শত কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সম্ভাবণা, পয়রা বন্দর চ্যানেল খননের বালুর বিকল্প ব্যবহারের দাবী

0
575

আনোয়ার হোসেন আনু,পটুয়াখালী উপকুলীয় প্রতিনিধিঃ ছোট্র একটি প্লাকার্ড। গুটি কয়েক মানুষের অংশ গ্রহন। প্লাকার্ডে উল্লেখ করা ছিল- ‘প্রতিবাদ, ইউস অব স্যান্ড।’ শুক্রবার রামনাবাদ চ্যানেল সংলগ্ন লালুয়া ইউনিয়নের বুরু জাইল্ল্যা ঘাট এলাকায় কুয়াকাটা ইনভেস্টর ফোরামের মুখপাত্র পর্যটন ব্যবসায়ী হাসনুল ইকবাল এর নেতৃত্বে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। একই দাবীতে হাসনুল ইকবাল গত ১ জানুয়ারী কুয়াকাটার হাসনুল ইকবাল পায়রা সমুদ্র বন্দর চেয়ারম্যানকে রেজিষ্ট্রি চিঠি পাঠিয়েছেন।ওই চিঠির বিষয় ছিল ‘শত শত কোটি টন বালুর বিকল্প ব্যবহার। স্থানীয়রা জানিয়েছে, পায়রা সমুদ্র বন্দরে দেশী বিদেশী জাহাজ প্রবেশের প্রধান রুট রামনাবাদ চ্যানেল। এ চ্যানেলটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪০ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, রামনাবাধঁ মোহনার খননের ফলে সৃষ্ট বালু নদীতেই ফেলা হচ্ছে। অথচ এই বালু ভাঙ্গন কবলিত চাড়িপাড়াসহ নিচু এলাকায় ভরাট করা যেত। কুয়াকাটা সৈকতসহ বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা দ্বীপ চর ভরাট করাও সম্ভব হতো।

এই অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ে নদীর বালু নদীতে ফেলে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হচ্ছে। এসব নানা অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার প্রতিবাদ জানিয়েছেন লালুয়ার চাড়িপাড়া বন্দরবাসীর জেলে গোষ্ঠী।জেলেদের অভিযোগ এ খনন কাজের জন্য তাদের মাছ শিকারে বিঘœ ঘটছে।

লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তপন বিশ^াস বলেন, রামনাবাদসহ বঙ্গোপসাগরের ৪০ কিলোমিটার খনন করার কথা। পায়রা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা জনসাধারনকে এ প্রকল্পের বিষয়ে অবহিত করছে না। অথচ তাদের মোহনা এলাকায় ভাঙ্গন রয়েছে। এসব ভাঙ্গন কবলিত নীচু এলাকা অথবা বঙ্গোপসাগরের দ্বীপে বালু ফেললে সরকার বড় ধরনের লাভবান হতো।

স্থানীয় জেলে আল আমিন বলেন, রামনাবাদ চ্যানেলে ড্রেজিং এর নির্দিস্ট কোন পরিকল্পনা ও সময় নেই। ড্রেজিং বিভাগ যখন ইচ্ছে তখন এসে খননের কারনে তাদের মাছ শিকারে ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, চ্যানেলটির লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়া বন্দর থেকে নদীতে বালু কেটে একটু দুরে নদীতেই ফেলছে। এই ড্রেজিংএ কোন পাইপ ব্যবহার করাও হয়নি।  ড্রেজিং এর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা দাবী করেছেন ¯্রােতে বালু দুরে নিয়ে যাবে।

কিন্তু বালু কোথায় এবং কত দুরে নিয়ে যেতে পারবে ¯্রােত। তিনি বলেন, এরাও এভাবেই বালু কেটে সরকারি টাকা জলে ফেলছে। মাওয়ায় যে সারা বছর কেবল বালি কাটা হয় তেমন ব্যবসাই এখানে শুরু হতে যাচ্ছে। অথচ বঙ্গোপসাগরের অনেক দ্বীপ রয়েছে যেগুলো ভরলে আর একটা কলাপাড়া হতে পারে।

তিনি বলেন, এই বালু ব্যবহার করে সারাবছর পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বড় আয় করতে পারে। তিনি এসব জানিয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে রেজিস্ট্রি আকারে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এর কোন সারা মেলেনি। যেকারনে ধীরে ধীরে তারা প্রতিবাদ বিস্তৃত করতে যাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুনকে একাধিকবার ফোন (০১৯১১৪৪৬৮৯৭) করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) এবং সহকারী কমিশনার (ভুমি) জগৎবন্ধু মন্ডল জানান, এমন ঘটনা তিনি অবিহত হয়েছেন। রামনাবাদ চ্যানেলে খননের ফলে সৃষ্ট নদীর বালু নদীতে ফেলছে কিনা এর সত্যতা যাচাইয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nineteen + fourteen =