পুলিশের ক্ষমতা ও সম্পদের অভাব নেই

0
766

একজন পুলিশ কর্মকর্তার ক্ষমতা ও দাপটের কাছে সাধারণ লোক জিম্মি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে পুলিশের অসাধারণ ক্ষমতা ও বিশালকারের সম্পদের যে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা জনমনে আতংক সৃষ্টি করে। রিম্যান্ডে নিয়ে আসামিকে অমানবিক নির্যাতন করা, চাঁদাবাজি, মাদক দিয়ে নিরপরাধ লোককে ধরে থানায় নিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা এবং টাকা দিতে না পারলে শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি অপরাধের অভাব নেই পুলিশের বিরুদ্ধে। এদিকে একজন এসআই পদের কর্মচারীর সম্পদের পাহাড় নিয়ে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। রিম্যান্ডে নিয়ে নির্যাতন করার মত অপরাধ ঘটানোর পর অভিযুক্ত পুলিশকে শাস্তি হিসেবে ক্লোজ করা হয়। গত কয়েক বছরে অসংখ্য লোক থানা হেফাজতে পুলিশের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। সস্মপ্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের রাজশাহী রেঞ্জের অঘোষিত রাজা সৈয়দ মিলাদুল হুদা। তিনি মহাসড়কের হেডমাস্টার। তার পদবি হচ্ছে একজন টিআই অর্থাৎ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর। সংবাদে প্রকাশ, তার নামে-বেনামে বিভিন্ন জেলায় রয়েছে বাড়ি, গাড়ি, জমি, প্লট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একাধিক নামে শেয়ার বাজারে আছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বিনিয়োগ। অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের চ‚ড়ায় সিরাজগঞ্জ ট্রাফিকের পুলিশ ইন্সপেক্টর সৈয়দ মিলাদুল হুদা। যেখানে বদলি, নিয়োগ, চাঁদাবাজি সেখানেই হুদা। অবশেষে তার বিরুদ্ধে নালিশ গেছে দুদক ও পুলিশ হেডকোয়ার্টারে। আরেক গুনধর পুলিশের এসআই আকবর। সম্প্রতি এই আকবরের যে কর্মকান্ড ও সম্পদের বিবরন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তাতে তাকে সম্রাট আকবর বলেই মনে হয়। তার আসল নাম আকবর হোসেন ভ‚ঁইয়া।

তিনি সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদ্য বরখাস্ত হওয়া এসআই। নির্যাতন করে যুবক হত্যার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য রায়হান নামে এক যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ ওঠলে আকবরসহ জড়িত চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। টাকার জন্য নির্যাতন করা পুলিশের যেন স্বভাবিক কাজে পরিণত হয়েছে।

সিলেটের এই আকবর এপর্যন্ত টাকার জন্য কত যুবককে নির্যাতন করেছে তা তদন্ত করার মত কর্তৃপক্ষ দেশে আছে বলে মনে হয় না। আশুগঞ্জের বগাইর গ্রামে ১৫ শতাংশ জমির ওপর নয়াভিরাম একটি ভবন। ভবনের সামনে কাজ চলছে সুবিশাল গেটের। কয়েক কোটি টাকার এই ভবনের মালিক আকবর। একটি জাতীয় দৈনিকে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদটির শীরোনাম ছিল “এই যে আকবরের অট্রলিকা”। বগাইর গ্রামের লোকজন বলছেন যে আকবর নাকি জুলুম নির্যাতন করে এই অট্রলিকা গড়ে তুলেছেন। তার নামে-বেনামে আরও সম্পদ রয়েছে। এদিকে ওসি প্রদীপের ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়। মেজর সিনহা হত্যার পর তার অপকর্ম একে একে বের হতে থাকে।

এপর্যন্ত ওসি প্রদীপ কত লোককে নির্যাতন করেছে ও কত শত টাকার মালিক হয়েছেন তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়। পুলিশের ক্ষমতার দাপট ও সম্পদের বাহার দেখে সংশ্লিষ্টরা বলছেন বাংলাদেশের কোন ওসি শত কোটি টাকার মালিক নয়? যখনই অপকর্ম ধরা পরে তখনই সরকার একটু নড়েচড়ে বসে। আবার এক সময় সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × three =