ইমদাদুল হক, আশুলিয়া থেকে: ঢাকার সাভারস্থ আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) দ্বিতীয় পর্যায়ের সাতটি প্রকল্পের ভিতরে একটি প্রকল্পে সরকারি বিধি না মেনে কাজ করতে দেখা গেছে। রবিবার (২৩ মে) দুপুরে সরেজমিন পাথালিয়ার গকুলনগর থেকে দাস পাড়া মেইন রাস্তা হতে ওয়ালিয়া মোহনপুর সড়ক পর্যন্ত সরকারি রাস্তা মাটি দ্বারা উন্নয়ন কাজ দেখতে গেলে একজন শ্রমিকও পাওয়া যায়নি। ভেকু (খনন যন্ত্র) ব্যবহার করে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, নিয়ম অনুযায়ী ইজিপিপি প্রকল্পের কাজগুলো স্থানীয় অতিদরিদ্র শ্রেণির মানুষদেরকে দিয়ে কোদাল ব্যবহার করে কাজ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু উপরোক্ত রাস্তাটিতে মাটি ভরাট কাজে এই বিধি মানা হচ্ছে না। মেইন পিচের রাস্তা হতে অনেক দূর রাস্তা ওয়ালিয়া মোহনপুর সড়কের দিকে এগিয়ে গেছে। প্রায় অর্ধেকেরও বেশী কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার দুইপাশ থেকে মাটি কাটার চিহ্ন দেখে বুঝা যায় এই সম্পন্ন হওয়া অংশটুকুর কাজ শ্রমিকরা কোদাল ব্যবহার করেই করেছে। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা যা এই প্রতিবেদন লেখাকালীনও ভেকু দিয়ে মাটি খোড়া হচ্ছিল।
যে পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে সেখানে কতজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেছেন ? তথ্য অনুযায়ী এই প্রকল্পে প্রতিদিন ১৪৯ জন শ্রমিক দৈনিক ২০০ টাকা হারে মজুরি নিয়ে মোট ৪০ দিন কাজ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করবেন।
কিন্তু দেখা গেলো ভেকু চালক একাই মাটি কেটে তা রাস্তার উপরে ফেলছিলেন।
এব্যাপারে যেস্থান দিয়ে এই রাস্তার শুরু, সেখানের স্থানীয় একজন দোকানদার জানান, রাস্তার অর্ধেকের বেশী কাজই শ্রমিক দিয়ে করানো হয়েছে। কোনোদিন ২০ জন, ২২ জন আবার কাজের চাপ বাড়লে ৩০ জনও কাজ করেছে। কিন্তু প্রতিদিন ১৪৯ জন লোক কাজ করতে তিনি দেখেন নাই বলে জানান।
এদিকে যেস্থানে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিলো, সেখানের স্থানীয় এক বাড়ির মালিকের সাথে রাস্তার কাজের ব্যাপারে কথা হয়। ভিডিও বক্তব্যে তিনিও জানান, তার বাড়ির সামনে পর্যন্ত এই প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক রাস্তার কাজ শ্রমিক দিয়ে করানো হয়েছে।
কিন্তু তার বাড়ির সামনের এই অংশটুকু জটিল এবং বর্ষা এলে এই এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে বিধায় এই অংশ থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্যই মূলত ভেকু ব্যবহার। তবে প্রতিদিন মোট কতজন শ্রমিক কাজ করেছে সেই সংখ্যা সম্পর্কে তিনি কিছু জানান নাই।
এব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে পাথালিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লেহাজউদ্দিন বলেন, রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। আর ১৪৯ জন শ্রমিক না এক হাজার শ্রমিক কাজ করছে সেব্যাপারে আমি বলতে পারবো না। পাথালিয়ার চেয়ারম্যান নিজে কাজ করাচ্ছেন, তিনিই বলতে পারবেন।
মুঠোফোনে পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানকে কল করলেও তিনি কল রিসিভ না করায় এবিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যপারে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ একরামুল হক এর মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ব্যস্ত থাকায় তারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।