ইসলামের উদ্দেশ্য ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি। ইসলামি জীবনাদর্শ বিশ্বের সব মানুষের জন্য। ইসলামের লক্ষ্য হলো মানুষের সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা।
নতুন খবর হচ্ছে, আমার নাম রবি মায়েসট্রাকি। ১৯৮১ সালে ব্রিসবেন শহরে আমার জন্ম। মাত্র সাত বছর বয়সে আমেরিকায় পাড়ি জমাই। আমার মা-বাবার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। নিউ ক্যালেডেনিয়ায় একটি হোটেল ছিল বাবার।
কয়েক বছর পর মায়ের একটি চাকরি হয়। তিনি পুনরায় বিয়ে করেন। মায়ের সঙ্গে নিউ ইয়র্ক ও নিউজার্সি সিটিতে আমাদের জীবন ছিল অত্যন্ত আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের। তবে এসব আনন্দে মিশে ছিল অনেক কিছু।
কিন্তু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে আমি নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ি। তাই ১৬ বছর বয়সে পুনরায় অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাই। মূলত আমাকে সঠিক পথে আনতেই নিজ দেশে যাই।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ফের দেখা করার আগ্রহ প্রবল হয়। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার স্কুলেও পড়তে পারছিলাম না। সেখানের শিক্ষা কারিকুলামের সব কিছু ভিন্নতর। ফলে এক বছর পড়াশোনা ছাড়াই কাটে।
এ সময় মার্কেটিং, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। পাশাপাশি নেশাদ্রব্য ব্যবহার করায় আমার চলাফেরায় অনেক পরিবর্তন আসে। বিভিন্ন সাপ্তাহিক পার্টিতে যোগ দেওয়া শুরু করি। আমোদপ্রমোদের জন্য মাদকসেবনে অভ্যস্ত হই।
একসময় আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়। এমনকি বিয়ের পরও আমার মধ্যে এসবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। নিজেকে সব সময় স্বাভাবিক জীবনে ব্যর্থ বলে মনে হয়েছে। তা ছাড়া অপরাধ ও মাদকদ্রব্যের প্রতি অনেকটা ঝুঁকে পড়ি।
২০০৭ সালে মাদকদ্রব্য মামলায় আমার ১০ মাসের জেল হয়। জেল থেকে বের হয়ে ফের মাদকদ্রব্য সেবন শুরু করি।
এক মুহূর্তও বিলম্ব করিনি। আগের মতো নেশা শুরু করে নিজের মধ্যে এক ধরনের অনুশোচনা তৈরি হয়। নিজেকে সবচেয়ে বড় অপরাধী হিসেবে মনে হয়।
এত কিছুর মধ্যে আমার মধ্যে আধ্যাত্মিক উন্নতির আগ্রহ তৈরি হয়। আমি নিজের মধ্যে পরিবর্তনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা লক্ষ করি। মনের আকাঙ্ক্ষা থেকেই নিজের বদ অভ্যাসগুলো বদলে ফেলা শুরু করি।
পবিত্র কোরআন পাঠ ও মসজিদে যাওয়ার আগ্রহ ছিল আমার মনে। একদিন আমি খুবই ভারাক্রান্ত মনে ছিলাম। তখন আমার মনে ঘনিষ্ঠ কারো শরণাপন্ন হওয়ার আগ্রহ জাগে।
একজন ট্যাক্সিচালকের নম্বর সংগ্রহ করি। কয়েক সপ্তাহ আগে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তার সঙ্গে মসজিদে যাওয়ার আগ্রহের কথা ফোন করে বলি।
সে কারণ জিজ্ঞেস করলে বললাম, আমার পরামর্শের প্রয়োজন, আমার সাহায্যের প্রয়োজন। সে দিনই সে আমাকে মসজিদে নিয়ে যায়। মসজিদে তরুণ-যুবকদের নামাজ আদায় করতে দেখে আমার অন্তরে অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়।
মুসলিম হওয়ার পর আমার মদের নেশা কেটে যায়। নেশা কাটিয়ে মাদকদ্রব্য থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে সময় পার করি এবং নিয়মিত নামাজ আদায় করি।
মানবসমাজের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি। মদ পান ও নেশাদ্রব্য ছাড়াই মুসলিমরা সারা জীবন কাটায়। বিষয়টি আমার কাছে বেশ বিস্ময়কর মনে হয়েছিল। এমনকি ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে তা আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়। মুসলিমদের দৃঢ় মনোবল আমাকে সব সময় এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।