গ্রেপ্তারকৃত ব্যাক্তির সাথে পুলিশের আচরন নিয়ে এ পর্যন্ত অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় রিম্যান্ডের নামে আসামির ওপর অমানবিক নির্যাতন কতটুকু আইনসিদ্ধ তা নিয়ে মন্ত্রণালয়, আদালত কেউ স্বক্রিয়ভাবে কিছু করছেন বা ভাবছেন বলে দৃশ্যমান নয়। অথচ যুগের পর যুগ থানায় আসামির ওপর বর্বর আচরন করে যাচ্ছে পুলিশ। অপরাধ না করেও অনেকে রিম্যান্ডে নির্যাতনের শিকার। বিশেষ করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য পুলিশ যেভাবে ভয় ভীতি ও শারীরিক নির্যাতন করে তা অতংকজনক। অভিযোগ রয়েছে ঘুষের জন্য থানায় আসামির ওপর পুলিশ এধরনের জুলুম নির্যাতন করে। পুলিশের সাথে টাকার বিনিময়ে চুক্তি হলে রিম্যান্ডের নামে জুলুম নির্যাতন থেকে বাঁচার উপায় আছে বলে অসংখ্য উদাহারণ রয়েছে। আটক কোন ব্যক্তি আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করার সুযোগ পাবে যা সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় রিম্যান্ডের আগে ও পরে আটক ব্যক্তিকে আইনজীবীর সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। বিচারকের কাছে দোষ শিকার করানোর জন্য পুলিশ আগে থেকেই আসামিকে ভয়ভীতি দেখায় ও মারধর করে। মারধরের সময় আসামিকে পুলিশ বলে যে, আদালতে বিচারকের কাছে দোষ শিকার না করলে আরও একাধিক মামলায় নাম অন্তর্ভূক্ত করা হবে ও আরও কঠিন মার দেওয়া হবে।
নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকে দোষ না করেও আদালতে শিকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিচ্ছে। এধরনের জুলুম নির্যাতন ও স্বীকারোক্তি আদায় পদ্মতি সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী ও মৌলিক অধিকারের লংঘন। ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট কোন আসামিকে রিম্যান্ডে নিয়ে কিভাবে জিজ্ঞাসা করতে হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিলেন এক রায়ে। সে রায় ২০১৬ সালের ২৫ মে বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রায়ে বলা আছে আসামিকে কাঁচের একটি দেওয়াল ঘেরা কামরায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আসামির আইনজীবী উপস্থিত থাকবেন এমনকি স্বজনরাও থাকবেন। বাস্তবে এভাবে জিজ্ঞাসাবাদ টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত কোথাও নেই। আসমির সাথে বর্বর আচরন করার জন্য পুলিশকে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়ে গেছে পুলিশ।
অমানিবক নির্যাতন করে আদালতে নিয়ে বিচারকের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিতে বাধ্য করছে। রিম্যান্ডের নামে করা হচ্ছে শারীরিক নির্যাতন। পুলিশ হেফাজতে এপর্যন্ত কত লোক যে মারা গেছে তার সঠিক হিসাব সরকারের কোন বিভাগের কাছে নেই। এ অবস্থার কবে অবসান হবে তা কারও জানা নেই।