মোঃ সেলিম উদ্দীন: দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যেখানে সেখানে বিক্রি করছে গ্যাস সিলিন্ডার। কর্ণফুলি, পটিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, আনোয়ারা, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া উপজেলায় এ রকম ভয়ঙ্কর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রচুর। মুদির দোকান থেকে শুরু করে র্ফামেসীতে পাওয়া যাচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। উপজেলা সদর ছাড়াও গ্রামের প্রায় দোকানে বিস্ফোরক সনদ ছাড়া বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। এক এক দোকান যেন বোমায় পরিণত হয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী যেখানে সেখানে নিয়মনীতি না মেনে জড়িয়ে পড়ছে এ ব্যবসায়।
এসব উপজেলার স্টেশনে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের গ্যাস বিক্রির ট্রেড লাইন্সেস আর বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কোন সনদ নেই। এ সব কিছু থাকলেও নেই কোন নিরাপত্তাজনিত উপকরণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যবসার প্রচার হিসেবে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল, যা প্রচুর রোদ, বৃষ্টির মধ্যে পড়ে থাকে। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রায় সময় দেখা যায়, কোম্পানি তাদের সিলিন্ডার সরবরাহকালে গাড়ির উপর থেকে নিচে দিকে নিক্ষেপ করে মাটিতে ফেলছে তখন বড় দূর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং সাধারণ মানুষ সব সময় আতঙ্কিত থাকে, কখন তারা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আক্রান্ত হচ্ছে।
তাছাড়া সদর উপজেলা ছাড়াও গ্রামের প্রায় স্থানে সিলিন্ডার গ্যাসের পাশাপাশি কেরোসিন,ডিজেল, অকটেন বিক্রি করছে। অনেক ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় প্রচুর পরিমাণ সিলিন্ডার মজুদ রাখে। এভাবে সিলিন্ডার মজুদ রাখা বাড়ির আশেপাশের এলাকার জনসাধারণ যেন বোমার মাঝে বসবাস করছে।
জানা যায়, ২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে তবে তিন বছরের কারাদন্ড ও অতিরিক্ত অর্থদন্ড দন্ডিত বিধান রয়েছে। ১৮৮৪ এর দ্য এলপি গ্যাস ২০০৪ এর ৬৯ ধারার -২ বিধিতে লাইসেন্স ছাড়া কোন ক্ষেত্রে এলপিজি মজুত করা যাবে না বলা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী আটটি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুতের ক্ষেত্রে লাইসেন্স নিতে হবে। একই বিধি ৭১ নাম্বার ধারায় আছে, আগুন নেভানোর জন্য পযার্প্ত পরিমাণ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম সজুত রাখতে হবে। কিন্তু এ আইন কেউ মানছে না।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান হাবিব জিতু বলেন, লোহাগাড়ায় যেখানে সেখানে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করায় আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনেকবার মোবাইল র্কোট পরিচালনা করার মাধ্যমে অর্থদন্ড ও সর্তক করে দিয়েছি এবং সবাইকে সরকারি নির্দেশ অনুসারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার জন্য বলেছি।
সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এসএম হুমায়ন কার্লায়েন জানান, যারা এ ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের আমরা মৌখিকভাবে সকলকে সর্তক করেছি এবং নোটিশের মাধ্যমের জানিয়ে দিয়েছি সরকারি বিধি মোতাবেক লাইন্সেস গ্রহণ করার জন্য। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি তারা তা নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল র্কোটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।