0
1278

রাশেদুল ইসলাম: সুকর্ম অর্থাৎ ভালো কাজ সকল শ্রেণী- পেশার মানুষের কাছে পরিলক্ষিত হয়। আর যিনি এই ভালো কাজ করেন আম-জনতার কাছে তিনি হয়ে ওঠেন নয়ন মনি। ঠিক তেমনি ভাল কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বরিশাল এর জনগণের কাছে নয়নমণি হয়ে উঠেছেন মানবিক ও কর্ম গুণে গুণান্বিত বরিশাল এর পুলিশ সুপার মো: মারূফ হোসেন। স্বীয় কর্মগুণে বরগুনা জেলা বাসীর মন জয় করার পর, এবার বরিশাল জেলা বাসীর মন জয় করে নিয়েছেন এসপি মারুফ হোসেন (পিপিএম)। গত বছর ডিসেম্বরে দায়িত্ব গ্রহণের পর বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) এর আওতাধীন ১০ টি থানা ১/বাকেরগঞ্জ  ২/বাবুগঞ্জ  ৩/ উজিরপুর ৪/ বানারীপাড়া  ৫/ গৌরনদী  ৬/আগৈলঝরা ৭/ মুলাদী ৮/ হিজলা ৯/ মেহেন্দীগঞ্জ ১০/কাজিরহাট  এ ব্যাপক পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে আইন শৃঙ্খলা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। উপরোক্ত দশটি থানার সকল কার্যক্রম সরাসরি তদারকির মাধ্যমে কোথাও কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে কিংবা জনদুর্ভোগের কোন কারণ চিহ্নিত হলে সাথে সাথে তিনি তা দূরীভ‚ত করেন। করোনাকালীন জনগণকে মাস্ক পড়তে উদ্বুদ্ধ করা, করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাইকিং করন, আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা প্রদান, চৌকস পুলিশ অফিসার দের কে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা প্রদান, ই-পুলিশিং কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন, থানায় থানায় জনসাধারণের সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সহ এসপি মারুফ হোসেনর (পিপিএম) নানাবিদ জনবান্ধব পুলিশিং কার্যক্রম ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে বরিশালে। পূর্বে বরগুনা জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালনকালে সেখানেও ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)। বিশেষ করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) এর ভ‚মিকা আজও স্মরণ করে বরগুনাবাসী।

সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মহামারী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে, নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলস ভাবে কাজ করেছিল বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগ। সেই সময়ের বরগুনার জেলা পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন পিপিএম মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত নিষ্ঠা ও কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সকল পুলিশ সদস্যদের নিয়ে করোনা যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। নিজের পরিবার ও পরিজনের কথা না ভেবে বরগুনা জেলাবাসীর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছিলেন তিনি।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার নেতৃত্বে জেলার জনসাধারণকে এই মহামারী থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে বিভিন্ন ভাবে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছিলেন বরগুনা জেলা পুলিশ। সে সময় করোনা আক্রান্ত পুলিশ পরিবারের দায়িত্ব নেন মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)।  এ ছাড়াও এলাকার মানুষকে সর্বসময় পরিস্কার-পরিছিন্নতার মধ্যদিয়ে নিজ-নিজ বাড়িতে থাকার আহŸানও করেছিলেন তিনি।

আর পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে ও তার ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া ঘরবন্দী ও কর্মহীন মানুষদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের মাঝে সাধ্যমতো খাদ্য সামগ্রীও তুলে দিয়েছিলেন বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)। মানবিকতার দিকে পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) যতটা সফল ঠিক ততোটাই সফলতা অর্জন করেছেন জেলার শন্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ও অপরাধ দমনে। এতে করে বরগুনা জেলা পুলিশ তথা পুরো পুলিশ বিভাগের উপর মানুষের আস্থা ও ভালবাসা দিন দিন পরিলক্ষিত হয়েছিল। আর এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছিল পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) হোসেনের সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে।

বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে মো: মারুফ হোসেনে’র নেতৃত্বে যেসব  কর্মকাÐ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল সেগুলো হলো…….নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সাথে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ: পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) বরগুনা জেলায় যোগদান পরবর্তী সময়ে গত ২২, ২৩, ২৫ ও ২৬ জুন/১৯ খ্রি. অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ পুলিশের তথা বরগুনা জেলার টিআরসি নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম শতভাগ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পন্ন করেছিলেন। ফলে কৃষকের সন্তান ১০ জন, দিন মজুরের সন্তান ৮ জন, পুলিশের সন্তান ৭ জন, ব্যবসায়ীদের সন্তান ৫ জন, বে-সরকারী চাকরীজীবীদের সন্তান ৪ জন, সরকারী চাকরীজীবীদের সন্তান ৫ জন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সন্তান ২ জনসহ সর্বমোট ৪১ (একচল্লিশ) জন  প্রকৃত মেধার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকুরীর সুযোগ পেয়েছেন।  এরুপ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার ফলে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি জনসাধারণের নিকট উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছেন। পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) নিজেও এরূপ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করনের ফলে বরগুনাবাসীর নিকট ব্যাপক প্রশংসা অর্জন সহ সকলের নয়ন মনিতে পরিনত হয়েছিলেন।

পুলিশ লাইন হাই স্কুলের সাফল্য:

বরগুনা জেলার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ বরগুনা পুলিশ লাইন হাইস্কুল গত ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এসেছিলেন। পুলিশ সুপার, মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) বরগুনা জেলায় যোগদানের পর তার যোগ্য নেতৃত্বে বিগত বছরের তুলনায় আরও স্ব-গৌরবে এগিয়ে চলেছে পুলিশ লাইন হাইস্কুল। ফলশ্রæতিতে গত ২ বছর অর্থাৎ ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ পূর্বক ১০০% কৃতকার্য  হয়েছেন। উল্লেখ্য, এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশ লাইন হাই স্কুল ২০১৮ সালে নন এমপিও ভুক্ত স্কুলগুলির মধ্যে জেএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সমগ্র বাংলাদেশে ১ম স্থান অধিকার করেছে পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) এর যোগ্য নেতৃত্বে পুলিশ লাইন হাইস্কুলে সুনাম দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে।

নবদিগন্ত’ নামক রেজিস্টার্ড সমাজ সেবা সংগঠন প্রতিষ্ঠা: মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) পুলিশ সুপার হিসেবে বরগুনা জেলায় যোগদানের পর দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে বরগুনা জেলাকে মাদক মুক্ত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফল ও হয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা/উপজেলায় ১৬৪ জন মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ করানোসহ তাদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ‘নব দিগন্ত’ নামক রেজিস্ট্রার্ড সমাজ সেবা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন।

উক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মসমর্পণকৃতদের পুলিশ নারী কল্যান সমিতি জেলা/উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, এবং তাদের মধ্যে অনেককে পুনাক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও জেলা/উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সেলাই মেশিন, রিক্সা/ভ্যান ও দোকান ঘর করে দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। এছাড়া অন্যান্য মাদকাসক্তকারীদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কারণে সফলকাম ও হয়েছিলেন পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)।

আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড-প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম: ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার  (জাগরণী:) পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায়শই পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেক মানবিক ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সবার আগে সমাজের অসহায় মানুষের দু:খ-দুর্দশার মুখোমুখি হতে হয় একজন পুলিশ কর্মকর্তাকেই। অন্যদিকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা, অসেচতনতা এবং দারিদ্রের কারণে ভুক্তভোগী অসহায় নারীরা সঠিকভাবে আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন না। পারেন না নিজেদের নির্যাতন বা ভোগান্তির কথা খুলে বলতেও। ফলে একদিকে বিচার কার্য যেমন বিলম্বিত হয়, তেমনি ভোগান্তিও বাড়ে নারীদের। আর একবার নারীরা যখন তাদের স্বামী বা শ্বশুরক‚লের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নেন তখন আর ওই স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির স্বজনরা ওই নারীকে সাধারনত মেনে নিতে চান না।

ফলে রুদ্ধ হয়ে আসে সমঝোতার পথও। এসব বিবেচনায়, মামলা পরিচালনার সামর্থ্য নেই অথবা মামলায় আগ্রহী নন এমন দরিদ্র, অসহায় ও নির্যাতিত নারীদের ভোগান্তি লাঘবে পুলিশিং সেবার মধ্য দিয়ে বিরোধ নিস্পত্তির লক্ষে জেলা পুলিশের উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার (জাগরণী)। স্বামী স্ত্রীর অসহিষ্ণু আচরণ এবং ছোটখাটো দাম্পত্য সমস্যা, পারিবারিক, সামাজিক, শারীরিক ও মানবিক সমস্যা, ইভটিজিং ও বখাটেদের উৎপাত, স্ত্রী-সন্তান কিংবা বৃদ্ধা বাবা-মায়ের খোঁজ খবর না রাখা, খোর-পোষ না দেওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করছে (জাগরণী) ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার।

