কে এই শিল্পপতি নুরন্নবী, দুদকে ১০৫ কোটি টাকার মামলা

0
1595

অপরাধ বিচিত্রা: লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের সানকি ভাঙ্গা গ্রামের নিলাম বাড়ীর মৃত নূরের রহমানের ৪র্থ ছেলে চট্টগ্রাম দেওয়ান হাট মিঠাগলির নবী অটোমোবাইল এর মালিক। নবীর কর্মজীবন শুরু হয় আর.আর. টেক্সাইলে পার্টস সাপ্লাই ও নবী অটোমোবাইল দিয়ে। সে থেকে পিছনে তাকাতে হয়নি নুর উন নবীকে, একে একে শুরু করেন ভূঁয়া সাইন বোর্ড ব্যবসা। এই সকল সাইন বোর্ড কাগজে কলমে বানিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে চেক জালিয়াতি করে হাজার কোটি টাকার বেশি উত্তলন করে নিয়ে যায় প্রতারক নুর উন নবী।

থেকে থাকেনি নবীর প্রতারনা, প্রতারনার মাধ্যমে নিজ গ্রামে গড়ে তোলে এক বিলাস বহুল বাড়ী (ড্রিম হাউস)। বাড়ী করতে গিয়ে এলাকার জমির মালিকদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। নবীর ম্যানেজার বাদী হয়ে মানিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করলেও মানিকের টনক নড়াতে পারেনী নবী। প্রতারক নবীর নজর পড়ে নুরুল হুদার বাড়ীর দিকে। নবী কৌশলে বাবুল বাহিনীর প্রধান বাবুলকে দিয়ে নুরুল হুদার বড় জামাই সাংবাদিক মোঃ জসিম উদ্দিনকে অপহরন করিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দেয়।

এতে নুরুলহুদা বাধ্য হয়ে বাড়ীটি নবীকে দিতে বাধ্য হয়। সরকার বন্ধবস্ত নথী দেন ২০০২ সালে জুলাখা বেগমকে ১ একর, রিজিয়া বেগমকে ১ একর। বন্ধবস্তকারীরা দখলে গেলে নবী তার লালিত ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে বলে ভোক্তভোগীরা অভিযোগ করে। জোট সরকার ক্ষমতা আসার পর জোট সরকারের মন্ত্রী আব্দুল আল নোমান, প্রতি মন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়া, এম.পি শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এনিকে বাড়ীতে এনে গরু জবাই করে এলাকার কিছু ব্যক্তিকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতেন এতে এলাকার মানুষ নবীর ভয়ে তটষ্ট থাকতেন।

১৪ দলীয় মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর নবী প্রতারনার কৌশল খাটিয়ে এলাকা বাসীকে জিম্মি করার জন্য প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আফসারুল আমিনকে তার গ্রামের বাড়ী সানকি ভাঙ্গাতে নিয়ে আসেন। এতে জেলা আওয়ামীলীগের নেতারা আসতে বাধ্য হয়। অভিযোগ আছে নবী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে ছবি তুলে তার বাড়ীতে টাংগিয়ে রাখে। যা দেখে এলাকা বাসী মুখে কুলুপ দিতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

নবীর বিলাস বহুল বাড়ীর সামনে সানকি ভাঙ্গা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক থাকায় বাড়ীর সুন্দর্য না থাকার অজুহাতে শেখ মুজিবকে দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে অথচ ওয়াল ভাঙ্গার কোন টেন্ডার ছিল না। বেল্লালকে পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে নবীর বাড়ীতে পিটালে বাধ্য হয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয় বলে একাধিক সূত্র দাবি করে। প্রতারক নবী বাড়ী আসার আগেই পুলিশ প্রটোকলের নামে হাজির থাকে। এরপর নজর পড়ে প্রতারক নবীর গ্রামের নামের দিকে। সানকি ভাঙ্গা গ্রাম নাকি খারাপ শুনা যায়। এই নামে নবীর সম্মান ক্ষুন্ন হয়।

সে কারনে নাম পাল্টিয়ে নবী নগর করা হয়। নবী নগর নামের বিরুদ্ধে শিক্ষা ক্যাডারের দুই জন সহ এলাকার কিছু সম্মানি ব্যক্তি মহামান্য হাইকোর্ট একটি রিট করলে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করে। রুল নিস্পত্তি না হওয়া সত্ত্বেও নবীর লালিত গুন্ডা বাহিনী দিয়ে অনেককে লাঞ্চিত করে আবার কারো কারো বাড়ী ভাংচুর করে। মানসম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনা। কেউ নবীর অপকর্ম সমর্থন না করলে তাকে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। নবী কথায় কথায় বলে ওসি, এসপি, র‌্যাব আমার পকেটে থাকে।

ইতিমধ্যে আব্দুল ওয়াহেদ মুন্সী মিকার নবীর মতে বিরুদ্ধে গেলে নবীর ইশারায় একটি হত্যা মামলায় সোন এরেস্ট দেখান এতে এলাকাবাসীর মাঝে আরো নবী আতংঙ্ক দেখা দেয়। নবীর উপদেষ্টা ঠেলাগাড়ী চালাক কামাল। কামালের ইশারায় নবী কাকে সায়েস্থা করতে হবে তখন তা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। নুর উন নবীর সাথে কেউ যোগাযোগ করতে হলে আগে তার উপদেষ্টা ঠেলাগাড়ী চালক কামালের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, উপদেষ্টা বললেই নবী যোগাযোগ করে।

নবী কাউকে হুমকি দিলে আগে ঠেলাগাড়ী চালক কামালকে তার কাছে পাঠিয়ে দেয়। তারপর কামালের মুঠো ফোনে হুমকি ধামকি দেন নবীর যেন কোন প্রমান না থাকে হুমকি দাতার নিকট। মহামান্য হাইকোর্টে রিট থাকার পরেও নবী এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যানকে বাধ্য করেন সার্টিফিকেটে নবী নগর লেখার জন্য। কিছুদিন পর নবী সানকি ভাঙ্গা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেন। নাম পরিবর্তন শিক্ষা কর্মকর্তার নজরে আনলে বাধ্য হয়ে আবার সানকি ভাঙ্গা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের নাম ফিরিয়ে দেন।

দিঘলী বাজারে মসজিদের নামেও প্রতারনা করে নবী। হানিফ থেকে ২.৫৫ডি. জমি ১১ লক্ষ ২৫ হাজার মূল্য ধরে ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ করলেও ৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নাদিয়ে তালবাহানা করে নবী। হানিফ দাবি করে আমার মত সকলের একই দশা। মহসিন থেকে ৬ডি. জমি ৩০ লক্ষ টাকা দাম ধরে কিন্তু টাকা না দিয়ে প্রতারনার কৌশল নেয় নবী।

মসজিদের নামে ক্রয় করা জমি রেষ্ট্রিঃ না নিয়ে মসজিদ নির্মান করেন সূত্র দাবি করে। ০১৭৮২১৩২১০৯, ০১৭৯৬৫১৫৬২, ০১৮৭০৭৪৩৯৩৯ একাধিক মোবাইলে যোগাযোগ করে নুর উন নবীর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একাধিক সূত্র দাবি করে প্রতারক নবী একেক সময় একেক নাম্বার ব্যবহার করে এবং তার কর্মচারীদের নামেও ব্যাংক থেকে ঋণ নেন যা পরে কর্মচারীরা ব্যাংকের দেনার দায়ে জেল খাটতে হতে পারে। দুদক মামলা নং-২৩ ও একটি ব্যাংকের ১৭টি মামলার বিস্তারিত আগামীতে থাকবে চলবে ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − 6 =