রংপুরে ধর্ষন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে সমাবেশ

0
476

সারাদেশে অব্যাহতাবে ধর্ষন নিপীড়ন ও পাহাড় সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন সামাজিক নিপীড়ন বন্দ এবং ধর্ষন মামলায় স্বাক্ষ আইন বাতিলসহ নয় দফা দাবি নিয়ে ধর্ষন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ গতকাল সকাল ১১টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে ধর্ষন বিরোধী বিভাগীয় সমাবেশ করে। সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সদস্য রংপুর মহানগর সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সমাজ তান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছাত্র নেতা আল কাদেরী জয়, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদে সাধারন সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামে কেন্দ্রীয় সদস্য ইশরাত জাহান লিপি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সদস্য মনিরুজ্জামান নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক নিলুফা উদাচী ইয়াসমিন শিল্পী ছাত্র ফ্রন্ট রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিনা মুরমু, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) বিভাগীয় নেতা পরমানন্দ দাস, ছাত্র ইউনিয়ন বিভাগীয় নেতা ও জেলা সভাপতি আবু মালেহ মোঃ শিহাব ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারন সম্পাদক নিরঞ্জন রায়, ছাত্র ফেডারেশন প্রমূখ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আলী রায়হান সরকার। আরো সংহতি প্রকাশ করে রংপুর জেলা কমিউনিস্ট পার্টি বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী) জাসদ, ওয়ার্কাস পার্টি, জনতার রংপুর সহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠন সমূহ।

সমাবেশ পরিচালনা করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) রংপুর নগর শাখা আহবায়ক সাজু বাসফোর। বক্তারা সমাবেশ থেকে বলেন, ধর্ষন ও নারী নিপীড়ন এখন বাংলাদেশে এখন চরম সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। নিজের ঘর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্র্মীয় উপাসনালয়, সমতল-পাহাড়ে দেশের কোথাও মানুষের নিরাপত্তা নেই। বক্তারা আরো বলেন, গণতন্ত্রহীনতা ও বিচারহীনতার এই সময়ে খাগড়াছড়িতে আদিবাসী নারী ধর্ষন।

সাভারে স্কুল ছাত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা, সিলেট এমসি কলেজে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ দ্বারা এক নারী গণধর্ষন রাজশাহীর ধর্মীয় উপাসনালয়ে ধর্মযাজক দ্বারা আদিবাসী তরুনী ধর্ষন ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে এলাকাবাসীর সামনে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের সাথে যুক্ত সকল ধর্ষক নিপীড়কদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ধর্ষন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ৯ দফা সমূহ-

ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ৯ দফা র্কমসূচি

১। সারাদেশে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
২। পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যোন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
৩। হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নিযার্তন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডর সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।
৪। ধষর্ণ মামলা ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।


৫। অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন অনিষ্পন্ন সকল মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।
৬। তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭। ধর্মীয়সহ সকল ধরণের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। সুস্থু ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
৮। পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমুলক যে কোন প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে।
৯। গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − six =