উক্ত কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের (জাগরণী) সমন্বয়কারী এসআই জান্নাতুল ফেরদৌসী কে কমিউনিটি সার্ভিস ক্যাটাগরিতে এ কে এম শহিদুল হক বিপিএম, পিপিএম, ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ মহোদয় কর্তৃক বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ এবং ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ মহোদয় কর্তৃক বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ প্রদান করেন। নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের (জাগরণীর) মাধ্যমে পুলিশ সুপার, মো: মারুফ হোসেন, (পিপিএম) গত ১৪/০৮/১৮ খ্রি. হতে ৩১/১২/১৯ খ্রি. তারিখ পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতন ২১৮টি, যৌতুকের জন্য নির্যাতন ৪৫টি, ইভটিজিং ০৩টি, একতরফা তালাকের খোরপোষ আদায় ০৪টি, অন্যান্য খোরপোষ আদায় ০৬টি, শিশু সন্তান উদ্ধার ০৭টি, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ও নতুন কাবিন ১৪টিসহ সর্বমোট ৩৯৭টি অভিযোগের সুষ্ঠু সমাধান করেছেন।

ফলে নারী নির্যাতনের ঘটনা পূর্বের তুলনায় তাৎপর্যপূর্ণভাবে হ্রাস পেয়েছে। নারী নির্যাতন মামলা ও অন্যান্য (মামলা) অপরাধ হ্রাস করণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ: পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) বরগুনা জেলায় যোগদানপরবর্তী অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে দায়েরকৃত মামলা রুজু না করে ঘটনার সত্যতা যাচাই/বাছাইয়ের মাধ্যমে মামলা রুজু করার পরামর্শ প্রদান পূর্বক বিষয়টি কঠোর হস্তে বাস্তবায়ন করেন। ফলে নিম্নবর্ণিত ছকে উল্লেখিত মামলার ঘটনা সমসাময়িক সময়ে পূর্বের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। যা একমাত্র পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) এর যুগোপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই সম্ভব হয়েছে।

দেশব্যাপী বহুল আলোচিত রিফাত হত্যার বিচার সুনিশ্চিতকরণ:

বরগুনা জেলা পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে বরগুনায় সংঘটিত দেশব্যাপী বহুল আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদের সনাক্ত করা আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছিলেন সে সময়ের বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)। বিশেষ করে বরগুনার সরকারি কলেজের সামনে যখন রিফাতকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করা হচ্ছিলো ওতখন তার স্ত্রী মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছিল ভিডিওতে।

তিনি ছিলেন মামলার এজাহারের এক নম্বর সাক্ষী। কিন্তু নিরপেক্ষ তদন্তের পর পুলিশ মামলার অভিযোগপত্রে মিন্নির নাম যুক্ত করে আসামির তালিকায়। মিন্নিকে করা হয় মামলার ৭ নম্বর আসামি। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসে স্বামী রিফাতকে হত্যার ঘটনায় যুক্ত ছিলেন তারই স্ত্রী/মিন্নি। গ্রেপ্তার করা হয় মিন্নিকে, নয়নবন্ড ও তার সহযোগীরা যখন রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায় তখন মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য যে চেষ্টা চালান এগুলো ছিলো পরিকল্পনার অংশ। রিফাত শরীফ ও নয়ন বÐের সঙ্গে দ্বৈত প্রেমের সম্পর্কের কারণে মনোমালিন্য হওয়ায় এই হত্যার পরিকল্পনা করেন মিন্নি।

বরগুনা জেলা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে সেই সময়ে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, মিন্নি একটি সিম ব্যবহার করতেন যেটি নয়ন বন্ডের দেয়া। সিমটি নয়ন বন্ডের মায়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। পুলিশের দাবি, রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ওই সিমটি ব্যবহার করত মিন্নি। হত্যাকাÐের দিন সকাল ৯টা ৮ মিনিটে ওই নম্বর দিয়েই নয়ন বন্ডকে কল করে ৬ সেকেন্ড কথা বলেন মিন্নি। এসময় তাদের ৪০ সেকেন্ড কথা হয়। হামলার পর বেলা ১১টা ৩১ মিনিটে নয়ন বন্ড মিন্নিকে একটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন।

