নিশাত এর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্বসাতের অভিযোগ

0
1290

স্টাফ রিপোর্টার: শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড এর এমডি মোবারক হোসেন নিশাত এর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্বসাতের চাঞ্চল্যকর এক প্রতারনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে মোঃ মোবারক হোসেন বিডি সোর্স ট্রেক নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বেতন ভুক্ত একজন কর্মচারী ছিলেন মাত্র। কর্মচারী থাকা অবস্থায় নানা অপকর্মে সে জড়িত হয়ে পড়ে। বিডি সোর্স ট্রেক বিডি এর ম্যানেজিং পার্টনার কর্নেল আইনুল আজিম (অব:) একজন স্বনামধন্য ব্যাক্তি। দীর্ঘদিন সেনাবাহিনীতে চাকুরি করার কারনে সততা ন্যায় নিষ্ঠার সাথে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। কোন প্রকার চলছাতুরী, দুর্নীতির চিন্তাও তিনি কখনো করেননী। এই ন্যায় নিষ্ঠতার, সততার সুযোগে ধুরন্ধর কর্মচারী মোবারক হোসেন নিশাত নানা অপকর্ম করে প্রচুর অর্থ লোপাট করে।

কর্নেল আইনুল আজিম (অব:) এর সরলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ধোকা দিয়ে বোকা বানাতে থাকেন সুকৌশলে। হাতিয়ে নিতে থাকেন কোটি কোটি টাকা। ধুরন্ধর কর্মচারী নিশাত প্রতিষ্ঠানের কর্নধার আইনুল আজিম এর সরলতাকে পুজি করে সোর্স ট্রেক বিডিতে যোগদান করার পরই তার স্ত্রী, ভাই, ভাগিনা সহ আরো ২/৩ জনকে যোগদান করায়। নিশাতের এই অপকৌশল সহজ সরল ন্যায় পরায়ন সেনা কর্মকর্তা (অব:) কর্নেল আইনুল আজিম মোটেও বুঝতে সক্ষম হননি। 

নিশাতকে বিশ্বস্ত মনে করার ফলে কর্মচারী নিশাত এর পছন্দ মাপিক সোর্স ট্রেক লিমিটেড এর কার্যাদেশ ও মুল্য নির্ধারন,  উৎপাদন, ও রফতানির কার্যক্রম চলতো। ২০১৮ সালের জানুয়ারীতে ধুরন্ধর মোবারক হোসেনের জোরালো পরামর্শে ও অনুরোধের ভিত্তিতে আশুলিয়াতে অবস্থিত শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড নামক এক ফ্যাক্টরীতে সোর্স ট্রেক বিডি এর যাবতীয় পোষাক রপ্তানির সকল উৎপাদনের কার্যাদেশ তার মাধ্যমে দেয়া শুরু করে। প্রতারকের শিরোমনি নিশাত তার নিজের প্রতিষ্ঠান শাওন গার্মেন্টস এর এমডি পরিচয় গোপন করে সোর্স ট্রেক বিডির মালিক হিসাবে জনৈক প্রতারক নাসিরকে মালিক সাজিয়ে পরিচয় করিয়ে দেয় কর্নেল আইনুল আজিম এর সাথে।

বিভিন্ন মিটিংয়ে, সিন্ধান্তে, আলোচনায়  সোর্স ট্রেক বিডি’র কর্নধার কর্নেল (অব:) আইনুল আজিম এর সাথে নিশাত গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড এর মালিক হিসাবে নাসির নামক ব্যাক্তির উপস্থিতি থাকতো। একই সাথে সোর্স ট্রেক লিমিটেড এর কর্মচারি হিসাবে পরিচয় গোপন করে শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড এর এমডি মোবারক হোসেন নিশাত কাজ বাগিয়ে নেয়ার কাজ করতো। প্রকৃতপক্ষে নাসির ছিল মোবারক হোসেন শাওন এর নিয়েগকৃত একজন কর্মচারী।

২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কর্নেল (অব:)  আইনুল আজিম জানতে পারেন যে ২০১৮ সালের জানুয়ারী হতে শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড এর প্রকৃত মালিক মোবারক হোসেন নিশাত ও তার স্ত্রী রহিমা বেগম। শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লিমিটেড এর মালিকদের সাথে বিভিন্ন মিটিংয়ে মোবারক অত্যান্ত চাতুরতার সাথে কর্মচারী হিসাবে অভিনয় করতো। এদিকে ২০১৮ সালের জানুয়ারী  থেকে জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত এভাবে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায় ৩০ মে ২০২০ সালে মোবারককে অফিসে ডেকে তার এই জালিয়াতি এবং চাকুরির শর্তাবলি লঙ্গনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে (অব:) কর্নেল আইনুল আজিম এর সাথে দূর্ব্যবহার করে এবং অফিস ত্যাগ করে। সে বিভিন্ন লোক মারফতে হুমকি দিতে থাকে যে এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করলে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা সহ নানা প্রকার মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো, প্রাননাশ সহ যে কোন ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে।

এর সুত্র ধরে ব্যবসায়িক প্রয়োজনীয় দলিল পত্র নানা ডকুমেন্টস, নথিপত্র বুঝিয়ে না দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে ২০২০ সালের জুন মাস থেকে শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লি: কে সকল অর্ডার বন্ধ করে দেয়া হয়। উল্লেখ্য শাওন গার্মেন্টস প্রিন্টিং লি:- সোর্স ট্রেক এর কাছ থেকে উক্ত সময় কালে প্রায় ২০ কোটি টাকার উদ্ধে কাজ করে।

সোর্স ট্রেক  এর সুনাম নষ্ট করার অভিপ্রায়ে ইচ্চাকৃত কাজের মান খারাপ করা, শিপমেন্ট বিলম্ব করা, ক্রেতাদের কাছে সুনাম নষ্ট করা ছিল তার নৈমিত্তিক ব্যাপার। শাওন গার্মেন্টস এর এই প্রকারের কার্যকলাপের জন্য ক্রেতার কাছে প্রায় ৩/৪ কোটি টাকা আর্থিক জরিমানা গুনতে হয়েছে  সোর্স ট্রেক লিমিটেড এর। আর  এ সকল কর্মকান্ড হযেছে মোবারক হোসেন নিশাত এর একদিকে কর্মচারির অভিনয় অন্যদিকে তার নিজস্ব মালিকানা প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা রক্ষা করে।

পরবর্তিতে মোবারেকের অপকর্মের ও প্রতারনার বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে ২২৬/২০ নং একটি সি আর মামলা করে। এছাড়াও মোবারকের বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে । সন্ধার পর তার বাসায় নাকি বিশেষ আসর বসানো হয়। উক্ত আসরে নামি দামি ব্যাক্তি, কর্মকর্তাদের আসর হয়। নানা রকম মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও নাকি থাকে । বিদেশী মদ ও নানা রকম মডেলদের উপস্তিতি  থাকার কথাও বলেছেন অনেকে। 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − ten =