Site icon Aparadh Bichitra

সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় টমেটো চাষে ব্যস্ত নারীরা

হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ: বাংলাদেশের হাওর এলাকা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ জেলা। এখানকার প্রধান অর্থকারি ফসল হচ্ছে ধান। তার পাশাপাশি চাষ করা হয়- গম,ডাল,বাদাম,ভুট্টা,সরিষা ও পাটসহ নানার প্রকার শাক-সবজি। তবে চলতি বছরের টানা ৫ বারের ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার কৃষকরা হয়েছেন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শিকার। তারপরও থেমে নেই এই হাওর এলাকার কৃষকরা। তারা ধান চাষের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি টমেটো চাষাবাদে মেতে উঠেছেন। তবে পুরুষের চেয়ে নারীরা টমেটো চাষে বেশি সফল বলে জানাগেছে।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়- অন্যান্য বছরের তুলনায় জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় এবার টমেটো চাষের পরিমান ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৫শ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে শীতকালীন জনপ্রিয় সবজি টমেটো।কম সময়ে বেশি লাভ হওয়ার কারণে পুরুষের পাশাপাশি এই উপজেলার নারীরা টমেটো চাষের প্রতি বেশি ঝুকে পড়েছেন। আর নারীদের এই উৎসাহ দেখে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ।

সেই সাথে প্রদান করা হচ্ছে সার,বীজ ও কাটনাশক। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে টমেটো চাষের মাধ্যমে বদলে যেতে পারে জামালগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের জীবনচিত্র। তাই রাতদিন টমেটো গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে কৃষানীরা। আর সুনামগঞ্জ জেলার বিশ^ম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সেই দৃশ্যই লক্ষ করা গেছে। তবে টমেটো চাষের জন্য জামালগঞ্জ উপজেলার সেলিমগঞ্জ-মান্নানঘাট এলাকা বিখ্যাত বলে এলাকাবাসী জানান।

এব্যাপারে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের কৃষানী শায়েস্তারা বেগম বলেন-এই এলাকার বেশির ভাগ নারী-পুরুষ সবজি চাষের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে এবছর সবজি চাষ করতে গিয়ে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে বর্ষাকালীন সবজি চাষ করে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলাকার চাষীরা। তবে আমাদের উৎপাদিত টমেটো রাজধানী শহর ঢাকা ও বিভাগীয় শহর সিলেটসহ ময়মনসিংহ,রংপুর,নেত্রকোনা জেলাসহ আরো বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এবার আমার বাড়ির উঠানসহ প্রায় ১০শতক জায়গায় ৭হাজার টাকা খরছ করে টমেটো চাষ করেছি।

একই ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের টমেটো চাষী নুরজাহান বেগম- কয়েক দফা বন্যায় এবার আমার সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য এবার ৩২শতক জায়গাতে টমেটোর চাষ করেছি। আবহাওয়া ভাল থাকলে ও সঠিক মূল্য পেলে আশা করছি লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারব। শুধু আমি নই এই এলাকার শতাধিক নারী ও পুরুষ তাদের নিজ নিজ বাড়ির উঠান ও আশেপাশের পতিত জায়গাসহ উচু জমিতে টমেটো চাষ করেছে।

আমাদের উৎপাদিত টমেটোর সঠিক মূল্য পেলে সবার ভাগ্য খুলে যাবে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন বলেন- টমেটো চাষে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি এগিয়ে রয়েছেন। আমাদের কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি তারা টমেটো চাষে সফল হবেন এবং জেলা ও উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে তাদের উৎপাদিত টমেটো সুনাম বয়ে আনবে।