বরগুনার তালতলীতে নোথায়ং মগ নামের এক রাখাইনের মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ষড়যন্ত্রমূলক এলাকার দরিদ্র ও নিরীহ দুই সহোদর ইউনুচ এবং ইউসুফকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন ও ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার এলাকার ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ উপজেলার নামিশেপাড়ার সড়কে জেলা ডিবি পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন ও এসআই আশরাফের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালের ২২ জুন উপজেলার নামিশেপাড়া এলাকায় নোথায়ং মগ নামের এক রাখাইনের অর্ধগলিত লাশ তার নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই রাখাইনের নাতি জোয়েন মগ বাদী হয়ে একই এলাকার শাহআলম মীর, ইলিয়াস মীর, আল-আমিন মীর ও নজরুলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি এক্সট্রে করায় আফ্রুসে রাখাইন বাদী হয়ে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
ফৌজদারি রিভিশন শুনানির পর আদালত জোয়েন মগের মামলার সাথে সংযুক্ত করে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি ডিবিতে বদলি হলে ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি খন্দকার জাকির হোসেন ও এসআই আশরাফ উদ্দিন জোয়েন ও বাদী আফ্রুসে মগের দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই এলাকার নিরীহ ও দরিদ্র দুই সহোদর ইউসুফ মুন্সী এবং ইউনুচ মুন্সীকে গত ১৫ নভেম্বর আটক করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
মানববন্ধনে ইউসুফ মুন্সী এবং ইউনুচ মুন্সীর ছোটভাই ইদ্রিস মুন্সী বলেন, রিমান্ডে নির্যাতন না করার জন্য তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করলে তাদের ৪০ হাজার টাকা দেই। এরপরও ভাইদের রিমান্ডে নিয়ে পুরুষাঙ্গে গলিত মোম ও অনন্য ভাবে অমানুষিক নির্যাতন করে মামলার স্বীকারোক্তি নেয়া হয়।মানববন্ধনে শহিদ মিয়া বলেন, এলাকায় নিরীহ লোকদের ডিবির ওসি জাকির ও এসআই আশরাফ বিভিন্ন সময়ে হয়রানি করে আসছে। তাদের হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন মানববন্ধনে আসা ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ। ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীর দ্রুত মুক্তি দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে ডিবির ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে মানববন্ধন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি হত্যা মামলার তদন্তে প্রমাণ পেয়ে ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে গ্রেফতার করা হয়। ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে কোনো ধরনের নির্যাতন ও তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়নি।পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।