স্বামীর প্রতারণার জালে নওমুসলিম নারী, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

0
411


চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা লাকী বেগম। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হয়েও মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রেমের টানে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। সমাজ ও পরিবারের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে স্বামী ফরহাদ হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে লাকী বেগম হিসেবে আত্ম প্রকাশ করেন তিনি।২০০৪ সালে বিবাহের পর তাদের কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করে এক ছেলে ও এক মেয়ে।বিবাহের ১০ বছর পর ২০১৪ সালের আগষ্টে রেজিষ্ট্রীযুক্ত কাবিরনামা মূলে পাঁচ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিবাহ রেজিষ্ট্রী করেন তারা। লাকী বেগম জানান, নানা ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে ধমান্তরিত করে তাকে বিয়ে করেন ফরহাদ হোসেন।আব্দুল মন্নানের ছেলে ফরহাদের বাড়ী চাঁদপুরের সোনাপুর গ্রামে হলেও চট্টগ্রামে থাকেন তিনি।আর এসুবাধেই জানাশোনা হয় তাদের। বিয়ের এক যুগের বেশি সময় পার হলেও লাকীকে ঘরে তুলতে নারাজ ছিল ফরহাদ।নানা অজুহাত দেখিয়ে ভাড়া বাসাতেই কাটে সংসার জীবন।

বিয়ের পর দাম্পত্য জীবন অনেক সুখের হলেও আস্তে আস্তে খুলতে থাকে ফরহাদের নারী লোভী মুখোশ।অনুমতি ছাড়া স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে লাকী।বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পর পারিবারিক কলহের জেরে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন তার নিত্য সঙ্গী হয়ে ওঠে। লাকী অভিযোগ করে বলেন, ফরহাদের কাছে স্ত্রীর পূর্ণ মর্যাদা চাইলেই সে উল্টো যৌতুকের নামে ২ লাখ টাকা দাবি করতো।

ধর্মান্তরিত হওয়ায় পরিবারের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার কোন সুযোগই ছিল না।আর এ দুর্বলতাকেই অপপব্যবহার করতো ফরহাদ।যৌতুকের টাকা না পেয়ে শরীরের উপর চালাতো অমানবিক নির্যাতন।দুইবার হত্যা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় ফরহাদ।তার নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে অসহায় লাকী পাষণ্ড স্বামী ফরহাদের সাথে সকল সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ তালাক প্রদান করেন।আর ২০২০ সালের নভেম্বরে বিজ্ঞ চট্টগ্রাম আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি ।

২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় আদালতে মামলা করেন লাকী। পরবর্তীতে আপোষের শর্তে জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে ফরহাদ হয়ে ওঠেন আরও বেপরোয়া। কান্নাজড়িত কন্ঠে লাকী আরও অভিযোগ করেন,ধার-দেনা ও কষ্টের টাকা দিয়ে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ব্রিকফিল্ড রোডে একটি সরকারি জায়গায় দখল স্বত্ত্ব হিসেবে একটি ঘর কিনে নেন তিনি।

আর সেই ঘরের দিকেও চোখ পড়ে লোভী ফরহাদের।মাথা গোঁজার ঠাঁই কেড়ে নিতে জোরপূর্বক জায়গা দখলের পায়তারা করে সে।ঘরে ঢুকে শুধু ভাঙচুর করেই ক্ষান্ত হয় নি ফরহাদ,লুট করে নিয়ে যায় মালামালও।গত জুলাইয়ের ২৮ তারিখ ফরহাদের নেতৃত্বে এ ধরণের হামলার ঘটনা ঘটার সাথে সাথে কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করেন লাকী।কিন্তু কোন প্রতিকার না পেয়ে পরদিন ২৯ জুলাই আদালতে মামলা দায়ের করেন লাকী। মামলা তুলে নিতে ও জায়গা কেড়ে নিতে বেপরোয়া ফরহাদ এখনো নানা ধরণের হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ধর্মান্তরিত নারী লাকী বেগম।এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

3 × 1 =