সিএনএন বাংলাটিভির প্রতারনার শিকার সাংবাদিক আজিজুল

0
1726

স্টাফ রিপোর্টারঃ অনুমোদন বিহীন সিএনএন বাংলাটিভির এমডি শাহীন আল মামুনের ভয়ংকর প্রতারনার শিকার সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম। তাকে চাকুরী দেয়ার ফাঁদে ফেলে তার কাছ থেকে ১লাখ ৫৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া সহ তাকে মারধর করে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজিজুল এব্যাপারে মতিঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের মরহুম আব্দুল আহাদের ছেলে আজিজুল ইসলামকে সিএনএন বাংলাটিভির জন্য উক্ত উপজেলার প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে সিএনএন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিন আল মামুন ও নির্বাহী পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ। কিন্তু তার চাকুরী স্থায়ী করার জন্য ও ক্যামেরা প্রদানে কথা বলে উক্ত টিভির সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার জিএম শরীফের সহযোগিতায় ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় শাহীন আল মামুন। টাকা ফেরত চাইলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী-২০২১ তারিখ সন্ধ্যায় তাকে মারধর করে ১শ টাকার ব্ল্যাঙ্কস্টাম্পে স্বাক্ষর ও ভিডিও ফুটেজে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি রেখে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।


অভিযোগপত্রে আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি সিএনএন বাংলা টিভির সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার জিএম শরীফ মাধ্যমে জানতে পারি তাদের টিভিতে মাধবপুর উপজেলায় একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। অতপর আমি জিএম শরীফের সাথে আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে গত ১১মে-২০২০ তারিখে তাদের অফিসে এসে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিন আল মামুন ও নির্বাহী পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন মাসুদের সাথে পরিচিত হয়ে তাদের কাছে ১৫হাজার টাকা জামানত দিয়ে নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও মাইক্রোফোন (বোম) গ্রহন করে এলাকায় গিয়ে রিপোর্টিংয়ের কাজ শুরু করি।

কিন্তু আমার ক্যামেরা না থাকায় পরিপূর্ন ভাবে কাজ করতে অসুবিধা হয় বিধায় ক্যামেরার বিষয়ে আমি শাহিন আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছে ক্যামেরা বাবদ ২লাখ ৫০হাজার টাকা দাবী করেন। আমি এতো টাকা দেয়ার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানালে তিনি একটি সেকেন্ডহ্যান্ড ক্যামেরা ১লাখ ৫০ হাজার টাকায় ম্যানেজ করে দিতে পারবেন বলে আমাকে জানালে আমি রাজি হয়ে তার কাছে ১ম দফায় ৮৪ হাজার, ২য় দফায় ৩৮ হাজার ৫শ টাকা এবং পরবর্তীতে জিএম শরীফের কাছে ২৭ হাজার ৫শ টাকা জমা দেই।

কিন্তু ক্যামেরা চাইলে তাহার আমাকে বারবার অফিসে ডেকে আনেন, কিন্তু ক্যামেরা না দিয়ে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। তাহারা অফিসের মালিক হওয়াতে তাদেরকে চাপপ্রয়োগ করতেও পারিনা। কিন্তু বাড়ী থেকে জিএম শরীফেকে চাপপ্রয়োগ করি। ফলে শাহীন আল মামুন ও জিএম শরীফ আমাকে ক্যামেরা দেয়ার কথা বলে গত ১৫ফেব্রুয়ারী-২০২১ তারিখে অফিসে ডেকে এনে শাহীন আল মামুনের কক্ষে ৬ ঘন্টা বসিয়ে রাখে।

পরে শাহিন আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ, জিএম শরীফ, রিপোর্টার সোহাগ ও ক্যামেরাম্যান আব্দুল কাদের সহ আরো ৪/৫ জন লোক যাদেরকে দেখলে চিনতে পারবো সম্মিলিতভাবে আমাকে শাররিক ও মানসিকভাবে টর্চার শুরু করে। শাহীন আল মামুনের নির্দেশে সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ, জিএম শরীফ, রিপোর্টার সোহাগ আমাকে কিলঘুষি, চড়থাপ্পর মারতে থাকে, ক্যামেরাম্যান আব্দুল কাদের সহ অজ্ঞাত ১জন আমার মানিব্যাগ(৩৫ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ), আইডি কার্ড, মোবাইল ফোন ও গলায় থাকা ১ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।

অতপর শাহীন আল মামুনের হুকুমে সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ তার কক্ষ থেকে একটি হকিস্টিক এনে আমাকে মারধর করার প্রস্তুত হয়ে ব্ল্যাঙ্কস্টাম্পে স্বাক্ষর নেয় এবং ভিডিও ধারন করে রাখে। এসময় শাহীন আল মামুন ও সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ আমাকে ভিডিওতে স্বীকার করতে বলেন, যে তাদের সাথে আমার কোন লেনদেন নেই। আমি জীবন বাচাতে তাদের কথামতো ব্ল্যাঙ্কস্টাম্পে স্বাক্ষর দেয়া সহ ভিডিওতে স্বীকারোক্তি দেই। সবশেষে সাখাওয়াত হোসেন মাসুদ স্বাক্ষরিত একটি অব্যাহতি পত্র আমার হাতে দিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং শাহীন আল মামুন আমাকে এই বলে হুমকি দেয় যে, এই বিষয় নিয়ে আমি যদি কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা নেই,

বা কারোর কাছে অভিযোগ করি তাহলে তারা আমার নামে বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা দিবে, ভিডিও ফুটেজগুলো নেটে ছেড়ে দিবে, আমাকে আমার বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে আসবে। জীবনে জেল থেকে বের হতে পারবো না, ইত্যাদি। কিন্তু ১৭ফেব্রুয়ারী-২০২১ তারিখে আমাকে দেয়া অব্যাহতি পত্রের অনুরূপ কপি ও ব্ল্যাঙ্কস্টাম্পটি হাতে লিখিত অবস্থায় প্রিয় হরষপুর, সত্যের সকাল, এমডি সাদ্দাম, জাহিদুল ইসলাম নামীয় এরূপ ৮/১০টি ফেইসবুক একাউন্টে তা পোষ্ট দিয়ে আমাকে আর্থিক, মানসিক ও সামজিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এই চক্রটি। আমি এই মুহুর্তে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।


এই ব্যাপারে সিএনএন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিন আল মামুন বলেন, আজিজুল ইসলাম আমাদের প্রতিনিধি ছিলো, তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। কারন সে মাদক সহ ধরা পড়েছে, এবং হুন্ডি ব্যবসা করে। আমরা তাকে বাদ দিয়েছি বিধায় তার কাছে খারাপ হয়েগেছি। সে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one + 3 =