সৈয়দ মোঃ রাসেল: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দু’দিনের ভারী বষর্ন ও নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খাল-বিল পানিতে পানিতে টইটুম্বুর হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে আমন ধানের ক্ষেত,শতাধিক পুকুর সহ মাছের ঘের ডুবে ভেসে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির অন্ততঃ কোটি টাকার মাছ।স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৫৪ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এ বৃষ্টি আরো দুই থেকে তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে কলাপাড়া ডপলার রেডার ষ্টেশন সূত্রে জানা গেছে।
কলাপাড়ায় চাকামইয়া,টিয়াখালী,লালুয়া,মিঠাগঞ্জ,নীলগঞ্জ সহ উপজেলার অন্য সকল ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে আমন ধানের ক্ষেত একারনে তাদের ঘরে ফসল তোলাতো দুরের কথা এবার ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।
কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিন নীলগঞ্জ গ্রামের মাছ চাষী মো.জুয়েল সিকদার জানান,
তি বর্ষনে তার মাছের ঘের সহ শীতকালীন সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।যা পুষিয়ে উঠতে তাকে হিমশিম খেতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একই ইউনিয়নের সলিমপুর গ্রামের ক্ষিতীশ বিশ্বাস জানান, তার মাছের ঘের রক্ষার শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে তিনি।তিনি অন্ততঃ তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
একই ইউনিয়নের মাষ্টারবাড়ী এলাকার মো.মোশারেফ হোসেন ,দেলোয়ার,মিলন জানান, এত পরিমান বৃষ্টি এ বছর বর্ষা মৌসুমেও হয়নি।তাদের ঘেরে বিভিন্ন প্রজাতির অন্ততঃ ১০ লক্ষাধিক টাকার মাছ ছিল।পানিতে পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যাওয়ায় ঘেরের অধিকাংশ মাছ ভেসে গেছে বলে তিনি ধারনা করছেন।
এদিকে, চাকামইয়া ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের কৃষক মো.ফোরকান মিয়া জানান, তার দু’বিঘা জমিতে লাল শাক, পালন শাক,লাউ সহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি ছিল , যা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একই গ্রামের সবজি চাষী মোকলেস মিয়া জানান, এর আগের বৃষ্টিতে যেমন ক্ষতি হয়েছে,এ বৃষ্টিতে তার চেয়েও বেশী ক্ষতি হয়েছে । তিনি স্থানীয় একটি এনজিও থেকে লোন নিয়ে সবজি চাষাবাদ করেন,সবজি বিক্রির টাকায় কিস্তিতে এ লোন পরিশোধ করতেন । এ বৃষ্টির প্রভাবে আর্থিক লোকসানে পড়বেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, দু’দিনের ভারী বর্ষনে শারদীয় দূর্গোৎসবের তেমন কোন আমেজ লক্ষ্য করা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজা উদ্যাপনের সরকারী নিদের্শ থাকলেও ৬ষ্ঠী এবং সপ্তমী পুজায় কোন মন্ডপে তেমন কোন লোক সমাগম দেখা যায়নি।
অপরদিকে,অতিবর্ষনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, ব্যবসাসীদের মধ্যেও। বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার পৌরশহরের বিভিন্ন দোকান-পাট এবং উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের দোকান -পাট গুলোর অধিকাংশ ছিল বন্ধ অবস্থায়। দু’একটি দোকান-পাট খোলা থাকলেও তাতে কোন বেচা-বিক্রি হয়নি। দু’দিনে পৌর এলাকায় রিক্সা চলাচল করেছে হাতে গোনা দু’চারটি মাত্র। এই তিন’দিনে বিদুৎ দুএকবার আসলে গেলেও বেসির ভাগ সময়ই ছিলনা বিদুৎ মোট কথা তিন’দিনের এ বর্ষনে জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।