তাহিরপুরের ২ সীমান্তে চলছে জমজমাট চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য-দেখার কেউ নেই

0
435

মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা ভারত থেকে ওপেন পাচাঁর করা হচ্ছে কয়লা, চাল, বরশির ছিপ, কাঠ, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, তক্ষক ও অস্ত্র। পাচাঁরকৃত এসব অবৈধ মালামাল থেকে বিজিবি, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে প্রতিদিন চাঁদা উত্তোলন করছে সোর্সরা। আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে দুই সীমান্তে সোর্স ও চোরাকারবারীরা দাপটের সাথে তাদের চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গত রবিবার সন্ধ্যায় বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা গ্রামের চোরাকারবারী রফিকুল ইসলামের বসতবাড়িতে সোর্স লেংড়া বাবুল, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ইয়াবা কালামগং তক্ষক ও ইয়াবা বিক্রি করার প্রস্তুতি নেয়। এই খবর পেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জয়নাল আবেদীন অভিযান চালায়। এসময় সুকৌশলে সোর্স ইয়াবা কালাম ও জিয়াউর রহমান জিয়া তক্ষক ও ইয়াবা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সোর্স লেংড়া বাবুল ও তার ভাই জামালসহ তাদের সহযোগী রফিকুল ইসলাম ও জয়নাল মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু এই বালিয়াঘাট সীমান্তের চুনাপাথর খনি প্রকল্প, লাকমা ও লালঘাটসহ পাশের চারাগাঁও সীমান্তের এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা তেতুল গাছ, ১১৯৬পিলার, লালঘাট, জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে সোর্স ইয়াবা কালাম, জিয়াউর রহমান জিয়া, রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, লেংড়া জামাল বিশিষ্ট চোরাকারবারী খোকন মিয়া, শহিদুল্লাহ, বাবুল মিয়া, জসিম মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, করিম মিয়া, হারুন মিয়া, মানিক মিয়া, ইসব আলী, নুর আলী, নেকবর আলী, বজর আলীগং সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন ভারত থেকে ওপেন কয়লা, পাথর, চাল, বরশির ছিপ, কাঠ, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, তক্ষক ও অস্ত্র পাঁচার করছে।

পাঁচারকৃত অবৈধ মালামালের মধ্যে কয়লা ও মাদকদ্রব্য স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলা সদরের মনতলা নদীর তীবে অবস্থিত কয়লা ব্যবসায়ী আজিজ মিয়া ও সাজু মিয়ার কাছে নিয়ে বিক্রি করে চোরাচাকারবারী খোকন মিয়া, শহিদুল্লাহ, একদিল মিয়া ও মানিক মিয়া।

আর চারাগাঁও এলসি পয়েন্টের অবস্থিত মুদি দোকানদার আনোয়ার মিয়া ভারত থেকে চাল পাচাঁর করে তার দোকানে মজুত করে খুছরা বিক্রি করছে। এর বিনিময়ে দেশীয় ঔষধ, মাছ, মাংস, শাক-সবজি ভারতে পাঠায়। কিন্তু এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়না বিজিবি।


এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী শফিকুল ইসলাম ভৈবর বলেন- চারাগাঁও ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এফএস নাজমুল, তোতলা আজাদ মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক ও বালিয়াঘাট ক্যাম্পের সোর্স ইয়াবা কালামের নেতৃত্বে চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া, শহিদুল্লা, মানিক মিয়া, কদ্দুস মিয়াগং একদিন পরপর ৩ থেকে ৫টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে ৫০ থেকে ৬০মে.টন কয়লা ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাঁচার করে কমলাকান্দার মনতলা নিয়ে বিক্রি করে।

এক নৌকা (১২-১৫মে.টন) অবৈধ কয়লার পাচাঁরের জন্য চারাগাঁও ক্যাম্পের এফএস নাজমুল ৪হাজার টাকা, তোতলা আজাদ ১৫শ টাকা, আব্দুর রাজ্জাক ১৫শ টাকা চাঁদা নেয়। আর এই চাঁদা উত্তোলন করে চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া, তার পার্টনার শহিদুল্লা ও ইয়াবা কালাম মিয়া।

সাংবাদিকদের নামে তোতলা আজাদ মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাকের চাঁদাবাজি নিয়ে আমার দ্বন্দ হওয়ার পর থেকে আমি এসব অবৈধ কাজ বাদ দিয়ে দিয়েছি। লালঘাট গ্রামের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বলেন- সোর্স শফিকুল ও রমজান মিয়া পুলিশ, বিজিবি ও সাংবাদিকদের নামে টাকা নিয়ে তাদেরকে সঠিক ভাবে দেয়না।

এজন্য আমি ও আমার ব্যবসায়ীক পার্টনার শহিদুল্লাহ, ইয়াবা কালাম মিলে তোতলা আজাদ ও রাজ্জাক ভাইসহ বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবিসহ সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করছি। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক তসলিম এসহান সাংবাদিকদের বলেন- চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + eight =