আজ শেখ হাসিনা-মোদি ভার্চুয়াল বৈঠক

0
375

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আজ। বৈঠকে দেশ দুটির মধ্যে নয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। বৈঠকটি বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে বলে জানা গেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ভার্চুয়াল এই বৈঠকে বিভিন্ন খাতের নয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের আগের পুরনো চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগটি সুদীর্ঘ ৫৫ বছর পর পুনরায় উদ্বোধন করা হবে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এই বৈঠককালে ঢাকা পানি বণ্টন, কোভিড-১৯ সহযোগিতা, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি, যোগাযোগ, বিদ্যুত ও রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ প্রধান সব দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো তুলে ধরা হবে।

আসন্ন বৈঠকে দু’দেশে প্রবহমান অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে মোমেন ইঙ্গিত দেন। ঢাকা দু’দেশের মধ্যে বয়ে চলা প্রধান সাতটি নদী মনু, মুহুরি, গোমতি, ধরলা, দুধকুমার, ফেনী ও তিস্তার পানি বণ্টনের ইস্যুটিকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার প্রস্তাব দেবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শিগগিরই, এমনকি যদি সম্ভব হয় আগামী মাসেই এই অভিন্ন সাতটি নদীর পানিবণ্টন ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে একটি কাঠামো গড়ে তুলতে মন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব রাখা হবে।

মোমেন বলেন, সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পটিও জেআরসি বৈঠকের অন্যতম এজেন্ডা হবে। ১০ বছর আগে ২০১০ সালে নয়া দিল্লিতে সর্বশেষ জেআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চুক্তিটি অনেক আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। এমনকি ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তির প্রতিটি পাতায় স্বাক্ষর করা হয়েছে।

বিগত কয়েক বছর ধরে দিল্লি চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু বাস্তবায়নের অপেক্ষা।’

মোমেন বলেন, কোভিড মহামারি ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকের প্রধান এজেন্ডা হিসেবে স্থান পেতে পারে। ভারত সর্বপ্রথম বাংলাদেশকেই কোভিড ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে বলে ইতোমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং বৈঠকে বিষয়টি আরও জোরালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে ঢাকা ভারতকে জাতিসংঘে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাবে। এ বছর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে সমর্থন দিয়েছে। মোমেন বলেন, ‘আমরা তাদের বলব যে, যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হয়, তবে গোটা অঞ্চলেই অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে, যা মিয়ানমারে আপনাদের (ভারত) বিনিয়োগকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’ এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে হত্যা বন্ধে ভারতের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ‘স্বাধীনতা সড়ক’ ঘোষণা দেবেন। সড়কটি বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে মেহেরপুরের মুজিবনগরে জিরো লাইনে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত বিদ্যমান। সড়কটি যে স্থানে অবস্থিত সেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেয়। সড়কটি দু’দেশের জনগণের জন্য খুলে দেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + 20 =