রাহাত মাসুমঃ ২০১৩ সালে ৫৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গড়ে ওঠা গাজীপুর সিটি করর্পোরেশনের ‘সবচেয়ে অপরাধ প্রবণ’ এলাকা টঙ্গীর ১৫টি ওয়ার্ড। এই এলাকায় কতটি কিশোর গ্যাং বা অপরাধী চক্র আছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই প্রশাসনের কাছে। একসঙ্গে আড্ডা এরপর রাস্তায় নারী উত্ত্যক্ত, মাদক সেবন ও মানুষকে হয়রানি। একপর্যায়ে লোকজনকে মারধর, চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, এমনকি খুনোখুনি।
বর্তমান সময়ে উঠতি বয়সী কিশোরদের মধ্যে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রæপের সঙ্গে অন্য গ্রæপের মারামারি ও উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে খুনের শিকাড় হয়েছে অনেকে।
টঙ্গীতে এভাবে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে একশ্রেণির কিশোর ও তরুণ। আর তাদের পেছনে আছেন এলাকার ‘বড় ভাইয়েরা’। আর এসব গ্রæপের সদস্যরা টেলিভিশনে দেখানো বিভিন্ন সিরিয়াল ফলো করে সন্ত্রাসী কর্মকাÐ চালায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের মোড়ে বা অলি-গলির চা দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য ইভটিজিং এবং বীরদর্পে সিগারেট ফুঁকালেও কেউ কিছু বলার সাহস করে না কিশোরদের সংগঠিত গ্যাং গ্রæপকে। এরা বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী বা ছিন্নমূল হওয়া কিশোর। এদের বয়স ১৩ থেকে ১৯-এর মধ্যে।
টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকার সক্রীয় মাদক ব্যাবসায়ী, কিশোর গ্যাং ও প্রশ্রয়দাতাঃ
স্থানীয় প্রশাসনের মতে, টঙ্গীর আমতলী, কেরানীরটেক এলাকায় এ আর আলাল, রহিম, উজ্জ্বল,আফজাল, রনি ওরফে বাবা টাওয়ার রনি, আক্তার, মিজানুর রহমান মিঠু, রহিমা ও রানি। এদের প্রত্যেকের রয়েছে ২৫-৩০ জনের অলাদা আলাদা কিশোর গ্যাং বাহিনী। গত ২০২১ইং সালের ৮ই রমজান ভাওয়াল বীর শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাষ্টার এমপি হত্যা মামলার রাজ সাক্ষী শহীদ সুমন আহমেদ মজুমদার সংসদ দখল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে সুমন আহমেদ মজুমদারের পরিবারের উপর হামলা চালায় কাজী রফিক সিন্ডিকেট।
এসময় তাঁরা বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও বেশ কয়েকটি কক্টেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে চারপাশে আতংক সৃষ্টি করে। ছুরি, চাপাতি, রামদা, লোহার পাইপ দিয়ে অতর্কিতভাবে সুমন আহমেদ মজুমদারের পরিবারকে নিশ্চিন্ন করার উদ্দেশ্যে হামলা চালালে সুমন আহমেদ মজুমদারের ছোট ভাই বিপ্লব আহমেদ মজুমদার ও ছাদ্দাম আহমেদ মজুমদারকে গুরতর ভাবে রক্তাক্ত যখন করেন।
পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উক্ত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আহতদের প্রথমে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রæত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন ও বিপ্লব মজুমদারকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এছাড়া আলালের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। রহিমের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদকের মামলা। কিছুদিন আগে ৩০০ পিছ ফেন্সিডিলসহ রহিমের এক সহযোগী গ্রেফতার হয়। এই মামলায় রহিম দীর্ঘদিন জেল খাটার পরে জামিনে এসে পুনরায় এলাকায় মাদক কারবার শুরু করে।
গত ৯ই ডিসেম্বর ২০১৯ইং তারিখে গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশ ৫০০০ পিচ ইয়াবাসহ উজ্জ্বল ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠায়। দীর্ঘদিন জেল খাটার পর জামিনে এসে পুনরায় এলাকায় মাদকের কারবার শুরু করে উজ্জ্বল। উজ্জলের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ও মারামারিসহ একাধিক মামলা।
