সারাদেশে অব্যাহত নারী ধর্ষণ নিপীড়ণের প্রতিবাদে গতকাল বিকেল ৪টায় নগরের রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশটি আয়োজন করে ধর্ষণ ও বিচারহীনতা বিরুদ্ধে বাংলাদেশ। মহিলা পরিষদ জেলা সভাপতি নারীনেত্রী হাসনা চৌধুরীর সভাপতিত্বে নারী সমাবেশ বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সংগঠক গোলাপী বেগম নারী মুক্তি কেন্দ্রের জেলা সম্পাদক কামরুল নাহার শিখা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মহিলা ফোরামের সংগঠক রিনা মুরমু, প্রমুখ। নারী সমাবেশে সংহতি জানান বাসদ এর আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহবায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলা সহ সাধারণ সম্পাদক তপন চ্যাটার্জী প্রমূখ। এছাড়া সংহতি জানান সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী)।
সমাবেশে নারী নেত্রীরা দাবী করে বলেন, অব্যাহত নারী ধর্ষণ ও সহিংসতার সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করে। বক্তারা বলেন, মৃত্যুদন্ড নারী নির্যাতন বন্ধে সমাধান নয়। নারী নিপীড়ণের জন্য রাষ্ট্রের বিচারহীনতা সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার অভাব, পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে দায়ী করে। সমাবেশে নারী নেত্রী সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সংগঠক গোলাপী বেগম ধর্ষণ নিপীড়ণ বন্ধে ৯দফা পরে শোনান।
দাবিসমূহগুলোঃ
১.অব্যাহত ধর্ষণ নারী প্রতি সহিংসতায় যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপরাসণ কর।
২. পাহাড় সমতলে আদিবাসী নারীদের উপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ কর।
৩. হাইকোর্টের নিদের্শনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর কর। সরকারকে সিডো সনদে স্বাক্ষর কর।
৪. ধর্ষণ মামলায় স্বাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারা বিলোপ করে মামলায় ডিএনএকে স্বাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার কর।
৫. নারী নির্যাতন প্রতিরোধে অপরাধ বিজ্ঞান জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী শিশু/নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার দ্রæত নিষ্পন্ন কর।
৬. তদন্তকালীন সময় ভিকটিমকে সামাজিক ও আইনগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৭. ধর্মীয়সহ সকল সভা/সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনের নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা। পণ্যগ্রাফী নিয়ন্ত্রণে ইঞঈখ এর কার্যকর ভ‚মিকা পালন করতে হবে। সুষ্ঠু ধারা সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।
৮. পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ পরিচ্ছদ নিদের্শণা ও শব্দ চয়ণে পরিহার করতে হবে।
৯. গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
নারী সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃবৃন্দ, গুম, খুন অব্যাহত ধর্ষণ নিপীড়ণকে বর্তমান সরকারের দুবৃর্ত্তায়ন রাজনীতিকে দায়ী করে। বিচারহীনতা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেয়ায় ধর্ষণ নারী নির্যাতন আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। এই মহামারীর বিরুদ্ধে আজ সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।