Site icon Aparadh Bichitra

বেগমগঞ্জে কিশোর গ্যাং প্রধানের হাতে ধর্ষিত স্কুল ছাত্রীর পরিবার নিরাপত্তাহীন

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে কিশোর গ্যাং প্রধান মাহাদি মাহবুবুল  মাহির হাতে ধর্ষনের শিকার হয়েছে এক স্কুল ছাত্রী(১৪)। ওই স্কুল ছাত্রীর মায়ের দায়ের করা মামলায় মাহি গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে থাকলেও তার গডফাদার ইশতিয়াক আলম সোহান মামলা তুলে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে ধর্ষনের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার। কিশোর গ্যাং প্রধান মাহাদি মাহবুবুল মাহি উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের তপন মেম্বার বাড়ির তপন মেম্বারের পুত্র । সে ড্রাইভিং পেশার আড়ালে নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। মাহি চৌমুহনী শহরের ডিবি রোডের নুর জাহান ইলেট্টনিক্স  দোকানের মালিক ইশতিয়াক আলম সোহানের ড্রাইভার হলেও তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে। এই কিশোর গ্যাং এর গডফাদার সোহানও ব্যবসার আড়ালে নকল পন্য বিক্রি, সরকারী খাল ও সম্পত্তি দখলসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্ধা বর্তমানে নরোত্তমপুর মৃদ্দা বাড়ির ব্যবসায়ী সোহানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ভিকটিম স্কুল ছাত্রীর পরিবার। ভিকটিম চৌমুহনীর কলেজে রোডের অবস্থিত একটি বেসরকারী স্কুলের ৯বম শ্রেনীর ছাত্রী। গত ১৬ আগষ্ট সকালে ওই ছাত্রী এসাইমেন্টের জন্য স্কুলে গেলে স্কুল গেইট থেকে তাকে অপহরণ করে মাহিসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

এরপর ওই ছাত্রীকে চৌমুহনীর একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে মাহি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এ সময় গণধর্ষণ হলেও ধর্ষণকারীদের হুমকিতে নিরুপায় স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে ঘটনার ৬ দিন পর শুধু মাহির বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার নং-৫০, তাং-২২-৮-২০২১ইং।

ঘটনার পর পরেই এলাকা থেকে পালিয়ে যায় ধর্ষক মাহি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলামের নির্দেশে ধর্ষক মাহি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। পরবর্তিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৫ আগষ্ট চৌমুহনীর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই জামাল সঙ্গীয় ফোর্সসহ চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহিকে তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে মাহি জেল হাজতে রয়েছে। 

মামলার বাদি স্কুল ছাত্রীর মা জানান, আমরা ব্যবসায়ী সোহানের বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলাম। ওই সুযোগে সোহানের ড্রাইভার ও কিশোর গ্যাং বাহিনীর প্রধান মাহি আমার মেয়েকে প্রায় সময় উক্ত্যাক্ত করতো। আমরা প্রতিবাদ করলেও সোহানের কারনে মাহি কর্নপাত পরতো না।

এখন  আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। সোহানের সেল্টারেই মাহি এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তুলেছে। সোহানের প্রভাব খাঁটিয়ে তারা এলাকায় নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। আসামী মাহি গ্রেফতার হলেও সোহানসহ একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে এবং মামলা তুলি নিয়ে মহির সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহাদি মাহবুবুল  মাহির পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। আর গডফাদার হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী ইশতিয়াক আলম সোহানের সাথে কথা বলতে মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

 বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার জানান, ধর্ষককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। অপরাধের সাথে কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেয়া হবেনা বলেও জানান ওসি কামরুজ্জামান।