২০০ ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসার বিল মওকুফ করলেন মার্কিন চিকিৎসকতাজাখবর২৪.কম,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পৃথিবীতে মানবিকতা এখনও বেঁচে আছে। এখনও অনেক মানুষ আছেন যারা অন্যের দুঃখে কাতর হয়ে পড়েন। কীভাবে অসহায় মানুষকে সহায়তা করা যায় সেই চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। সম্প্রতি এমনই এক মানবিক মানুষের খোঁজ পাওয়া গেল যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি তার হাসপাতালের অনেক রোগীর বিল মওকুফ করে দিয়েছেন। মহামারির কারণে অনেক রোগীই বেশ বিপাকে পড়ে যায়। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার মতো সাধ্য তাদের ছিল না।আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে ডা. ওমর আতিক নামের এক চিকিৎসক রোগীদের দুরবস্থার কথা জানতে পেরে ২শ জন ক্যান্সার রোগীর প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার হাসপাতাল বিল মওকুফ করে দিয়েছেন।
ডা. ওমর আতিক জানান, মহামারি শুরুর পর তিনি বুঝতে পারেন যে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের একটি বড় অংশ চিকিৎসার খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এরপর তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করেন। এরপরেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, সমস্যায় থাকা রোগীদের বিল মওকুফ করে দেবেন। যদিও এটা বিশাল অংকের বিল কিন্তু কোনো কিছুই তার এই মহৎ উদ্যোগকে দমাতে পারেনি।
তবে মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতে গিয়ে চড়া মাশুলও গুনতে হয়েছে তাকে। প্রায় ৩০ বছর ধরে চালানো ক্লিনিকটি গত বছরই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। রোগীদের কাছ থেকে বকেয়া আদায়ের জন্য ডা. আতিক একটি পাওনা আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছিলেন। কিন্তু হিসেব নিকেশ করে তিনি বুঝতে পারেন যে তার রোগীরা আর্থিক দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন।
এরপর ক্রিসমাসের সময় তিনি ২০০ রোগীকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন যে, তাদের বকেয়া মওকুফ করা হয়েছে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ডা. আতিক ১৯৯১ সালে পাইন ব্লাফ শহরে আরকানসাস ক্যান্সার ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। তার ক্লিনিকে কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপির মতো চিকিৎসা দেয়া হয়। ডা. আতিক লিটল রকের ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাস ফর মেডিকেল সায়েন্সেসের একজন অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। এবিসির গুড মর্নিং আমেরিকা অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হল মহামারির মধ্যে বহু মানুষ ঠিকানা হারিয়েছে, আপনজন মারা গেছেন অনেকের এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সব হারিয়ে নিঃস্ব হারিয়েছেন কত মানুষ। ফলে বকেয়া মওকুফের জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে?
আর তার এই মহৎ কাজের জন্য অ্যাডভোকেসি গ্রুপ আরকানসাস মেডিকেল সোসাইটি থেকে শুরু করে পাওনা আদায়কারী প্রতিষ্ঠান সবার বাহবা পেয়েছেন তিনি। তার মতো চিকিৎসকরা থাকলে গরীব রোগীদের আর কোনো চিন্তাই থাকবে না।