Site icon Aparadh Bichitra

সোনারগাঁ এস আর স্কুল এন্ড কলেজ স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির আখড়া

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ “সর্ষের ভেতরে ভূত” সোনারগাঁ এস আর স্কুল এন্ড কলেজ স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়। বাণিজ্যিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে পরিচালিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এস আর স্কুল ও কলেজ সরকারি নির্দেশনা ভাঙ্গাটাই নিয়মে পরিণত করে ফেলেছে। ২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত সোনারগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যাপক শাহ আলী ও অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে ন্যায় বিচার না পাওয়ায় স্ব-ইচ্ছায় ৭জন অধ্যক্ষ শিক্ষক চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা যায়। সোনারগাঁও স্টার ফ্লাওয়ার এস আর স্কুল ও কলেজের বিরুদ্ধে সরকারী নিয়ম ভেঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের নির্ধারিত ফি’র চারগুণ বেশি টাকা আদায় ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ী বাড়ী গিয়ে পরিক্ষা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।চকটদারি বিজ্ঞপ্তি প্রচার প্রচারণায় করে শিক্ষার্থীদের অভিভাভকদেরকে বোকা বানানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগও রয়েছে স্কুল ও কলেজের পরিচালকদের বিরুদ্ধে।

সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পনগরীতে গড়ে উঠা সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এস আর হাই স্কুলের বিরুদ্ধে গত এসএসসি-২০২০ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে এ অনিয়ম হয়েছে বলে শতাধিক অভিযোগ। অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের ফি বাবদ বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১৯৭০টাকা এবং বানিজ্য ও মানবিক শাখার জন্য ১৮৫০টাকা করে ফরম ফিলাপের ফি সরকারী ভাবে নির্ধারণ করা হলেও মেঘনা শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত

সোনারগাঁও স্টার ফ্লাওয়ার এসআর হাই স্কুলে ফরম ফিলাপ বাবদ প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নেয়া হয়েছিল আট হাজার টাকা। যা সরকার নির্ধারিত ফি এর প্রায় চারগুণ। জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের অসাধু কর্মকর্তাকে মেনেজ করে ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধে দুদক ও সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অনিয়ম করে আসছে সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এস আর স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও বাড়ী বাড়ী গিয়ে পরিক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মেঘনা শিল্পাঞ্চলের লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন ও এস আর হাই স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। করোনা কালে তাদের এহেন স্বেচ্চাচারিতায় বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

জানাগেছে, বাংলাদেশে করোনা প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এরপর করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব না কমায় এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবং করোনার প্রাদূর্ভাব না কমা পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়।

সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুলের পরিচালক শাহ আলী ও মো. রফিকুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা সরকার নির্ধারিত ফি’র বেশী নেইনি। তবে, কোচিং ও উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র জানান, বাড়িতে গিয়ে পরিক্ষা নেয়া ও বকেয়া বেতন আদায় সরকারী ভাবে সর্ম্পূন নিষেধ। তারপর যদি কোন কেউ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে তার সেই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন,  বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কোন প্রকার অনিয়ম করলে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ব্যাপার। তবে যদি কোন শিক্ষকদের সঙ্গে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা কোন অনিয়ম করেছে কি না আমার জানা নেই। যদি কোন শিক্ষক আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুল ও কলেজের একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে গ্রæপিং রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শাহ আলী ও রফিকুল ইসলাম অনেক সময়ই বোর্ড মিটিংয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে অনেক শিক্ষকই চাকুরী ছেড়ে চলে গেছে। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১১জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।