দুই সন্তানকে নিয়ে মায়ের আত্মহত্যা কারন , জানা গেল চিঠিতে

0
635

ঠাকুরগাঁওয়ে মা ও দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধারের পর মা আরিফা বেগমের লেখা দুই পৃষ্ঠার একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে মেয়ের পড়ার টেবিলে বই চাপা দেওয়া অবস্থায় চিঠিটি উদ্ধার করা হয়। চিঠিতে আত্মহত্যার কারণ লিখে রেখে গেছেন আরিফা বেগম। রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ ইকবাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুই পৃষ্ঠার চিঠিতে আরিফা বেগম লিখেছেন,আহারে জীবন। সংসারের অভাব অশান্তি আর ভালো লাগে না। আমি একাই চলে যেতাম, কিন্তু একা গেলে আমার বাচ্চারা মা মা বলে হাহাকার করবে। এজন্য ওদের নিয়েই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমি নিজেই আত্মহত্যা করিলাম। এটা সত্যি একশ বার সত্যি একশ বার সত্যি একশ বার সত্যি।

চিঠিতে স্বামী আকবরকে উদ্দেশ্য করে আরিফা লিখেছেন, ‘স্বামী, তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমার বিয়ের মোহরানা মাফ করে দিলাম। তুমি ভালো থেকো।’

শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনাদের সঙ্গে অনেক খারাপ আচরণ করছি এর জন্য মাফ চাই।’

জানতে চাইলে আরিফার স্বামী আকবর আলী বলেন, অভাব-অনটনের সংসারে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-বিবাদ হয়েই থাকে। মঙ্গলবার একটি ঋণদান সংস্থা থেকে ১৪ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে আরিফার সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় ঝগড়া হয়। অভাবের কারণে আরিফা সবসময় বলতো, আমি তোমার বাসায় থাকব না। যেখানে যাই, আমি ছেলেমেয়েকে সঙ্গে করেই নিয়ে যাব। কিন্তু ছেলেমেয়ে নিয়ে এভাবে চলে যাবে বুঝতে পারিনি।’

এ ব্যাপারে ওসি জাহিদ ইকবাল বলেন, পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, অভাব-অনটন ও সংসারে অশান্তি ছিল আরিফার। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে হতাশা ও বিষণ্নতায় ভুগছিলেন তিনি। তাই মেয়ে ও ছেলেকে বিষাক্ত কোনো কিছু খাইয়ে পরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে সবটা জানা যাবে।

মরদেহ উদ্ধারের পর স্বামী আকবর আলী, শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম, শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম ও দেবর বাবর আলীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাদের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হেফাজতে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান ওসি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two + 15 =