নানা আয়োজনে বিশ্ব সিওপিডি দিবস পালিত

0
334

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার (১৮ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একটি সচেতনতামূলক সংক্ষিপ্ত শোভাযাত্রা, বেলুন উড়ানো, ডা. মিল্টন হলে একটি আলোচনা সভা ও বৈজ্ঞানিক সেশনের আয়োজন করা হয়।

বিএসএমএমইউ’র বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈজ্ঞানিক সেশনে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, কার্ডিওলজি বিভাগের ক্লিনিক্যাল কার্ডিওলজির প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন।

বক্ষব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজাশিস চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ সময়ে বিশ্ব সিওপিডি দিবস পালন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী মুখে মাস্ক পরার যে নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের তা অবশ্যই মেনে চলতে হবে। ধূমপান পরিহার ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।’ এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্ষব্যাধি বিভাগের উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস দেন।

তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকা ও বায়ুদূষণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সিওপিডি একবার হয়ে গেলে সহজে নিরাময় হয় না, তাই প্রতিরোধেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে এন্টি টোবাকো ক্যাম্পেইন জোরদার করতে হবে। এ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এটা প্রতিরোধের জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে বায়ুদূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘ধূমপান না করা, কলকারখানার ধোঁয়াসহ সকল ধরনের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা, তামাক চাষ বন্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে সিওপিডি রোগ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তামাক মুক্ত দেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনসংখ্যার ১১ দমমিক ৪ শতাংশ সিওপিডি রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে ১১ দশমিক ৭ ভাগ পুরুষ এবং ১০ দশমিক ৬ ভাগ নারী। সিওপিডি রোগ প্রতিরোধে তামাকের চাষ ও উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সিগারেট ও তামাক কোম্পানিগুলো বন্ধ হলে সিওপিডিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাবে। কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য সেবনের কারণে শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারসহ মানুষ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ধূমপান পরিহার ও পরিবেশ দূষণ রোধের মাধ্যমে সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদসহ বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০২ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বর্তমানে পৃথিবীতে সিওপিডি রোগীর সংখ্যা ৮০ মিলিয়ন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 + five =