রাজনীতিতে রাজনীতিকদের নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই শিথিল হয়ে পড়ছে। স্থানীয় নেতৃত্বে ঠাঁই পাচ্ছে না নিবেদিত প্রাণ, বরং ত্যাগী রাজনীতিকদের বদলে ঠাই পাচ্ছে মুখোশধারী সুবিধালোভী উচ্চাভিলাষীরা। রাজনীতিকে তারা দেখছেন আরও উপরে ওঠার সিঁড়ি বা ব্যবসা হিসেবে। মানুষের সেবার জন্য যারা রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ‘সুবিধাবাদী রাজনীতিক’দের কাছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন পদের মনোনয়ন-দৌড়ে প্রথাসিদ্ধ রাজনীতিকের বদলে টাকাওয়ালারা প্রাধান্য পাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচনেও তাদের অবস্থান অপ্রতিরোধ্য। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে ত্যাগী রাজনীতিকদের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল হিসেবে। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানীর মতো মহীরুহ নেতৃত্ব দিয়েছেন। এক সময় এ দেশের রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করতেন জনসাধারণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে। আর এখন রাজনীতিকদের প্রায় সবাই রাজনীতিতে জড়ান নিজেদের কল্যাণে। অনেকেই রাজনীতিকে ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জাতীয় সংসদ সদস্যদের প্রায় সবাই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অনেকে নিজেদের হলফনামায় রাজনীতিবিদ পরিচয় উল্লেখ করলেও বাস্তবে তারা পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। কেউ কেউ ব্যবসায়ী পরিচয় না দিলেও তাদের নিজের ও পরিবারের নামে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজেদের নানা পেশার লোক হিসেবে পরিচয় দিলেও প্রায় সবার আয়ের মূল উৎস ব্যবসা। সংসদ সদস্যদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, হাতেগোনা কয়েকজন বাদে প্রায় সবাই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে দলের ব্যবসায়ী সদস্যদের হাতে চলে যাওয়ায় রাজনীতি তার চরিত্র হারাচ্ছে। উচ্চাভিলাষী ব্যবসায়ী নেতারা জনসেবার বদলে রাজনীতিকে দেখছেন টাকা আয়ের উপায় হিসেবে।
তাদের কাছে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের বদলে মোসাহেবরা পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা সাচ্চা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর বদলে পেশিজীবীদের নিজেদের পাশে ঠাঁই দিচ্ছেন, যে কারণে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন পাকাপোক্ত হয়ে উঠছে। এ সর্বনাশ থেকে রক্ষা পেতে হলে রাজনীতিতে সাচ্চা রাজনীতিকদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জনতার দাবি: কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হলে কমপক্ষে দশ বছরের সাজা নিশ্চিতসহ তাদের আয় বহি:ভর্‚ত অবৈধ সম্পদ, ব্যাংক ব্যালেন্স বাজেয়াপ্ত করত: তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ট্রান্সফার করে ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে ধাপে ধাপে কাজে লাগানো হোক।
দেশের সম্পদ দেশেই থাকুক। বিদেশে যেন পাচার না হয়। তাছাড়া নরসিংদী জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের বহি:কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া কর্মকান্ডে যে সকল সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, এমপি-মন্ত্রী সহ দলীয় সংগঠনের তিন শীর্ষ নেত্রী অপু উকিল, নাজমা আক্তার,
সাবিনা আক্তার তুহিন-এর নাম উঠে এসেছে তা তদন্ত করে দোষী ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়া হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দলের ভিতর থেকে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে রাজনৈতিক ইতিহাসে যে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা থাকুক চির অ¤øান, চির অক্ষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ভেবে দেখবেন কী?