স্থানীয় সুত্র জানায়, এলাকার মরহুম নুরু পুলিশের ছেলে উজ্জলের ইয়াবা কারবারের টাকার লেনদেন ও হিসাব নিকাশ পরিচালনা করে উজ্জলের ছোট ভাই আফজাল।
সুত্র আরো জানায়, উজ্জলের গ্রামের বাড়ি সিলেটে। উজ্জ্বল টঙ্গীর মধুমিতা, কালীগঞ্জ, কোনাবাড়ী, বিসিক, ফকির মার্কেট ও উত্তরার জয়নাল মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক কারবার করে সিলেটে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছে। কিছুদিন আগে উজ্জলের সহযোগী নিজ বাড়ির দারোয়ান ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। উজ্জ্বল জেল হাজত থেকে জামিনে বের হওয়ার কিছুদিন পর ১৩০০০ পিছ ইয়াবাসহ উজ্জলের এক সহযোগী ও ভাতিজী জামাতাকে বাসন থানা এলাকায় র্যাব সদস্যরা গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এঘটনার পর থেকে উজ্জ্বল আড়ালে থেকে তার নিয়ন্ত্রিত কিশোর গ্যাং পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে জনৈক আ:রব অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন, মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে রনি দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় মাদক কারবার করে আসছে। তার মাদক কারবারে পরিচালনায় গড়ে তুলেছে সক্রিয় কিশোর গ্যাং বাহিনী। মাদকের টাকায় গড়ে তুলেছে ৬তলা আলিসান ভবন, যা এলাকায় বাবা টাওয়ার নামে পরিচিত।
ডতনি আরো জানায়, রহিমা ও রানী এলাকার সক্রিয় নাম করা মাদক কারবারী। এদের দুইজনকে সহযোগীতা করতে আক্তারের রয়েছে ২৫-৩০ জনের সক্রিয় কিশোর গ্যাং বাহিনী। এছাড়া মিজানুর রহমান মিঠুর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অপহরণ ও মারামারিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
বউবাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুছ মিয়া অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন, এ আর আলাল, রহিম, উজ্জ্বল, মিজানুর রহমান মিঠু, আফজাল, রনি ওরফে বাবা টাওয়ার রনি, আক্তার, রহিমা ও রানি’র বিভিন্ন অপরাধ মুলক কাজের প্রশ্রয়দাতা টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা দৈনিক ইত্তেফাকের টঙ্গী প্রতিনিধি কাজী রফিক।
টঙ্গীর ‘সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ’ এলাকা বউবাজার, পূর্ব আরিচপুর ও নদীবন্দর। এখানে তুরাগ নদের পাশ ঘেঁষে হাঁটার পথ, তুরাগবাজার, ঢাকা ডাইংয়ের পেছনের দিকসহ আশপাশের এলাকায় সারাক্ষণই থাকে কিশোরদের আড্ডা। অন্তত ১৫টি দল এখানে গড়ে উঠেছে। একেকটি দলে ১০ থেকে ১২ জন করে সদস্য এদের মাদক ব্যবসা শেল্টাল দিয়ে থাকেন কাজী রফিক।
তাছাড়া কিছু দিন আগে কাজী রফিকের ভুঁইফোড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডি প্রভাতের রির্পোটার মাদক ব্যবসায়ী রকি গাজীপুর মহানগন গোয়েন্দা কাছে আটক হন ১০১ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ গ্রেফতার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিত করেন এসব দলের বেশির ভাগেরই নেতৃত্বে আছেন টঙ্গীর পাগাড় এলাকার মো. পারভেজ ও মনির ওরফে বøাকেট মনির। পাগাড় আলেরটেকের মিলন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মনির।
পাগাড় এলাকার মিলন হত্যার ঘটনায় রয়েছে ইত্তেফাক টঙ্গী প্রতিনিধি কাজী রফিকের পরিকল্পনা। রফিক অধরা থাকলে পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে কাজী রফিক অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন,আমি এসবের সাথে আমি জরিত না কিছু লোক আমার নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালাছে।