তালেবানরা ওড়াল মার্কিন হেলিকপ্টার

0
655

তালেবান আফগানিস্তানের সবক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও উপজাতির প্রতিনিধি নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের একদম দ্বারপ্রান্তে। তালেবান নেতাদের বরাত দিয়ে গত বুধবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল—জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর থেকে তাদের সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে। কোন ধরনের সরকার গঠন করে এবং তাদের শাসনব্যবস্থা কেমন হবে, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ রয়েছে। গত শুক্রবার তালেবান সরকার ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তালেবান জানিয়েছে, সরকারের ‘সুপ্রিম লিডার’ হবেন হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। তার পরামর্শেই দেশ চালাবেন প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাবুল বিমানবন্দরে থাকা সব বিমান, হেলিকপ্টার ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করে গেলেও কান্দাহারে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার উড়িয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তালেবান। বিজয় উদযাপনে কান্দাহারের বাইরে খোস্ত শহরে সমবেত জনতার মাথার ওপর দিয়ে হেলিকপ্টারটি চালানো হয় বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের মেট্রো নিউজ।

আমরা এমন একটি ইসলামিক সরকার ঘোষণা করব যা মানুষের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে সরকারের প্রধান হবেন হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা। এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না।’ এর আগে বার্তা সংস্থা খামা প্রেস সূত্রের বরাত দিয়ে জানায় যে, তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। মোল্লা ইয়াকুব (প্রথম তালেবান নেতার পুত্র) প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং খলিফা হাক্কানি (তালেবানের অন্যতম নেতা জালালুদ্দীন হাক্কানির পুত্র) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন। এদিকে প্রদেশগুলোতে গভর্নর, পুলিশ প্রধান ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়োগ দিয়েছে তালেবান। তবে তালেবান জামানায় আফগানিস্তানের জাতীয় সংগীত ও পতাকা কেমন হবে তা জানা যায়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তালেবান সরকার গঠন করলেও তাদের ‘পর্বতসম’ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

বিশেষ করে অর্থনীতি, নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি সর্বোপরি সাধারণ আফগানদের ভেতর তালেবানের প্রতি আস্থা প্রতিষ্ঠাই হবে দলটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ শহরকেই আন্দোলনের আধ্যাত্মিক জন্মস্থান হিসাবে দেখা হয়। একটি হেলিকপ্টার তালেবানের কালো ও সাদা পতাকা নিয়ে উড়ে গিয়েছে। যোদ্ধাদের মাথা এসময় স্কার্ফে মোড়ানো ছিল। কমপক্ষে একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারকে মাথার ওপরে উড়তে দেখা গেছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, প্রাক্তন আফগান সেনাবাহিনীর কেউ এই উড়োজাহাজটি উড়াচ্ছিল। কারণ তালেবানদের কাছে পাইলট নেই। অনেকেই আশা করেছিলেন যে, তালেবানের আধ্যাত্মিক সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা হাজির হবেন, কিন্তু শুধুমাত্র শহরের নতুন গভর্নর জনতাকে সম্বোধন করে বক্তব্য রাখেন।

কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু আশা আছে যে, নতুন সরকার কাবুলের একটি কর্মরত বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য সাহায্যের অনুমতি দিতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে পুনরুদ্ধার করতে পারে। সোমবার মার্কিন সেনারা প্রত্যাহারের পর কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট কাবুলে প্রথম অবতরণ করে। ফ্লাইটে বিমানবন্দরে কাজ করার জন্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের একটি দল নিয়ে আসে।

তালেবানের সঙ্গে কাজ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র : যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ জেনারেল জেন মার্ক মিলি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সন্ত্রাস দমনে তালেবানের সঙ্গে সমন্বয় করা হতে পারে। তিনি তালেবানকে নির্দয় হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তারা পরিবর্তিত হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। গতকাল এসব জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেনারেল মিলি এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন।

তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়ার ইঙ্গিত মার্কিন আইনপ্রণেতার : আফগানিস্তানে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে ভবিষ্যতে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির প্রভাবশালী একজন আইনপ্রণেতা গ্রেগরি মিকস। মার্কিন কংগ্রেসের হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির ডেমোক্রেটিক চেয়ার মিকস বলেছেন, ভবিষ্যতে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। তবে এজন্য মানবাধিকারকে সম্মান করার জন্য গোষ্ঠীকে তার প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে বলেও জোরারোপ করেন মার্কিন এই আইনপ্রণেতা।

এমএসএনবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিকস বলেন, ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর একসময় দেশটির সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন অসম্ভব বলে মনে করা হতো। কিন্তু ওয়াশিংটন এখন হ্যানয়ের সাথে উষ্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেছে। মিকস বলেন, তাই আপনি কখনও কোনও সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন না। কিন্তু তালেবানরা মানবাধিকারের নীতিগুলো রক্ষায় কাজ করছে তা দেখাতে হবে তাদের। গত ১৫ আগস্ট তালেবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নেয় তালেবান।

এমতাবস্থায় এর একদিন আগে বিদেশি ও আফগানদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে বিভিন্ন দেশ। মঙ্গলবার আফগানিস্তানে দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে বাইডেন বলেন, আরও সময় থাকার কোনও সুযোগ ছিল না। প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে থাকার পর সোমবার মধ্যরাতে দেশটি ছেড়ে আসে মার্কিন বাহিনী। তালেবানরা ক্ষমতা দখল করে নেয়ার পর আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে উড়িয়ে নিয়ে আসায় মার্কিন বাহিনীর প্রশংসা করেন বাইডেন। মার্কিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়ায় এটাকে ‘একটি বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করছে তালেবান। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টুইন টাওয়ারে হামলার পর আফগানিস্তানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

সাবেক শীর্ষ মার্কিন সেনা কর্মকর্তার মুখে নতুন সুর! : আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ডেইলি মেইলকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দেশটির সাবেক এক শীর্ষ মার্কিন সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে যেভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান হচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে ফেরা ও আগ্রাসন চালানো লাগতে পারে। তার ভাষায়, ‘আমি মনে করি, আমরা হয়তো খুব শিগগিরই আফগানিস্তানে ফিরব। সেখানে একটা ইসলামি গোষ্ঠীর হাতে এক মাদক সাম্রাজ্য গড়ে উঠছে। সেটা বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক এই সেনা কমান্ডার পেশাগত জীবনে সাবেক একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করেছেন তিন তারকা বিশিষ্ট এই জেনারেল। বাইডেনের কড়া সমালোচনা করে ওই সেনা কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন যেভাবে অপরিপক্বতা ও অদূরদর্শিতা দেখিয়েছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব দরবারে হাস্যরসের খোরাকে পরিণত হয়েছে। তবে অবসরপ্রাপ্ত ওই শীর্ষ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি ডেইলি মেই।

