দেখার কেউ নেই মহিপুরে পাউবো’র কয়েক কোটি টাকার জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ

0
664

আনোয়ার হোসেন আনু ঃ পটুয়াখালীর মহিপুরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র জমি দখল করে চলছে পাকা স্থাপনা নির্মানের হিরিক। পাউবো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একসনা লিজ নিয়ে এসব পাকা স্থাপণা করছেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। পাউবো একসনা বন্ধোবস্ত দেয়া বন্ধ থাকার কথা বললেও এসব দখলদারদের দেয়া হয়েছে গোপনে বন্ধোবস্ত। একসনা বন্ধোবস্ত গ্রহিতারা বন্ধোবস্তের শর্ত ভঙ্গ করে কোটি কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি দখলে নিয়ে গড়ে তুলছে বহুতল ভবনসহ পাকা স্থাপনা। দখলদাররা নানা অজুহাতে কোটি কোটি টাকার এসব সম্পত্তি দখলে নিলেও পাউবো কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারনে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় বে-দখল হয়ে যাচ্ছে এসব সরকারী সম্পত্তি। তবে পাউবো’র স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকটের কারনে সঠিকভাবে দেখভাল করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এসব দখলদারদের তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহিপুর থানা সদরের  প্রবেশ পথে শেখ রাসেল সেতু সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বাসাবাড়ি,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এমনই দুইজন দখলদার মোঃ জাকির হোসেন ও সাঈদ হোসেন । তারা ২০ শতাংশের দুইটি প্লট দখলে নিয়ে নির্মাণ করছে দুইটি পাকা ভবন। বর্তমানে ওই জমির মুল্য প্রায় তিন কোটি টাকা।

তারা দাবী করছেন পাউবো’র কাছ থেকে একসনা লিজ নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছে। এসব জমি দেখভালের দায়িত্বে থাকা পাউবো কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে পাকা ভবন করছেন এমন অভিযোগ করেছেন অনেকেই। শুধু জাকির হোসেন ও সাঈদ হোসেনই নয়,

প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি পাউবো’র জমি দখলে নিয়ে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। দখলে নিয়েছেন মহিপুর বাজারের মধ্যে থাকা কয়েকটি পুকুর। একসনা লীজের নামে এসব পুকুর ভরাট করে গড়ে তুলেছেন মার্কেট। প্রভাবশালীরা যা ভাড়া দিয়ে কামিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

অপরদিকে মহিপুর শেখ রাশেল সেতুর পুর্ব পাশে বেরীবাধঁ সংলগ্ন পাউবোর কয়েক একর নাল জমি দখলে নিয়ে প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন। যেখানে পাউবোর কয়েকটি পুরাতন পরিত্যাক্ত ভবনও রয়েছে। এসব পরিত্যাক্ত ভবনও দখল হয়ে গেছে।

মহিপুর বাজার এলাকায় এসব গুরুত্বপুর্ণ সরকারী সম্পত্তি প্রভাবশালীরা বন্ধোবস্তসহ নানা অজুহাতে দখলে নেয়। পাউবো কর্তৃপক্ষ এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে দখলমুক্ত করতে পারেনি এসব সম্পত্তি।

এসব সরল জমিতে দুই থেকে তিন বছরের ব্যবধানে অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। তবুও টনক নড়ছে না পাউবো কর্তৃপক্ষের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পাউবো’র বৈধ কাগজ-পত্র না থাকা স্বত্ত্বেও কিভাবে তারা এধরনের অবৈধ দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তারা দ্রুত দখলদারিত্ব মুক্ত করতে সংলিষ্ঠ দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

মহিপুর বাজারের নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, দখল কাজের শুরুতে সংশ্লিষ্ট  প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করা হয়। অথচ তারা এখন দেখেও না দেখার ভান করছে।

এবিষয়ে দখলদার মোঃ জাকির হোসেন ও সাঈদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পাউবো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা লিজ নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। তারা আরও বলেন ,পাউবোর জমিতে অনেকেই স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।

মহিপুৃর থানা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফজলু গাজী সাংবাদিকদের জানান, তার জানামতে দখল হওয়া এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের, তবে কিভাবে পাকা ভবন করছে তা তার জানা নেই।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হালিম সালেহী বলেন, আমি গত কয়েকদিন আগে কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়ে এখানে যোগদান করেছি।

তাই এবিষয়ে তিনি অবগত নয়। কে বা কারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে পাকা ভবন তুলছে, সে ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। তবে তিনি খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে  দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়র কথা জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × 1 =