বর্তমান জনবান্ধব ও যোগ্য ডিএমপি পুলিশ কমিশনার পুলিশ বিভাগে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনার জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। থানায় সেবাগ্রহীরা যেন হয়রানির শিকার না হয় এবং কোনভাবে কেউ যেন পুলিশী সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এজন্য এসব উদ্যোগ। ভুক্তভোগী কেউ থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন কি না, সাধারণ ডাইরি করতে গেলে কালক্ষেপন করা হয় কিনা, জিডির তদন্ত করতে তদন্তকারী কর্মকর্তা গাফিলতি করছেন কিনা তার প্রতিকার করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন বিভাগ থেকে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় পুলিশ কোন ব্যক্তিকে বুট দিয়ে আঘাত করছে কি না এবং অকারণে খারাপ আচরন করেছে কি না তাও উল্লিখিত উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে। রাস্তাঘাটে প্রায়ই দেখা যায় পুলিশ রিকশা থামিয়ে যাত্রির পকেটে হাত ঢুকিয়ে মানি ব্যাগ বের করে কী যেন দেখতে চাইছে। আবার দেহ তল্লাশির নামে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আইন জানে না এবং অল্প শিক্ষিত লোকদের জন্য পুলিশের এধরনের আচরন ভয়ের কারণ। কেননা, পুলিশ দেহ তল্লাশী ও পকেট তল্লাশীর নামে অনেক লোককে রাস্তায় হয়ারনি করে মর্মে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা থেকে একটু পশ্চিমে গেল যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামান্য পূর্ব পাশে প্রধান সড়কে পুলিশের কিছু কন্সটেবল প্রতিনিই এধরনের পকেট তল্লাশি ও দেহ তল্লাশি করেছে বলে দেখা যায়। সায়দাবাদ রেল ক্রসিং পার হলে একটু পশ্চিমে স্বামীবাগ কবরস্থানের পাশের রাস্তায় ওয়ারী থানা পুলিশের একই তৎপরতা দেখা যায়। এভাবে তল্লাশির পর যাত্রিকে একের পর এক প্রশ্ন করা হয়। কোথায় যাবেন, কী করেন, এখানে কেন ইত্যাদি প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে নার্ভাস করার চেষ্টা। কারণ অসহায় যাত্রী নার্ভাস হলেই পুলিশের উদ্দেশ্য সফল হয়। রিকশা বা সিএনজি থামিয়ে এভাবে যাত্রিকে নামিয়ে পকেটে হাত ঢুকানো পুলিশের আইনে কতটুকু অনুমোদিত তার সঠিক চর্চা পুলিশকেই করতে হবে। তবে তল্লাশির নামে পকেটে মাদক ঢুকিয়ে দিয়ে ফাঁসানো ও জুলুম নির্যাতন করা বেশ কিছু পুলিশের দানবীয় কাজে পরিণত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে অনেক সংবাদ এসেছে।
বিশেষ করে রাতের বেলায় পুলিশের পাশ দিয়ে অনেকে যেতেই ভয় পায়। কারণ কোন না কোন অজুহাতে ধরে থানায় নিয়ে যেতে পারে। ছিনতাই করার সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে অনেক পুলিশ গণধোলাই খেয়েছে এমন ঘটনা অতীতে অনেকবার ঘটেছে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে মৃত্যু এখনও কমছে না। চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারার কারণে এধরনের নির্যাতন করা হয় বলে প্রকাশ। এছাড়া পুলিশের একজন পরিদর্শক পদের কর্মকর্তার সম্পদের পাহাড় নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। কক্সবাজারের বহুল আলোচিত ওসি প্রদীপ এর অন্যতম উদাহারণ। ইতোমধ্যে ডিআইজি হাবিবুর রাহমানও অনেক জনবান্ধব ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন যা পুলিশ ও জনগনের মধ্যে দুরত্ব কমিয়ে আনতে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। পুলিশ বিভাগে অনেক ভাল মানুষ আছেন যাদেরকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। অসৎ পুলিশের অপকর্মের কারণে গোটা বাহিনী কলঙ্কিত হবে এটা কাম্য নয়। তবে পুলিশকে দানবীয় না হয়ে মানবিক হওয়ার আহবান জানাই।