Site icon Aparadh Bichitra

কৃষির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ-ভারত এফবিসিসিআই-সিআইআই কনফারেন্সে বক্তার

এজাজ রহমান: ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ড্রাস্ট্রিজ (সিআইআই) যৌথভাবে এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।‘ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ডিজিটাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচার সেক্টর ফলোড বাই বিটুবি সেশন’ শীর্ষক এক আলোচনায় দু’দেশের মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। যৌথ উদ্যোগ ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। দুদেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে কৃষি পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করা দরকার। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশই কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও খাদশস্যসহ সব ধরনের ফসলের মান উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিপণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরো আধুনিক করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর)


কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, রেলওয়েস অ্যান্ড কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স, ফুড অ্যান্ড পাবলিক ডিস্ট্রিবিশন বিষয়ক মন্ত্রী পীয়ুশ গয়াল এ কনফারেন্সের উদ্বোধনী সেশনে বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট ডেসিগনেট এবং টাটা স্টিল লিমিটেডের সিইও ও এমডি টি ভি নরেন্দ্রন, বাংলাদেশ নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জি, সিআইআইয়ের ন্যাশনাল মিশন অন আত্মনির্ভর ভারতের চেয়ারম্যান ও মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার এমডি ও সিইও ড. পবন গোয়েনকা এই সেশনে বক্তব্য রাখেন। সেশনটিতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের ডিরেক্টর সুজীব রঞ্জন দাশ।


কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ভারত বীজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে আর সহযোগিতা দেখতে চাই। ভারতীয় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করতে পারে।বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভারত শুধু আমাদের প্রতিবেশী নয়, ভাল বন্ধুও বটে। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তবে বাণিজ্য ভারসাম্য এখনো ভারতের অনুকূলে। বাংলাদেশী রফতানি পণ্যের ওপর আরোপিত এন্টি ডাম্পিং শুল্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এসব পদক্ষেপের কারণে আমাদের রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।


ভারতের মন্ত্রী পীয়ুশ গয়াল বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। এ অংশীদারিত্ব অন্যদের জন্য রোল মডেল। তিনি বলেন, আমি মনে করি, দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে কৃষির গেম চেঞ্জিং সম্ভাবনা রয়েছে।বক্তব্যে শুরুতে চলতি বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের মানবিক সাহায্যের কথা স্মরণ করে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, পৃথিবীতে এমন দুটি দেশ আর নেই, যারা আমাদের মত ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, নৃতাত্ত্বিক বন্ধনে আবদ্ধ।


তিনি বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাত প্রতিবছর ভারত থেকে কয়েক শত কোটি ডলার পণ্য আনে, যা আরো বৃদ্ধির ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এটা যৌথ উদ্যোগ, শিল্প বৈচিত্র্যকরণ এবং বাজার বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে যে কোন লক্ষ্য অর্জন করতে পারি।


ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, কৃষি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিবেচনায় উভয় দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। পবন গোয়েনকা বলেন, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার জন্য বাংলাদেশ তিন শীর্ষ বাজারের একটি। আমরা এই বাজারকে এক নাম্বার স্থানে উন্নীত করতে চাই। সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট ডেসিগনেট টি ভি নরেন্দ্রন বলেন, রফতানি বাড়াতে দু’দেশই যৌথভাবে প্রাচ্যের দিকে নজর দিতে পারে।
কনফারেন্সের দুটি পৃথক বিটুবি সেশনের আলোচনায় দু’দেশের কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী, কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী ও খাদ্যপ্রক্রিজাতকরণ খাতের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।