আগামীকাল ১৯ অক্টোবর ২০২০ বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি’র) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন সাংসদ চৌধুরী হারুনর রশিদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। আজীবন ত্যাগী এই বিপ্লবী নেতা দীর্ঘ রোগভোগের পর ২০০০ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
চৌধুরী হারুনর রশিদ বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি’র) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক ও শ্রমিক আন্দোলনের বিশাল ক্যানভাসে ছড়ানো ছিল তার কর্মকান্ড। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে প্রথম গ্রেফতার বরণ করেন। একনাগারে ৪ বছর জেল খেটে ৫৬ সালে মুক্তিপান। মুক্তির ২ বছর পর সামরিক শাসন জারী হলে তার উপর আবার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়। পার্টি, রাজনীতি, শ্রমিক সংগঠনের কাজে গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর আত্মগোপনে থেকে সংগঠন ও আন্দোলন গড়ে তোলেন।
৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ন্যাপ, সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়াউর রহমানের শাসনামলে স্বাধীন বাংলাদেশেও তাকে আবারও গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে যেতে হয়। তিনি একাধারে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ন্যাপের সহ-সভাপতি, টিউইসি ও রেল শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি দীর্ঘ পাঁচ দশক রাজনীতি ও শ্রমিক আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালে ১৫ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।
চৌধুরী হারুনর রশিদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অদ্য ১৮/১০/২০২০ তারিখ পুরানা পল্টনস্থ মনিসিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবনের শহীদ মুনির-আজাদ মিলনায়তনে এক স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। টিইউসি আয়োজিত উক্ত স্বরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি’র) সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন টিইউসি’র সহ-সভাপতি মাহাবুব আলম, আইন ও দর কষাকষি সম্পাদক মোঃ মছিউদদৌলা, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা, কেন্দ্রীয় নেতা এড. এ. কে. আজাদ, আসলাম খান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চৌধুরী হারুনর রশিদ শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের গরীব-শ্রমজীবি মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। বাংলাদেশের শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। বর্তমান শ্রমিক আন্দোলনে চৌধুরী হারুনর রশিদের ত্যাগ-তিতীক্ষা-সাহস ও আদর্শবাদী শ্রমিক দরদী মনোভাব খুবই প্রয়োজন।