ইউএনওর ওপর হামলা মামলার মূল আসামি হাসপাতালে

0
329

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার মূল আসামি আসাদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে  রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক করা অপর দুজন নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে দিনাজপুর জেলা জজ আদালতে তোলা হচ্ছে।

আজ শনিবার সকালে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোজাফফর হোসেন।

মোজাফফর হোসেন জানান, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার সময় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্য বাবুল হোসেন নবীরুল ও সান্টুকে ঘোড়াঘাট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে আজ কাল নয়টার সময় তাঁদের দিনাজপুর জেলা জজ আদালতে পাঠানো হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালতের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইবে। মামলায় আসাদুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় রংপুর নগরের র‌্যাব-১৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌস জানান, আসাদুল, নবীরুল ও সান্টু র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ‘চুরির অভিপ্রায়’ থেকেই নৃশংস এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামলার প্রধান আসামি আসাদুল জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, নবীরুল এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। নবীরুল ও সান্টু কুমার দুজনেই পেশায় রংমিস্ত্রি। আসাদুল ও নবীরুলের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় চুরি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে লাল টিশার্ট পড়ে হালকা-পাতলা গড়নের যে ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল তিনিই নবীরুল। জিজ্ঞাসাবাদে নবীরুল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেপ্তার নবীরুল ইসলাম (নীল জামা) ও সান্টু চন্দ্র রায়কে সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসা হয়

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেপ্তার নবীরুল ইসলাম (নীল জামা) ও সান্টু চন্দ্র রায়কে সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসা হয়ফাইল ছবি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে ঘোড়াঘাটের ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে দুর্বৃত্তরা তাঁর শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে প্রহরীকক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখেন। ইউএনওর বাবা ওমর আলী (৭০) প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু গতকাল সকালে তিনি হাঁটতে বের না হওয়ায় সঙ্গীরা তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য বাসভবনে যান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ইউএনও, তাঁর বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করেন।

আহত বাবা-মেয়েকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন। ওয়াহিদার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × one =