বাকেরগঞ্জে বার আউলিয়া দরবারে’র বেহাল- দশা কেটে উঠেনি আজও

0
581

নিজস্ব প্রতিবেক: বিভিন্ন স্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় বারবার লেখালেখির পরেও পবিত্র বার আউলিয়া দরবার শরীফসহ প্রধান গদিনশীন পীরে কামেল সাধক মরহুম হযরত মোঃ আঃ খালেক ফকির ওরফে দুলাল শাহ (রাঃ) আস্তানা ভবনটির আজও পর্যন্ত বেহাল-দশা কেটে উঠেনি। ১৫৫৬ সালে দিল্লীর তৃতীয় মোগল স¤্রাট আকবর শাসনামলে পারশ্য উপমহাদেশ থেকে ১২জন ওলি আউলিয়া আসেন ইসলাম প্রচারে, ঘাটি স্থাপন করেন বাকেরগঞ্জ রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে। তৎকালিন সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই দেশ শাসন করতেন। দক্ষিন বঙ্গে ইসলাম প্রচার শুরু হয় সর্বপ্রথম বার আউলিয়ার দরবার থেকে এবং শেষও হয় এই স্থান থেকে। ইসলাম প্রচারের পরে ১২জন ওলি আউলিয়ারা গায়েব হয়ে যায়। পর্যায় ক্রমে ব্রিটিশ শাসনামলের কিছু দিন পরে অলৌখিক ভাবে একজন পীরে কামেল সাধক আসেন বার আউলিয়ার দরবারে।

নাম তার পীরে কামেল সাধক মরহুম হযরত মোঃ আঃ খালেক ফকির ওরফে দুলাল শাহ (রাঃ)। তৎকালিন সময় থেকে এই পবিত্র দরবারটির ইসলামী আইন অনুযায়ী পরিচালনা সহ দেখে শুনে রাখতেন তিনি। ১১০ বছর বয়সের মধ্যে ৯৫ বছর কাদেরি চিশতিয়া তরিকায় বার আউলিয়ার দরবারের গাছ তলায় সাধন ভোজন করতেন তিনি। আদ্দাতিক জগতের একজন পীরে কামেল ও পাওয়ার ফুল সাধক ছিলেন তিনি। ঘর সংসার পরিবার পরিজন ত্যাগ করে এই দরবারের গাছ তলায় পরে থাকতেন তিনি। তৎকালিন সময় থেকে এক রুম বিশিষ্ট একটি ভবন ছিল বার আউলিয়ার দরবারে। দিনে গাছতলায় রাতে এই ভবনটিতে থাকতেন তিনি।

তার অবর্তমানে কালের আবর্তে অবহেলিত রেয়ে গেছে যুগ যুগান্তর ধরে, এই পীরে কামেল ও সাধক হযরত দুলাল শাহ (রাঃ) থাকার আস্তানা ভবনটি এখন বেহাল দশায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। নাই কোন জানালা কপাট, না আছে বিদ্যুৎ, ফ্যান, খাট এমনকি ভবনটি দেয়াল সহ ছাদ ধ্বসে পড়তেছে। মানুষ থাকা বা বসার মত কোন অবস্থাই নাই। নাই কোন মহিলা দর্শনার্থীদের জন্য বসার ব্যবস্থা। হযরত দুলাল শাহ (রাঃ) এর কারনে এই পবিত্র ভূমির প্রতিদিন হাজার হাজার দেশ বিদেশী ভক্ত আশেকান মুরিদান দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর থাকতো।

