স্টাফ রিপোর্টার: করাঞ্চল-১০ এ এমএলএসএস পদে চাকুরী করেই কোটিপতি বনে গেছেন যশোরের ঝিকরগাছা এলাকার মরহুম আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রশীদ। অভাবের সংসারে নুন আনতে যার পান্তা ফুরাতো এখন সেই রশীদ কোটি টাকা খরচ করে গ্রামের বাড়ীতে গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ী, কিনে নিয়েছেন বিশাল আয়তনের বাগান বাড়ী আর বড় ভাইকে দিয়েছেন স’মিলের ব্যবসা। স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে অবিশ^াস্য ঘটনা বলেই প্রতীয়মান। তবে রাজধানী ঢাকায় আছে ৪ কাঠা প্লটে ৩ তলা বিশিষ্ট ভবন সহ একাধিক প্লট। অনুসন্ধানে জানা গেছে, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মরহুম আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রশীদ অভাবের বোঝা মাথায় নিয়ে রাজধানী ঢাকায় এসে মুদি দোকানে চাকুরী শুরু করে। এই সুবাদে আয়কর বিভাগের এক বড়ভাই তদ্বিরে ৯৩ সালে ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে আয়করে এমএলএসএস পদে চাকুরী লাভ করে রশীদ। আর এতেই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে করাঞ্চল-১০ এর সার্কেল-২০৭ এর নোটিশ বিভাগে কাজ পায়। দীর্ঘ সেখানে কাজ করে অবৈধ ইনকামের রাস্তাটি খুবই ভালো ভাবে তৈরি করে রশীদ। সুত্র জানায়, কোন ব্যক্তি যখন আয়কর পরিশোধ করতে আসে তখন আয়কর অফিসের কিছু অসৎ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছে যারা ঐ সব ব্যক্তির আয়কর ফাইলে প্রকৃত সম্পদের তথ্য গোপন করে অল্প টাকায় আয়কর পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিয়ে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয়।
যেমন কারোর ১০ লাখ টাকা আয়কর নির্ধারিত হয়েছে,এখন সে যদি ২ লাখ ঘুষ দেয় তাহলে সে ৪/৫ লাখ টাকায় আয়কর পরিশোধ করে নিতে পারবে। আর এই ঘুষ গ্রহনের কাজে অফিসের পিয়ন থেকে বড় কর্মকর্তা পর্যন্ত এক একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। পিয়ন বা অফিস সহকারীরাই আয়কর পরিশোধকারী ব্যক্তিকে প্রথমে সেটিং করে বড় স্যারের নিকট নিয়ে যায়। বিনিময়ে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এতে ধরা পরার ভয়ও থাকে না। আর এই সিন্ডিকেটের একজন আব্দুর রশীদ।
মুলত রশীদ এই প্রক্রিয়াতেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে হয়েছেন কোটিপতি। গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়। রাজধানীর খিলগাও নন্দীপাড়া ১নং স্কুলগলির মুন্না সাহেবের নিকট থেকে ১০/৩ হোল্ডিংয়ের সাড়ে ৪ কাঠার প্লটে ৩ তলা বিশিষ্ট ভবন কিনেছেন। এই বাড়ীটি রশীদ ও তার স্ত্রী আসমা আক্তার মনির নামে।
এই বাড়ীর পাশেই মঞ্জু কমিশনারের ১০ কাঠা জমি আবজাল ও ওসমান গনির নিকট থেকে ক্রয় করেন। যদিও এই জমি নিয়ে রশিদ ও ওসমান গনির মধ্যে মামলা চলমান রয়েছে। খিলগাও ত্রিমোনী নাসিরাবাদ দাশেরকান্দী এলাকার আবুল বাশারের নিকট থেকে ১০ কাঠার জমি ক্রয় করেন। তিনি খিলগাও তারাবাগ ২নং গলির ১৫১ হোল্ডিংয়ে উকিলবাড়ীর ৪ তলায় ভারা ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন ।
রশীদের বড় মেয়ে ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটিতে এবং ছোট মেয়ে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ কলেজে মাসিক প্রচুর টাকা খরচে পড়াশোনা করে। তার অফিসের কাজ দেখা শোনা করার জন্য পল্লব, কামাল নামে ২ জন পারসোনাল লোক নিয়োগ রাখা আছে। ওদের মাধ্যমে রশীদ আয়করের ফাইল পুরনের কাজ করিয়ে থাকে। বর্তমানে রশীদের অফিসিয়াল পদবী এলডিএ (লোয়ার ডিভিশন এ্যাসিস্টেন্ট)। এই পদ পাওয়ার জন্য ৬ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে শোনা যায়।