স্টাফ রিপোর্টার: চানখারপুল জেনারেল হসপিটালের পরিচালক আবু বকর, অবৈধ গর্ভপাত করা যেখানে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেখানে তিনি প্রতিনিয়তই এমন কাজ করে যাচ্ছে। আর এইসব অপকর্মের জন্য হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করা হয়েছে আলাদা চেম্বার। রাখা হয়েছে সালমা নামের এক মহিলাকে, যে এই অপকর্মের সাথে দীর্ঘদিন থেকে জড়িত। এই সালমার নামে রয়েছে চুরি করে বাচ্চা বিক্রি করার মামলা। পুরাতন মামলায় এখনও হাজিরা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। পরিচালক আবু বকর অবৈধ গর্ভপাত করানোর জন্য নিয়ে থাকে ১০-২০ হাজার টাকা। এবং বাচ্চা ফেলে দেয়ার জন্য ২-৩ হাজার টাকা। এধরনের অবৈধ বাচ্চা ফেলে দেওয়ার জন্য আগে থেকেই তাদের ভাড়া করা লোক থাকলেও তাদের টাকা পরিশোধ করে না। তারা কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে, এখন তিনি নিজেই বাচ্চা ফেলে দেয়ার কাজ করছে। তিনি প্রায়ই ঢাকা মেডিকেলের আশেপাশে বাচ্চা ফেলে দিয়ে থাকে। এ জন্য কিছুদিন পর পর ডাস্টবিনে বাচ্চা পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক ওয়ার্ডবয় বলেন, আমাকে দিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত এই কাজ করিয়ে যাচ্ছে, কিছুদিন যাবৎ বাচ্চা ফেলে দেওয়ার জন্য রোগীর কাছ থেকে বেশী টাকা নিলেও আমার পাওনা টাকা আমাকে দিচ্ছেনা। তাই আমি কাজ না করায় এখন তিনি নিজেই এই কাজ করে থাকে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, প্রতিটি হসপিটাল পরিচালনায় সর্ব নিম্ন তিন জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকার বিধান থাকলেও তা মানছে পরিচালক আবুবকর। আবু বকরের এই সব অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অংশীদার মালিকগন (বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ) তর্কবিতর্ক করে চলে গেছে।
তাহারা এখন এই হসপিটালের কোনো খোঁজ খবর রাখেন না। পরিচালক আবু বকর একটি প্রতারনার টিম দিয়ে এই হাসপাতালটি পরিচালনার পাশাপাশি তাদের দিয়ে গরিব দুঃখী মানুষের টাকা হাতিয়ে নেয়া সহ ব্যাপক অনিয়ম করে যাচ্ছে।
চানখারপুল জেনারেল হসপিটাল নিয়ে এই আবু বকর পূর্ব মালিকের সাথেও প্রতারনা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ গর্ভপাত ও বিভিন্ন অনিয়ম করে এখন সে কোটি কোটি টাকার মালিক। কিছুদিন আগেও ৫০ লক্ষ্য টাকা দিয়ে কিছুদিন আগে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় করেন।
কয়েকটি টেলিভিশন এবং পত্রিকাতে ঢালাও ভাবে রিপোর্ট প্রচার করা হলেও টনক নড়েনি পরিচালক আবু বকরের। ২০১৯ সালের শেষ দিকে এই হসপিটালের পরিচালক সহ চারজনের বিরদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় বংশাল থানায় মামলা হয় বলে জানা গেছে।
ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন মো: মঈনুল আহসান বলেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে তাদের কোন ছাড় নেই। কতিপয় বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্য গোটা স্বাস্থ্যখাত ধ্বংস হতে দেয়া যায় না। চিকিৎসাসেবার নামে কিছু প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে আমরাই উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্যখাতে কোন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।