টাকার অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছে না বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম ঢালী

0
631

বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম ঢালীর স্ত্রী খুবই অসুস্থ টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম ঢালীর পোস্ট গুলো দেখে খুবই কষ্ট লাগে। স্ত্রীকে বাঁচাতে একজন স্বামীর যে কি পরিমান আকুলতা তা তার ফেসবুকের পোস্ট করা স্ট্যাটাসগুলো দেখেই বোঝা যায়।বর্তমান সরকার নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে আসলেও এ ক্ষেত্রে তার সত্যতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।উপায়ন্তর না দেখে তিনি স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন সামাজিক ম্যামে বিবেকবান মানুষের কাছে।

তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ,সাংবাদিক, ও সমাজকর্মী।সে একাধারে যেসব সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন তা হলো সাবেক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পুর্নবাসন সোসাইটি, সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিপ্লবী মু্ক্িতযোদ্ধা সংসদ, কেন্দ্রীয় কঃ কাঃ,সাবেক সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মতিঝিল থানা কমান্ড,সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মতিঝিল থানা কমান্ড,ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক ও প্রতিবেদক,প্রধান ফটো সাংবাদিক, দৈনিক মুক্ত খবর,নির্বাহী সম্পাদক, সাপ্তাহিক শীর্ষ সমাচার,প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ-সভাপতি, টঙ্গিবাড়ী প্রেসক্লাব,চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মাদক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন,সাবেক সহ-সভাপতি, তাঁতী লীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ,সভাপতি, বৃহত্তর ঢাকা জেলা তাঁতী লীগ,আজীবন সদস্য, মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতি,যুগ্ন আহŸায়ক, সম্মিলিত আওয়ামী সমর্থক জোট,সদস্য, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ।


বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম ঢালী বলেন কয়েক মাস যাবত স্ত্রীর সেবা আর রাত জাগতে জাগতে আমি নিজেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
জ্বর, ঠান্ডা ও মাথা ব্যাথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন আজ ৯ অক্টোবর ২০২০ইং তারিখে আমার স্ত্রী হোসনে আরা বেগমকে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। এর পূর্বেও ভর্তি করেছিলাম। অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারিনাই বলে সুস্থ হয়নি।

তিনি আরো লিখেছেন যারা একশত কোটি টাকার নিচে চুরি করেনা, তারাই হয় এদেশের জননেতা! জেলা পর্যায়ের এক ছাত্রনেতাই দুইশত কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে পাঠিয়ে দিলো! অথচ আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হয়ে টাকার অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারিনা! বলেন আমি এখন কি করবো…? আক্ষেপের সুরে বলেন আমার রাজনীতি থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নেওয়ার সময় এসে গেছে আমরা গরীবরা আবার মানুষ হলাম কবে?


মানুষ হলেতো চিকিৎসার প্রশ্ন আসবে। মানুষতো বিএনপির বুদ্ধিজীবীরা! তাদের চিকিৎসার জন্য আছে সরকারের কোটি টাকার বাজেট…আমি শত-শত মানুষের উপকার করেছি। আজ নিজের স্ত্রীর কোনো উপকার করতে পারছিনা।পৃথিবীতে এরচেয়ে বড় দুঃখ আর কিছু হতে পারেনা…আমারমত মানুষের রাজনীতি করাটা একেবারেই বেমানান। যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে হাত পাততে হয়! তার আবার কিসের রাজনীতি?এতদিন বাসায় রেখে চিকিৎসা করেছি। আজ তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করলাম।


লিফটের ৭ তলায় মহিলা ওয়ার্ডে ডাঃ এ. কিউ. এম মোবিন এর তত্ত¡াবধানে তার চিকিৎসা চলছে।অন্য একটি পোস্টে লিখেন রাজনীতি তুমি বড়’ই বিচিত্র! কেউ রাজনীতি করে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। অপরদিকে আমারমত মানুষেরা রাজনীতি করে স্ত্রীর চিকিৎসাও করাতে পারে না আজ আমার স্ত্রীর কোন বোধ শক্তি নাই। সে সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছে? যেকোনো সময়ে এ সুন্দর পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতে পারে।আজ বার বার তার কৃতি মাখা গুণের কথা গুলো চোখের সামনে উঁকি মারছে। তার বিশাল হ্নদয়ের কৃতি গাথা স্মৃতিগুলোর কথা মনে পড়ে বার বার। আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না। আমার সাথে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জরিত নেতা-কর্মীরা আমার বাসায় এলে আগে তাদের ভাত বেড়ে দিতেন। দলে দলে আমার দলীয় নেতা-কর্মীরা আসতো আমার বাসায়। মিটিং হতো। তাদের চা-নাস্তা খেতে দিতো। মুগদা থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার আগে মিছিলকারীদের তেহারী রান্না করে খাওয়াতো। মাঝে মাঝে আমার বাসায় নেতা-কর্মীদের বিরিয়ানি রান্না করে খাওয়াতো আমার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম।

রাত দুইটা তিনটা বাজেও যদি কোন নেতা-কর্মী আমার বাসায় বসতো। তাকে আগে ভাত বেড়ে দিতেন। তারপর চা-বিস্কুট দিতেন। তার কোন অলসতা ছিলোনা। বাসায় ফকির আসলে তাকে চাউল অথবা টাকা দিয়ে ঘরে নিয়ে ভাত খাওয়াইয়ে বিদায় করতেন। আমি গরীব মানুষ তাই কোন কাজের মানুষ রাখতে পারি নাই। আমার স্ত্রীই সকল কাজ করতেন। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে ঘর ঝাড়ু দেওয়া, ঘর মুছা, কাপর ধোঁয়া, বাজারটাও আমার স্ত্রী করেছেন। আমার কাপড়গুলোও লন্ড্রি থেকে ইস্ত্রি করে এনেছেন।নাতিটাকে স্কুলে দিয়ে আসতো আবার বাসায় নিয়ে আসতো।

এরপর নাতিকে গোছল করিয়ে ঠিক টাইমমত খাবার খাওয়াতো। আবার কোচিং এ নিয়ে যেতো এবং বাসায় নিয়ে আসতো। মেহমান আসলে হ্নদয় দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করতেন। আজ আমার স্ত্রী বিছানা থেকে উঠতে পারছেনা। আমি পাশে বসে ডাকলে ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আদরের নাতি রাফিকেও আদর করতে পারছেনা। মেয়ে দুটিকেও কিছু বলতে পারছে না। আমার স্ত্রীকে আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অসহায় মনে হচ্ছে।

আজ আমি আমার স্ত্রীর পাশে বসে সারাদিন কেঁদেছি। আমি এবং নাতি দু’জনে তাকে জরিয়ে ধরে কেঁদেছি। আমি আমার স্ত্রীকে খুবই ভালোবাসী। হে আল­াহ আপনি আমার স্ত্রীকে সুস্থ করে দিন। আমি আমার ফেসবুক বন্ধুসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই আমার স্ত্রীর জন্য। আল­াহ যেন আপনাদের দোয়ায় আমার স্ত্রীকে সুস্থ করে দেন। তবে দুঃখ রয়ে গেলো একটিই। টাকার অভাবে আমার স্ত্রীকে ভালো কোন চিকিৎসা করাতে পারলামনা…

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − four =