কিশোরগঞ্জে মানবতা বিরোধী রাজাকার আব্দুল মান্নান এর ৪৯ বছর পরও বিচার হয়নি

0
547

রংপুর প্রতিনিধি: স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রামের মানবতা বিরোধিতা করে ১৯৭১ সালে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহগিলী ইউনিয়নের ০৯ নং ওয়ার্ডের বসুনিয়া পাড়া গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মান্নান (৭৭)(পিতা মৃত রাজাকার আবেদ হাজি রাজাকার তালিকা ক্রমিক নং ৭৪২) এর অভিযোগ উঠেছে । স্বাধীনতার বিরোধিতা করে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ড করার পাশাপাশি তার অত্যাচার ও লুটতরাজের মত জঘন্য অপরাধের সাথে লিপ্ত ছিল বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।

১৯৭১ সালে খান সেনাকে নিয়ে এসে তার পিতা কুখ্যাত রাজাকার আবেদ হাজি ও কুখ্যাত রাজাকার দালাল আব্দুল মান্নান এর বর্বরতার নির্যাতনের শিকার হন অনেক মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত করে এবং নির্বিচারে গণধর্ষণ গণহত্যা চুরি-ডাকাতি সম্পত্তি দখল অগ্নিসংযোগসহ মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দেওয়া অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বর্তমান সময়ে সূত্রে আরো জানা যায় গত ০৩/০৬/২০১৮ ইং তারিখে সকাল ০৯.০০ ঘটিকার সময় ইপিআই কাজে থাকাকালীন অবস্থায় বাহাগিলি ডাঙ্গারহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে কর্মরত থাকাকালে সকাল আনমানিক ১০.০০ঘটিকার সময় রাজাকার আব্দুল মান্নান তার নাতি শিশু মোঃ হায়াত সাহাবী এর জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরমে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য সংযোজনের জন্য স্বাস্থ্য সহকারি কর্মী শ্রী মনোরঞ্জন রায়কে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে।

এমত অবস্থায় স্বাস্থ্য সহকারি কর্মী শিশুর জন্ম নিবন্ধন ফরেম মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করতে রাজি না হলে রাজাকার আব্দুল মান্নান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করিয়া এলোপাতাড়িভাবে কিল-ঘুসি ও লাঠি দিয়ে মারিয়া রক্তাক্ত জখম করে। এবং সঙ্গে থাকা সরকারি কাজের রেজিস্টার খাতা ছিরিয়ে দেয় ও ভ্যাকসিন কারিয়া নিয়ে মাটিতে ছড়িয়ে দেয় ও ভ্যাকসিন সমূহ মাটিতে পড়িয়া নষ্ট হয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মী বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ থানায় গত ০৪/০৬/২০১৮ ইং তারিখে একটি এজাহার দায়ের করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন ১৯৭১ সালে তার গ্রামের সুকারু মামুদ,তার মেয়ে মোছঃ কাচুয়ানী ও ১৩ মাসের শিশুকে প্রত্যক্ষভাবে খান সেনাকে নিয়ে এসে নির্মমভাবে হত্যা করে।

সেদিন ও রক্ষা পায়নি মোশারফ হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে আসা তার বোন ও দুই জামাই আতাহার আলী, আজিম উদ্দিন এবং মোশারফ এর বাড়ির কাজের লোক এরফান আলী,ডোঢা মামুদ, রহিম উদ্দিন ওরফে ঘাটা বুরাসহ এর নাতি আব্দুস সালামকে ও হত্যা করে। এই প্রভাবশালী রাজাকারের ভয়ে এলাকাবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না এবং এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি মিথ্যা মামলা সম্পত্তি দখল সহ অনুসন্ধানে জানা যায়। বাবা ও ছেলে রাজাকার হয়ে পরিবারের চারজন সদস্য সরকারি চাকরি পাওয়া কিভাবে সম্ভব? বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কর্তৃক প্রদত্ত যুদ্ধপরাধীদের তালিকায় আব্দুল মান্নান রাজাকারের ক্রমিক নং (৮১) বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।

মোবারক আলী বসুনিয়া (৭০),বড় ভাই আজাহার আলীকে ১৯৭১ সালে খানসেনা কে বাড়িতে নিয়ে এসে বাবা ও ছেলের সামনে যোগসাজশে প্রত্যক্ষভাবে গুলি করে প্রকাশ্যে হত্যা করে।মোবারক হোসেন অভিযোগ করে বলেন কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মান্নান আমার ও বড় ভাইয়ের সম্পত্তি জবর দখল করে আছে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে মিথ্যা মামলা হয়রানিসহ রাস্তাঘাটে দেখা হলে মারপিট করে লাশ গুম করিবে ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে।

এসব ঘৃণ্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় ক্ষত পুরো জাতিকে বয়ে বেড়াতে হবে। মোবারক আলী বুসনিয়া এ বিষয়ে গত ২৬/০৮/২০২০ ইং তারিখে তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 − 1 =