২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানালো টিক্যাব

0
469

উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)। ৮ মে ২০২১ (শনিবার) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব) এর আহ্বায়ক মোঃ মুর্শিদুল হক বলেন, “দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এক হাজার ৪১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮.৭ শতাংশ বেশি হলেও বাংলাদেশের মত একটি জনবহুল ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা দেশের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ২০২১ সাল নাগাদ দেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের আয় ১০০ কোটি ডলার থেকে ৫০০ কোটি ডলারে উত্তীর্ণ করার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল সে লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু অর্জন সম্ভব হয়েছে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।”

তিনি বলেন, “সারাবিশ্ব প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। নতুন পরাশক্তি হিসেবে চীনের আবির্ভার হয়েছে প্রযুক্তিতে চীনের বৈপ্লবিক উত্থানের ফলে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশি ভিয়েতনামও এখন পোশাকখাতের সাথেসাথে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে ব্যাপক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ সরকারও চেষ্টা করছে দেশকে প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে নিতে। তবে এক্ষেত্রে সাফল্য পেতে আমাদেরকে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”  

বিজ্ঞপ্তিতে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব) এর পক্ষ থেকে আসন্ন বাজেটে বিবেচনার জন্য ৫ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়-
১) প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান। লার্নি এন্ড আর্নিং ডেভেলেপমেন্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে হাজারো তরুণ উপকৃত হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষিত তরুণদের জন্য আরো বড় পরিসরে প্রশিক্ষণের নতুন প্রকল্প নেওয়া জরুরি।


২) সারাদেশে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কগুলোকে দ্রুততার সাথে স্থাপন করে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে দেশি-বিদেশী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আকৃষ্ট করা এবং দেশে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩) ফ্রিল্যান্সিং কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন সমস্যা দূর করা এবং দেশে পেপাল চালু করা।

কেননা ইউরোপ-আমেরিকা-কানাডা-অস্ট্রেলিয়ার বায়াররা তাদের পেমেন্টের জন্য পেপাল ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের পেপাল একাউন্ট না থাকায় অন্যদেশের ফ্রিল্যান্সাররা বেশি সুবিধা পান।
৪) বর্তমানে দেশে অনলাইন কেনাকাটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এ খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরো জনবান্ধব ও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা প্রদান করা।

মেইড ইন বাংলাদেশ পণ্য সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইকমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনকে দেশের বাজারে নিয়ে আসা যায় কি তা ভেবে দেখা দরকার। অ্যামাজনের মাধ্যমে ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বৈশ্বিক বাজারে প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। বাংলাদেশও কিভাবে এর সুফল পেতে পারে তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।
৫) গত বছর থেকে করোনা মহামারিতে লকডাইনের ফলে সারাদেশে অনেকটাই স্থবিরতা নেমে আসে।

যদিও এক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিছুটা সুফল পাওয়া গিয়েছে। তাই সারাদেশে শক্তিশালী মোবাইল নেটওয়ার্ক ও সহজলভ্য ইন্টারনেট সেবা ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচারবিভাগ সহ দেশের সবখাতকে আরো প্রযুক্তিবান্ধব করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 2 =