Site icon Aparadh Bichitra

উঠে এলো দিহানের বেপরোয়া জীবনের গল্প!

টয়োটা এক্সিও গাড়িটি নিজেই চা’লাতো। প্রতি মাসে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় করতো। মা-বাবার শাসন-বারণে তোয়াক্কা ছিল না মোটেও। যখন যা চাইতো তাই পেতো। অর্থ ও বিত্তের জোরেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে তানভীর ইফতেফার দিহান (১৮)।

কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকার অনেকেই তাকে ডিজুস বয় হিসেবে চেনে। যখন তখন গাড়ি নিয়ে বের হতো। পাড়ার গলি কেঁপে উঠতো, তার গাড়িতে বাজানো হতো উচ্চ ভলিয়মের গান। হিন্দি ও ইংরেজি গান শুনতো দিহান। ঘনঘন হর্ণ বাজানো তার অভ্যাস।

গাড়ির সামনে থেকে সরে যেতে সময় ক্ষেণ করার কারণে রিকশা, ভ্যানচালকরা তার মারের শিকার হতো প্রায়ই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিহানের বাবা আব্দুর রউফ সরকার ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ২০১২ সালে অবসরে যান তিনি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করার সুবাদে বিপুল অর্থের মা’লিক হন আব্দুর রউফ সরকার।

কলাবাগানের লেক সার্কাসের ডলফিন গলির পান্থনিবাস নামক বাড়িটি তার পিতা আব্দুর রউফ সরকারের। আব্দুর রউফ সরকারের তিন পুত্রের মধ্যে তা’নভীর ইফতেফার দিহান ছোট। দিহান যেকোনো আবদার করলে তা সহজেই পূরণ করতেন পিতা। দিহানের বয়স যখন ১৬ বছর, তখনই সাড়ে তিন লাখ টাকা মূল্যে সুজুকি মোটর সাইকেল কিনে দেন পিতা।

কয়েক বছরের মধ্যেই গা’ড়ির বা’য়না করে দিহান। যে’কোনো গাড়ি দিলে হবে না। দিতে হবে ট’য়োটা এ’ও। ছে’লের কথামতো ২০১৯ সালে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে দেন তার পিতা। দিহানের ঘ’নিষ্ঠরা জানান, অল্প বয়সেই বেপরয়ো জীবনযাপনে অ’স্ত হয়ে যায় দিহান। যে কারণে দিহানের তেমন লেখাপড়া করা হয়ে ও’ঠেনি। তবে ব্রিটিশ কা’উন্সিলে একটি কো’র্স ক’রেছিল দিহান।

তার বেশ ক’য়েক বান্ধবী রয়েছে। আনুশকা নুর ছাড়াও পরিচয় ছিল ইংলিশ মিডিয়ামে অধ্যয়ণরত আরো অনেকের সঙ্গে। এরমধ্যে তার একজন কিশোরী বান্ধবী রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই মেয়েটির সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ধানমণ্ডির বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে দেখা গেছে তাকে। সূত্র মতে, পুলিশের কাছে দিহান স্বী’কার করেছে একাধিক মেয়ের সন সম্পর্ক ছিল তার।

একেক সময় একেক জনকে নিয়ে সময় কা’টাতো। বান্ধবীরা তার প্রতি বেশ স’ন্তুষ্ট থাকতো, কারণে অকারণে বান্ধবীদের দামি দামি গিফট দিতো দিহা’ন। ঘ’টনার কিছুদিন আগেও এক বান্ধবীর বার্থ ডে পার্টির আয়োজন করেছিল। সূত্রমতে, প্রায়ই লং ড্রাইভে যেতো দিহান। করো’নার সময় বিকালে বের হয়ে বাসায় ফিরতো গভীর রাতে। অনেক সময় রাতে বাসায় ফিরতো না।

রাতে বারবিকিউ পার্টির নামে বন্ধুরা মিলে বিভিন্নস্থানে মর আড্ডায় মজে থাকতো। গুলশান ও উত্তরার দুটি তারকা হোটেলে দেখা যেতো তাকে। থার্টি ফাস্ট নাইটেও রাতভর হোটেলে কাটিয়েছে দিহান। এ নিয়ে প্রায়ই তার মা সানদা সরকারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হতো। ঘটনার দিন বাসা ফাঁকা থাকায় ‘ও ’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকা নুর আমিনকে

ডেকে নেয় তাদের লেক সার্কাসের বাসায়। দিহানের পিতা করোনা সংক্রণের পর থেকেই গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে থাকেন। সেখানে থাকেন দিহানের বড় ভাই। ঘটনার দিন দিহানের মেজো ভাই ছিলেন নারায়ণগঞ্জে কর্মস্থলে। নানা অসুস্থ থা’কায় তাকে দেখতে বগুড়া ছুটে যান দিহানের মা। ওই সুযোগেই আনুশকা নুর আমিনকে ডেকে নেয় দিহান।