খেলাপী ঋনের রেকর্ড জনতা ব্যাংকে

0
701

প্রধান প্রতিবেদক: অনিয়ম দুর্নীতির কারণে জনতা ব্যাংক লি: এর খেলাপী ঋনের পরিমান আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুতেই এর নাগাল ধরা যাচ্ছে না। বিশেষ করে হলমার্ক এর বিশাল টাকা জনতা ব্যাংক থেকে বের করে নেওয়ার পর রাষ্ট্রায়াত্ব এই ব্যাংকটি আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না। এর সাথে যোগ হয়েছে চামড়া খাতে অনাদায়ী ঋন। এসব অধিকাংশ ঋন কেলেঙ্কারির সাথে জনতার বর্তমান এমডি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তা সত্যেও তাকে পুণরায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চামড়া খাতে সবচেয়ে বেশি ঋন দিয়েছে জনতা ব্যাংক। ঋনের পরিমান প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। বৃহৎ এই ঋনের অধিকাংশই আদায় না হওয়ায় অবলোপন করতে হয়েছে। বর্তমানে ৭৮ টি গ্রাহকের কাছে রয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকার ঋন। অনিয়মের মাধ্যমে ২৪ টি গ্রাহকের ১৭৬ কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে। বেঙ্গল লেদার্সকে ৩০ কোটি টাকা ঋন দেয়া হয়েছে যা বর্তমানে সুদসহ ৪০ কোটি টাকা হয়েছে। ব্যাংক দায় এড়াতে দ্রæত লর্থ ঋন আদালতে মামলা ঠুকে দেয়। আবার দূর্নাম ঘুচাতে বেঙ্গল লেদারের বিশাল টাকা অবলোপন করে। অবলোপনের পরও আদায় হচ্ছে না।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে বিক্রমপুর ট্যানারি, স্বাধীন ট্যানারি, ইউসুফ ট্যানারি, এশিয়া ট্যানারি জামিলা ট্যানারি জনতা ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে আর ফেরত দেয় নাই। ব্যাংক উক্ত ঋন আদায় করতে পারছে না। নিয়ম অনুযায়ী ঋন দিলে কোন ঋনই অনাদায় থাকার কথার নয় বলে মন্তব্য করছেন জোষ্ঠ্য ব্যাংকাররা। জনতা ব্যাংক থেকে এসব গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋন প্রদানের সময় স্বচ্ছতা মানা হয় নাই।

নারায়নগঞ্জ ভিত্তিক এমআর গ্রæপের প্রতিষ্ঠান বিআর ম্পিনিং জনতা ব্যাংক থেকে ৩ শ কোটি টাকার ওপর ঋন নেয়। এই ঋন থেকে এক পর্যায় ৩৭৮ কোটি টাকা পূনর্গঠন করে জনতা ব্যাংক। পূনর্গঠনের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। রতনপুর গ্রæপ তিন ব্যাংক থেকে ঋন নেয়। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি ঋন দেয় জনতা ব্যাংক। ৩৮০ কোটি টাকাই ছিল জনতা ব্যাংকের। গ্রæপটি কিস্তির অর্ধেক টাকা পরিশোধ করলেও বাকি টাকা পরিশোধ করে নাই।

একটি সুত্রে জানা গেছে রতনপুর রি-রোলিং মিলের এমডি সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের পরিচালক মাকসুদুর রহমান। জনতা ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখা থেকে সুতা রফতানির ভ‚য়া কাগজপত্র তৈরি করে রানাকা সোহেল লি: ১১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে অনিয়মটি উৎঘাটিত হয়। বর্তমানে রানাকা সোহেল কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস, রানাকা ডেনিম টেক্সটাইল মিলসসহ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৩০ কোটি টাকার ওপরে খেলাপী ঋন রয়েছে। জনতার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে এই গ্রাহক জনতা ব্যাংক থেকে আরও ঋনসুবিধা নেওয়ার  চেষ্টা চলছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

এভাবে খেলাপী ঋনের রেকর্ড গড়ে জনতা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে জনতা ব্যাংকের খেলাপী ঋনের পরিমাণ ২১ হাজার ৪১১ কোটি টাকা।  ওই সালের জুন শেষে মোট বিতরণকৃত ঋনের ৪৩ শতাংশই খেলাপী হয়ে পড়ে।

এই সময় আবদুছ ছালাম আজাদ ব্যাংকটির এমডি ও সিইও ছেলেন। ব্যাংকটির অনিয়ম দুর্নীতি ও খেলাপির বিষয়ে আবদুছ ছালাম আজাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই। রেজিষ্টার্ড ডাকযোগে পত্র প্রেরন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই। এ ব্যপারে এ প্রতিবেদকের অনুসন্ধান চলছে। আগামি সংখ্যায় থাকছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen − 3 =