মামলার রায়ের কপির জন্য বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দায় দিনের পর দিন ঘুরতে না হয় : রাষ্ট্রপতি

0
573

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তিনি বলেন সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে, মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করতে না হয়।’ সুপ্রিম কোর্ট দিবস ২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।নিজের আইন পেশার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি নিজে একজন আইনজীবী হিসেবে জানি যে, বিচার কাজ কত কঠিন ও জটিল। বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় একজন বিচারককে কতটুকু পরিশ্রম করতে হয়। তারপরও আমি বলব, মামলার পরিমাণ দিন দিন যে হারে বাড়ছে, সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হলে বিচারকদের আরও বেশি কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখনই সুপ্রিম কোর্ট জনগণের মৌলিক মানবাধিকার ও সংবিধানকে রক্ষায় কাজ করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জাতির ক্রান্তিকালে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখনই সুপ্রিম কোর্ট মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও সংবিধানকে রক্ষা করেছে এবং করে যাচ্ছে’, বলেন তিনি।

আবদুল হামিদ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট দিবসের অনুষ্ঠানে আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি সুপ্রিম কোর্টের সেইসব অকুতোভয় বিচারপতিদের যারা বন্দুকের নলের কাছে নতি স্বীকার না করে এবং নিজেদের বিবেককে বিকিয়ে না দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন।ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলে, ‘আমি আশা করি, জ্ঞানের চর্চায় আইনজীবীরা পূর্বের চেয়ে আরও এগিয়ে যাবেন এবং তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে বিচারপ্রার্থীদের দ্রুত ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সাহায্য করবেন।

তথ্যপ্রযুক্তি এখন দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এ সময়েও মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ৯ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়, যা পরবর্তীতে আইনে পরিণত হয়।তিনি বলেন, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আদালত প্রাঙ্গণে শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এজন্য আমি এ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে অনলাইন কজলিস্ট চালু হয়েছে এবং অনলাইন বেল কনফার্মেশন ব্যবস্থা কার্যকরভাবে চলছে বলেও রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।

আদালতের সব কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে হামিদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু “কোর্ট অব রেকর্ড” সেহেতু এর সব নথি এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সব কার্যক্রমকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সিনিয়র বিচারক ও আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 1 =