Site icon Aparadh Bichitra

‘‘সি এম পি’র ট্রাফিক বিভাগের চৌকস অফিসার পতেঙ্গার টি আই মনজু’’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র ইতি পূর্বে ছিল তবে বর্তমানে পূর্বের তুলনায় অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। অধিকাংশ গাড়ীর মালিক ড্রাইভার ও সর্বস্তরের মানুষ তেমনটি বলেছে অপরাধ বিচিত্রাকে। ট্রাফিক বিভাগে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা ইতিপূর্বে যে আন্দোলন করে গিয়েছিল তাদের এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল দূর্ঘটনা রোধ করা এবং সকল গাড়ীর ডকুমেন্ট  ঠিক রেখে গাড়ীর ড্রাইভারদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েই গাড়ী চালাতে হবে এবং সকল নিয়ম-কানুন মেনে প্রতিটি গাড়ীতে অতিরিক্ত যাত্রী বহণ না করে রাস্তায় গাড়ী চালাতে হবে, এবং পুলিশ প্রশাসনের চাঁদাবাজী নৈরাজ্য বন্ধ করা, এ রকম অনেক দাবীই ছিল যৌক্তিক তবে সমাজের কাছে সেই যৌক্তিক দাবী পেয়েছিল গ্রহণযোগ্যতা। ছাত্র -ছাত্রীদের আন্দোলনের বদৌলতে ট্রাফিক বিভাগে শুধু নয় গাড়ীর মালিক ও ড্রাইভারদের শতভাগ পরিবর্তন না আসলেও অনেকটা পরিবর্তন এসেছে, সিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরাও এটিই বলেছে। সিএমপি’র চৌকস অফিসার পতেঙ্গা’র টি আই মনজু একান্ত সাক্ষাতে ট্রাফিক বিভাগের পরিবর্তনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন রাষ্ট্রের দেওয়া অর্পিত দায়িত্ব পালনে কোন গাফেলাতী নেই আমাদের মাঝে।  বরং শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।

শুধুমাত্র গাড়ীর ড্রাইভার ও হেলপার ট্রাফিক আইন মানলেই হবে না যাত্রীদেরও ট্রাফিক আইন মেনে চললেই কেবল মাত্র পরিবর্তন আশা করতে পারে। তিনি আরও বলেন গাড়ীর মালিক ড্রাইভারদের মাঝে নিয়মিত কাউন্সিলিং করে যাচ্ছি এবং যাত্রীদেরও নিয়মিত নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি ট্রাফিক আইন শতভাগ মেনে চলার জন্য আর শতভাগ মেনে চললেই দূর্ঘটনা রোধ সম্ভব হবে বলে মনে করি। এভাবেই আমাদের নিয়মিত রুটিন মাফিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয়। রোদ বৃষ্টি ও বন্যা বাদল কোনটাই আমাদের দায়িত্ব পালনে ধমিয়ে রাখতে পারে না।

সফলতার প্রাপ্তি কি সেটি না ভেবে দায়িত্বে অবিচল থেকে এগিয়ে চলাটাই মূখ্য বিষয়। সফলতার মান দন্ডে পৌঁছাতে পেরেছি কিনা জানি না তবে দায়িত্ব পালনে পিছ পা নই। ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিনিয়তই আমাদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এমনটি নয় ট্রাফিক বিভাগে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। যাত্রী ড্রাইভার ট্রাফিক আইন মেনে চললেই শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং দূর্ঘটনাও রোধ হবে বলে আমি মনে করি।

যানযটের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন পতেঙ্গা থেকে লাল খান বাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নির্মান কাজ চলার কারনে মাঝে মাঝে কিছুটা যানযট তৈরি হয় ও যত্রতত্র গাড়ী পার্কিংএর কারনেও যানযট তৈরি হতে পারে। সকল অফিসারদের মাঝে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে যানযট নিরসনে দায়িত্ব পালনে যেন কোন ঘাটতি যাতে না থাকে এমন কঠোর নির্দেশনাই দেওয়া আছে। যাত্রী ড্রাইভার ট্রাফিক আইন মেনে চললেই কেবল মাত্র পরিবর্তন আশা করা যাবে, নচেৎ পরিবর্তনের আশা ক্ষীণ।

আমি আপনার মাধ্যমে সকল গাড়ী মালিকদের বলবো আপনাদের কোন গাড়ীর ডকুমেন্ট না থাকলে যত দ্রæত সম্ভব বিআরটিএ থেকে গাড়ীর ডকুমেন্ট তৈরি করে রাস্তায় গাড়ী নামাবেন। নচেৎ রাস্তায় গাড়ী না নামানোর অনুরোধ করছি। আমি আরও অনুরোধ করছি  ড্রাইভাদের যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে ঐ সকল ড্রাইভারেরা আশা করি রাস্তায় গাড়ী চালাবেন না। আমি যাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলছি সকল ট্রাফিক আইন মেনে চলেই রাস্তা পারাপার হবেন। এর ব্যক্তয় ঘটলে সরকারী আদেশকৃত ট্রাফিক আইন ব্যবহার করিতে দ্বিধা করিবনা।

এভাবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিনিধির সাথে আলোচনা হয়। পারিবারিক বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এইতো আছি আলহামদুলিল্লাহ। চৌকস টি আই মজনু রংপুর জেলার পীরগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মৃত আ: লতিফ সরকার, মাতা- মোসা: সফুরা বেগম। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন একটু ডানপিটে, নীতি আদর্শিক ভাবে বেড়ে ওঠা জনবান্ধব টি আই মজনু। মির্জাপুর আদর্শ স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করেন কৃত্বিতের সাথে। শটি বাড়ী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে কৃত্বিতের সাথে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করেন। পড়াশুনা শেষ করে অযথা বেকার বসে থাকতে হয়নি।

যোগ্য ও মেধার ভিত্তিতে ২০১০ সালে ২৯ শে জুলাই ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। রাজশাহী শারদায় ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট থেকে ট্রেনিং শেষ করে আরএমপি’তে যোগদান করেন। ওখানে সফলতার সহিত দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পরে রংপুর রেঞ্জে নীলফামারী জেলার লালমনিরহাটেও দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন সফল ভাবে দায়িত্ব পালনের পরে ২০১৮ সালে ২৮ শে মে পদোন্নতি পেয়ে সিএমপি’তে ট্রাফিক বিভাগের টি আই হিসেবে যোগদান করেন। সিএমপি’তে যোগদানের পর কাউন্টার ট্রেরিজম ইউনিটে সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন।

পরে পি আই পাহারতলীতেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। ২১ শে নভেম্বর থেকে টি আই বন্দর বিভাগের পতেঙ্গা দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব পাওয়ার শুরু থেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন টি আই মজনু। সর্বস্তরের মানুষের কাছে আজ প্রিয় এক পুলিশ অফিসার  হিসেবে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। জনগণের আস্থাভাজন পুলিশ অফিসার হিসেবে নিজেকে তৈরি করার মাঝেই রয়েছে আত্মতৃপ্তি সেই দূরহ কাজটি করে যাচ্ছি।