Site icon Aparadh Bichitra

করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই!

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের দ্রুত বাড়ছে। গত ১ নভেম্বরের (পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায়) হিসাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও এ পর্যন্ত সর্বমোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে এক হাজার ৫৬৮ জন ও চার লাখ ৯ হাজার ২৫২ জন। ১৬ দিনের ব্যবধানে একদিনে (সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায়) দুই হাজার ১৩৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত ও সর্বমোট চার লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ হিসাবে গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তকৃত রোগীর হার ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যার কমপক্ষে দ্বিগুণ। শতকরা ৮০ ভাগ করোনা সংক্রমিত রোগীর কোনো ধরনের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায় না। ফলে অনেকেই ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসেন না। নমুনা পরীক্ষার মাধমে চিহ্নিত না হওযায় করোনা সংক্রমিত রোগী দিব্যি ঘুরে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে।

করোনা সংক্রমণরোধে ভ্যাকসিন কবে পাওয়া যাবে সে আশায় বসে না থেকে মুখে মাস্ক পরিধানসহ প্রযোজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে দেশব্যাপী ব্যাপক গণসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি সঠিক নিয়ম মেনে চলার ব্যাপারে খোদ স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারাই উদাসীন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বারবার মুখ থেকে মাস্ক খুলে একবার টেবিলে রাখছিলেন, আরেকবার পরছিলেন। এরমাঝেই তিনি পাশের কর্মকর্তার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে কয়েকবার হাঁচি-কাশি দেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, যদি স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাই স্বাস্থ্যবিধি সঠিক নিয়মে মেনে না চলেন তাহলে সাধারণ মানুষ অজ্ঞতার কারণে না মানাটাই স্বাভাবিক।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ড রোড ও সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই নেই। বেশিরভাগ ক্রেতাবিক্রেতা মাস্ক না পরেই কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছেন। এর আগে করোনার সংক্রমণ যখন বাড়ছিল তখন মার্কেটগুলোর প্রবেশপথে জীবাণুমুক্তকরণ কক্ষ বসানো হলেও সেগুলো এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২১ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২১৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ১৩৯ জন। এতে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল চার লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ জনে।