থাকতো দান ছদগার পণ্য সামগ্রী ও টাকা পয়সা। পার্বত্য শান্তিচুক্তির রুপকার দক্ষিণ বাংলার মানুষের নয়নের মনি বলিষ্ঠ কন্ঠশ^ও সাবেক মন্ত্রী রাজনৈতিক অভিবাবক মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর আপন বড় ভাই আলহাজ¦ আবু হাসানত আব্দুল্লাহ দক্ষিন বঙ্গে যাওয়া আসার পথে এই পীরে কামেল ও সাধক মরহুম মোঃ আঃ খালেক ফকির ওরফে দুলাল শাহ (রাঃ) এর আস্তানা ভবনটি সহ বার আউলিয়ার দরবার শরিফে সেবা দিয়ে যেতেন। এমই এক অলৌকিক পীরে কামেল ও সাধক ছিলেন তিনি। হযরত দুলাল শাহ (রাঃ) চলে যাওয়ার পর এখন সেই দৃশ্য কেবল স্মৃতি বিতারিত হতে চলেছে। এই দরবার শরীফের প্রধান গদিনিশি মরহুম হযরত মোঃ দুলাল শাহ (রাঃ) সহ থাকার ভবনটি চৌহদ্দির অস্তিত্ব ধ্বংশের অবস্থা হলেও দেখার কারও যেন কোন মাথা ব্যাথা নাই।

অবহেলিত হযরত দুলাল শাহ (রাঃ) আশেকান, মুরিদান, ভক্ত বৃন্দ সহ বার আউলিয়ার অস্থায়ী কমিটি ও এলাকাবাসী জাতীয় ক্রিকেট খেলোয়ার মেহেদী হাসান মিরজ এর পিতা মো: জালাল তালুকদার অস্থায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজ্বী হারুন খলিফা, কোষাধ্যক্ষ হাজ্বী মোঃ বাবুল বিশ্বাস, ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাজ¦ী মোঃ মাহাবুব খন্দকার, মহিলা সংরক্ষিত ইউপি সদস্য নাজমা বেগম, আঃ রাজ্জাক ফকির, ভাতা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা জলিল সেপাই, দুলাল বিশ্বাস, ভারতের ট্রেনিং ও সনদ প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ বিশ্বাস, রশিদ প্যাদা, খালেক ফকির ওরফে মুক্তি শাহ, তালুকদার স্টোর্স এর মালিক মোশারফ তালুকদার, মনীপুরী চায়ের দোকানদার, সেলিম খলিফা, আফজাল ফকির, সেলিম হাওলাদার, মা বাবার দোয়া রেস্টুরেন্ট এর মালিক লিটন হাওলাদার, লতিফ শাহ, মেথ লাইফ আলিকো ও নেক্সলের এ্যাম্পোলার জাফর মোল্লা, সাবেক মহিলা মেম্বার রাজিয়া বেগম, আপনার আমার সকলার মা পীরে কামেলের রাখা নাম ফাতিমা ওরফে হালিমা তালুকদার, হায়দার হাং, ফজর খান, বার আউলিয়া দরবারে মহিলা খাদেম আপনার আমার সকলার বোন পারভীন আক্তার পিংকি ও খাদিজা তালুকদার প্রমুখ ভবনটি দুরাবস্থা ও ভক্তবৃন্দের অসহায়ত্বের চিত্র তুলে ধরেন অপরাধ বিচিত্রার সাংবাদিক ও পরিচালক হিউমান রাইটস (বাসক) বাংলাদেশ তালুকদার মোঃ শহীদ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহ সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সহসভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ সহিদুল ইসলাম স্বজন এর কাছে এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ সহকারী কমিশনার ভূমি তরিকুল ইসলাম এর কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান ভবনটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঠিকই।

ভবিষ্যতে নতুন কোন বরাদ্দ হলে ভবনটি পূনঃ সংস্কার করা হবে। বাকেরগঞ্জ-০৬ আসনের সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা মোবাইল ফোনে আলাপ কালে তিনি জানান, বার আউলিয়া দরবার শরিফে গিয়ে আমি দেখব ভবনটি কি অবস্থায় আছে, তারপর আমি একটি সিদ্ধান্ত নিব। সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক বার আউলিয়ার প্রধান গদিনশিন থাকার ভবনটি উন্নয়ন সহ সংস্কার মূলক কাজগুলো করা হয়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে অবহেলিত ও ধ্বংশের পথে বার আউলিয়ার দরবারের প্রধান গদিনশিন থাকা ভবনটি সহ বঞ্চিত ভক্তবৃন্দ আশেকান ও মুরিদান সহ দরবারের খাদেম এবং এলাকাবাসীর দাবী জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − 14 =