কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ২৬ আগষ্ট-২০২০ আদালত পুনরায় আদেশ প্রদান করেন।

আদেশে বলা হয়-উচ্চ আদালত বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত ১০ ফেব্রুয়ারী-২০২০ তারিখের আদেশটি ইচ্ছাকৃত ভাবে অবহেলা ও লঙ্গনের কারনে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা কেন গ্রহন করা উচিত নয়, তা প্রমান করা জন্য অভিযোগকারীকে উত্তর দেয়ার জন্য একটি বিধি জারী করা হোক।


জানা গেছে, জৈন্তাপুর সাড়ি নদীর বালু মহল বিগত ১৭ অক্টেবর-২০১৯ তারিখে ১৩৫ নং স্বারকমুলে ইজারাপ্রাপ্ত হন মেসার্স সুহেল বিল্ডাসের মালিক সুহেল মিয়া। অতপর ইজারাদার উক্ত বালু মহালে বালু টোল উত্তোলন করতে গেলে লালাখান বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে জোড়পূর্বক বাধা প্রদান করে এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। সুহেল মিয়া বৈধ ইজারাদার হওয়ার কারনে এবিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন মামলা দায়ের পূর্বক সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ও জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। অতপর সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ফাতেমা তুজ জোহরা তদন্তপূর্বক আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জন্য ২৮৫ নং স্বারকমুলে সিলেট জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক ৯৬১ নং স্মারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে াবহিত করেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভিন সিলেট ১৯বিজিবি অধিনায়ককে বৈধ ইজারাদারের অভিযোগ ও হাইকোর্টের রিটের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের ৩৩২ নং স্বারকমুলে অনুরোধ জানান। কিন্তু কে শোনে কার কথা, ১৯বিজিবি‘র কর্তৃপক্ষ মহামান্য হাইকোর্টের রিটকে তোয়াক্কাই করছে না। তারা সরকার কর্তৃক ইজারা প্রদানকৃত বালু মহালকে নো-ম্যান্স ল্যান্ড দাবী করে বৈধ ইজারাদারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছে। যা সম্পূর্ন বেআইনি।


অপর একটি সুত্র জানায়, জৈন্তাপুর সিমান্তবতী এলাকা হওয়ায় বিজিবির কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতায় চোরাকারবারিরা লালাখাল দিয়ে অবৈধ ভারতীয় গরু-মহিষ সহ অন্যান্য পন্য পাচার করে থাকে। গত ৮ মার্চ-২০২০ জৈন্তাপুর উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় উপস্থিত সদস্যদের অনেকেই এব্যাপারে বিজিবিকে দায়ি করে বক্তব্য রাখে। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা জৈন্তাপুর উপজেলার কোন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিক ও গরু-মহিষ প্রবেশের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।


ইজারাদার সুহেল মিয়া বলেন, নো-ম্যান্স ল্যান্ড থেকে দেড়শ গজ ছেড়ে কাজ করার নিয়ম থাকলেও বিজিবি তা মানছে না। অথচ বিজিবির সহযোগিতায় সোর্স আনোয়ারগং রাতের আধা আমার বালু মহালের টোল আদায় করে এবং কোন বালু শ্রমিক যদি টোল দিতে অস্বীকার করে তাহলে আনোয়ারগং তাদের নৌকা বিজিবি মাধ্যমে জব্দ করে। যা সম্পূর্ন বেআইনি


এব্যাপারে জানতে বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম, তাহার পিএস লেঃ কর্নেল মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, এপিএস মেজর মোঃ মাহমুদুল হাসান প্রধানের ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিক বার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − 4 =