কলাপাড়ায় পানিকচু চাষে কৃষকের সাফল্য

0
440

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে সলিমপুর গ্রামের কৃষক আলী আহম্মেদ ঘরামীর পানিকচু চাষ করে ভাগ্যের পরির্বতন হয়েছে। কচু চাষের আগে তার সংসার চালানো ও ছেলে মেয়ের পড়া শুনা এবং মেয়েদের বিয়ে দেয়া খরচ হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন পানি কচু চাষ করে ছেলে মেয়ের পড়াশুনা ও সংসারের চালাতে কোনো সমস্যা হয় না। তিনি এখন খুব ভাল ভাবে চলতে পারেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম ও ভাল পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তার পানি কচু চাষ নজর কেড়েছেন অন্য কৃষকের। তারা ও অগ্রহী হয়েছেন পানি কচু চাষে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সলিমপুর গ্রামের আলী আহম্মেদ ঘরামী অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ৩৯ শতক জমিতে কচু চাষ শুরু করেন। গত ৭ বছর ধরে কচু চাষ করে আসছেন তিনি। প্রতি বছর ফালগুন মাসে জমি চাষ দিয়ে পরিচর্যা করে। এর পর বড় কচু গাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে চারা রোপন করেছেন। চারা বেড়ে উঠার জন্য ঘাস পরিস্কার করে সার দেন। চারা বড় হলে গাছটিতে চার থেকে পাঁচটি ডাটা রেখে কচু গাছটির গোড়া থেকে উঠিয়ে বাজারে এনে বিক্রি করেন। কচুতে প্রচুর ভটিামনি থাকায় সবজি হিসাবে কচুর ব্যাপক চাহদিা রয়েছে প্রতিটি কচু ছোট-বড় ৪০ থেকে ৭০টাকায় বাজারে বিক্রি করেন।

৩ টাকা করে প্রতিটি কচুর চারা বিক্রি করা করেন অন্যদের কাছে। তারা আবার ওই চারা কিনে নিয়ে চাষ করে। কচুর লতি ১হাজার ২০০ টাকা মন দরে ক্রেতা তার কাছ কিনে নেয়। ক্ষেতের এ কচু বিক্রির শেষ সময় আগ্রহন মাস পর্যন্ত। এ বছর আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ও সময় মত বৃষ্টি হওয়ায় কচুর আশানুরুপ গাছ ভাল হয়েছে।

এ বছর তিনি কচু বিক্রি করে ২ লাখ টাকা আয় করেন বলে জানান। পানি কচু চাষ করে এক দিকে তিনি যেমন নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন। জীবনের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

আধুনিক পদ্ধতিতে কচু চাষ করে নিজের ভাগ্যের যে পরিবর্তন ঘটেছে তার। কচু চাষ করে তার পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করায় দূর হয়েছে দরিদ্রতা। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা।

আলী আহম্মেদ ঘরামী জানান,ছেলে মেয়ে নিয়ে ছয় জনের সংসার। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। এক মেয়ে খেপুপাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০ম শ্রেনীতে আর ছেলে বরিশাল বিএম কলেজে অর্নাস পড়াশুনা করেন। কচু চাষে লাভের টাকায় ছেলে মেয়ে পড়াশুনা ও সংসারের খরচ চালান। সংসারে এখন কোনো ধারদেনা নেই। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তার কচু চাষ আরো ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেত বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মন্নান জানান, কচু সবজি স্বাস্থ্যর জন্য উপকারি  ও পরিবেশ বান্ধব এবং নিরাপদ সবজি।বর্ষাকালে যখন অন্য সবজি বাজারে থাকেনা তখন কচু বাজারে পাওয়া যায়। কচু উৎপাদন খরচ কম। রোগ বালাই কম। দামও ভাল পাওয়া যায়। উপজেলার সলিমপুর, ধানখালী, মিঠাগঞ্জ এলাকায় বর্তমানে কচু চাষ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve + 9 =