প্রসঙ্গত, গত বছর তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ৩১ আগস্ট রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে শেষ মার্কিন সেনাটি আফগানিস্তান ছেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছরের ক্লান্তিকর যুদ্ধ থেকে রেহাই পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদেশি আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়েছে আফগান জনগণ। তবে সেনা প্রত্যাহার করতে গিয়ে অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র লজ্জাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। এমনকি মার্কিন নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে বাইডেন প্রশাসন। শুধু তা—ই নয়, বিদায়বেলায় সন্ত্রাসী হামলা ১৩ মার্কিন সেনাও নিহত হয়েছে। এ নিয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কাবুল বিমানবন্দর চালু করতে তৎপর কাতার দ্রুত কাবুল বিমানবন্দর চালুর ঘোষণা দিয়েছে কাতার। বুধবার কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিশেষজ্ঞ দলকে বহনকারী কাতারের বিশেষ বিমান। আফগানিস্তান ত্যাগে লোকজনকে অনুমতি দিতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দোহায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রাহমান আল থানি বলেন, খুব কঠোর পরিশ্রম করছি। যত দ্রুত সম্ভব এয়ারপোর্টটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। আশা করি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা কিছু ভালো খবর শুনতে পাবো।’ কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের উপ—প্রধান শের আব্বাস স্তানিকজাই বুধবার বলেছিলেন, সম্প্রতি কাবুল বিমানবন্দরে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনা দায়ী এবং বিমানবন্দর মেরামতের জন্য বর্তমানে ৩ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে বিমানবন্দর পুনরায় কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রস্তুত হবে। এদিকে কাবুল বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় ইতিমধ্যেই ভিড় জমতে শুরু করেছে বেলুচিস্তান প্রদেশের চমন এবং খাইবার—পাখতুনখোয়ার তোরখাম সীমান্তে। পাশাপাশি একই অবস্থা ইরানের ইসলাম কালা ও তুর্কমেনিস্তান সীমান্তেও।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতেই সীমান্তে ভিড়ছে আফগানরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ইরানের সঙ্গে সীমান্তের ইসলাম কালা চৌকির কাছে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছেন। মানবাধিকারে সম্মান ও আইনে শ্রদ্ধাশীল হতে বললেন কোরেশি : পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি বলেছেন, মানবাধিকারের প্রতি আফগান তালেবানদের সম্মান দেখানোর উপর আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিষয়টি নির্ভর করছে। তিনি বলেছেন, তালেবানদের এটা জেনে রাখা উচিত আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর তালেবানদের আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে। তাই মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিও তাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সমর্থন পেতে হলে তালেবানদেরকে মানবাধিকার মেনে চলার যে শর্ত পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়েছেন তা থেকে ব্যক্তি ও সামাজিক অধিকার লংঘিত হয় এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি তালেবানদেরকে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন। তালেবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর এবং সেদেশ থেকে মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর তালেবানরা কিভাবে দেশ শাসন করবে আফগানিস্তানের জনগণসহ আন্তর্জাতিক সমাজের এখন সেটাই প্রশ্ন। আফগানিস্তানে গত দুই দশকে তালেবানদের অতীত নৃশংস কর্মকাণ্ড ও আচরণের কারণে ওই দেশটির জনমনে এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে ক্ষমতায় আসার পর তালেবানরা আদৌ মানবাধিকারের নীতিমালা মেনে চলব কিনা।

রাজনৈতিক দলগুলোসহ আফগানিস্তানের সর্ব মহলে ব্যক্তি, সামাজিক, ধর্মীয় ও জাতিগত স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষিত হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদিও দুই দশক পর ক্ষমতায় এসে তালেবানরা তাদের অতীত নীতি ও কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু তারপরও জনমনে উদ্বেগ দূর হচ্ছে না। তবে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ প্রথম সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘গত দুই দশকে এই গোষ্ঠী অনেক বিজ্ঞ হয়েছে এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে’। তালেবান মুখপাত্রের এ বক্তব্য থেকে তারা মানবাধিকারসহ সব ধর্ম, জাতি ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বিশ্বাসী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর পাশ্চাত্যের কোনো কোনো কর্মকর্তা আফগানিস্তানকে সাহায্য বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, তারা যদি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখায় তাহলে তালেবানের ব্যাপারে তাদের নীতিতে পরিবর্তন আসবে। এ অবস্থায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সমর্থন পেতে হলে তালেবানদেরকে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার যে শর্ত দিয়েছেন তার মাধ্যমে তিনি মূলত মানবাধিকার মেনে চলার ব্যাপারে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে তালেবানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। তবে তালেবানরাও এটা বুঝতে পারছে যে অতীতের মতো বলদর্পিতা ও সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে দেশ শাসন করা সম্ভব নয়।


তালেবান সরকারে সমর্থন ঘোষণা হেকমতিয়ারের : আফগানিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আফগান ইসলামিক পার্টির নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার আসন্ন তালেবান সরকারকে তার নিঃশর্ত সমর্থনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, তিনি আশা করেন যে, সপ্তাহের শেষে নতুন শাসন ব্যবস্থা ঘোষণা করা হবে। আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হেকমতিয়ার বলেন, তালিবান সরকারকে সফল করতে হলে যোগ্য লোকদের নিয়োগ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তিনি সরকারে কোনো পদ নিতে বা এর সঙ্গে অংশীদার হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন না। দুই দেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে হেকমতিয়ার জোর দিয়ে বলেন যে, তুরস্ক আফগানিস্তানের অন্যতম সেরা বন্ধু।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + 14 =