সাইকেল ব্যবসায়ীর ভ্যাট ফাঁকি, হিসাব জব্দ

0
436

রাজধানীর বংশালে ‘সিরাজ সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। প্রতিষ্ঠানটিতে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের একটি দল অভিযান চালিয়ে গোপন হিসাবপত্র জব্দ করে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (২ ডিসেম্বর) এই অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের উপপরিচালক তানভীর আহমেদ।

মইনুল খান বলেন, ‘সিরাজ সাইকেলের কারখানা গাজীপুরের শ্রীপুরের মুলাইদে অবস্থিত। তবে বংশালে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিস ও এখানে বাণিজ্যিক হিসাবপত্র সংরক্ষণ করা হয়। ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃক নিয়মিত অডিট চলাকালে এই সাইকেল ব্যবসায়ীকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী হিসাবপত্র দাখিল করতে বললে তারা সেগুলো না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। অডিট শুরুর এক বছর পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিরাজ সাইকেল কতিপয় কাগজ দাখিল করলে তাতে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়।’

তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে যাচাই করে ভ্যাটের হিসাবে গরমিল পায়। গোয়েন্দাদের কাছে দাখিলকৃত তথ্যাদি ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে মনগড়াভাবে বানানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’

জানা গেছে, আজকের অভিযানে এই সাইকেল ব্যবসায়ীর বংশালের অফিস থেকে সিএ ফার্ম এম এন ইসলাম অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক নিরীক্ষিত রিপোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক তথ্যাদি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এসব তথ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, কেবল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

কিন্তু আটক সিএ রিপোর্ট ও বাণিজ্যিক কাগজপত্র অনুযায়ী, এই হিসাব ৭৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তথ্য বলছে, কেবল এক বছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে ৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে আগে দাখিলকৃত হিসাব অনুযায়ী, এক বছর সময়ে তারা প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে প্রায় ২৭৪ শতাংশ।

ড. মইনুল বলেন, ‘গোয়েন্দা দল গভীর অনুসন্ধান করে গত পাঁচ বছরের হিসাব বের করে দেখছে। আরও তদন্ত করে প্রকৃত ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা সিরাজ ব্র্যান্ডের সাইকেল পার্টস উৎপাদন করে। একই সাথে তারা বিদেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সাইকেল আমদানি করে বাজারজাত করে। সাইকেল ব্যবসায় উৎপাদনে ১৫ শতাংশ হারে এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four − one =