শিক্ষার্থীর উপর মাদ্রাসা শিক্ষকের বর্বরতা

0
955

 নিজস্ব প্রতিনিধি: মায়ের পিছু পিছু আসা এক শিশু শিক্ষার্থীকে ঘাড় ধরে নিয়ে যাচ্ছেন একজন শিক্ষক। তারপর কক্ষে নিয়ে বেত নির্মমভাবে প্রহার করে । সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এমন একটি ভিডিও।

৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে শিশু শিক্ষার্থীর ওপর মাদ্রাসাশিক্ষকের এই নির্যাতনের দৃশ্যটি চট্টগ্রাম হাটহাজারীর মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমি নামে একটি হাফেজি মাদ্রাসার।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমিক নামক এক মাদ্রাসার শিক্ষক ৮ বছর বয়সি এক শিশু ছাত্রের ওপর বর্বর নির্যাত চালিয়েছে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়া।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে ঘটা এই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে রাতেই এই শিক্ষককে আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন।

বুধবার (১০ মার্চ) সকালে ইউএনও মো. রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ইউএনও  মো. রুহুল আমিন জানান, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে শিশু মাদ্রাসা ছাত্রকে অমানবিকভাবে প্রহারের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে হাটহাজারি থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে তিনি উপস্থিত হন। নির্যাতনের শিকার বাচ্চাটির সঙ্গে কথা বলার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়।

ইউএনও আরও জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলাকালে নির্যাতনের শিকার শিশুটির অভিভাবকরা এসে কান্নাকাটি শুরু করেন এবং তারা ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন জানিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান না বলে জানান। বার বার বলা সত্ত্বেও তারা কিছুতেই মামলা করবেন না বলে জানান। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে ইউএনও এবং পুলিশকে অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। অভিভাবকরা রাত ২টা পর্যন্ত ইউএনও কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়। নির্যাতনের শিকার ইয়াছিন ফরহাদের মা পারভীন আকতার জানান,  মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগে অধ্যায়নরত সন্তানকে দেখতে গেলো ফিরে আসার সময় সন্তান তার পিছু নেয় বাড়ি চলে আসার জন্য। এই সময় মাদ্রাসার শিক্ষক ইয়াহিয়া তার সন্তানকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়।

মা পারভীন আকতার বলেন,  ‘এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এই জন্য আমরা বাবা মা দু’ইজনই মর্মাহত। তবে আমরা ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আমরা কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো না।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 2 =