পরে রিফাত শরীফ মারা যাওয়ার পর বিকেল ৪টার কিছু সময় আগে নয়ন বন্ড মিন্নির কাছে আরেকটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। পাঠানো ওই এসএমএসটিতে লেখা ছিল, আমারে আমার বাপেই জন্ম দেছে। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেয়া ওই পুলিশ সদস্যের বরাতে গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, রিমান্ডে মিন্নির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিন্নি বলেছেন, রিফাত শরীফকে মারার পরিকল্পনার সময় মিন্নি নয়ন বন্ডকে বলেছিলেন, তুমি যদি রিফাত শরীফকে মারতে পার, তাহলে বুঝবে তোমারে তোমার বাপেই জন্ম দিছে।’

২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যাকাÐের দুই খÐের ১২৩২ পৃষ্ঠার যে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: হুমায়ূন কবির, তাতে মিন্নির কর্মকাÐই বর্ণনা করা হয়েছিল ৩২ পৃষ্ঠাজুড়ে। জমা দেয়া ওই অভিযোগপত্রে কেন হত্যার পরিকল্পনা, কোথায়-কীভাবে তা করা হয়েছে, পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও হত্যার আগে-পরে পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারীদের সঙ্গে মিন্নির যোগাযোগের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, রিফাত শরীফ হত্যাকাÐের মূল কারণ ছিল নয়ন বন্ডের জন্মদিনে মিন্নির অংশগ্রহণ ও নয়নের মুখে মিষ্টি তুলে দেয়া। বরগুনা ইউটিডিসি সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নয়ন বন্ড জন্মদিন উদযাপন করে। ওই অনুষ্ঠানে মিন্নি ছিলেন প্রধান মেহমান। জন্মদিনের ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও করেন নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হেলাল শিকদার। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মিন্নি নয়ন বন্ডকে মিষ্টি খাইয়ে দিচ্ছেন। ভিডিওটি হেলাল শিকদার অনলাইনে ছেড়ে দিলে রিফাত শরীফ ক্ষুব্ধ হন।

২৪ জুন বেলা সাড়ে ১১টায় রিফাত শরীফ বরগুনা জিলা স্কুল মাঠে ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে হেলাল শিকদারকে জিজ্ঞাসা করেন। একপর্যায়ে হেলালের একটি ওয়ালটন মোবাইল ফোন রিফাত শরীফ কেড়ে নেন। পরে নয়ন বন্ড ওই মোবাইল ফোনটি মিন্নিকে উদ্ধার করে দিতে বলেন। মিন্নি ওই মোবাইল ফোনটি রিফাতের কাছ থেকে কেড়ে নিতে গেলে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে মিন্নির গায়ে হাত তোলেন রিফাত। গায়ে হাত তোলায় ক্ষুব্ধ হয় মিন্নি। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নি রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়।

জানা যায়, মিন্নি রিফাতকে বিয়ের আগে বিয়ে করেছিলেন নয়ন বন্ডকে। নয়ন বন্ড স্বামী থাকা অবস্থাতেই রিফাতকে বিয়ে করেন মিন্নি। রিফাত শরীফের সাথে মিন্নির বিয়ের পরের দিন মিন্নির বাবা কাজীকে ফোনে বলেন, মিন্নি ও নয়ন বন্ড কাল তার কাছে যাবে। আপনি ওদের ডিভোর্স করিয়ে দিয়েন। মিন্নি ও নয়ন বন্ডের নামে একটি আপত্তিকর ভিডিও বিভিন্ন পর্নসাইটে ছড়িয়ে পড়ে। পর্নসাইট ছাড়াও ওই ভিডিওটির অংশবিশেষ (কাটপিস) সামাজিকমাধ্যম ইউটিউব ও ফেসবুকেও শেয়ার করা হয়। গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে, মিন্নি বলেছেন, নয়নের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল এবং নয়ন মাঝে-মধ্যে দু’জনের একান্ত সময়ের ভিডিও ও ছবি ধারণ করতেন।

রিফাত হত্যার রায় ও পুলিশের বিচক্ষণতা নিয়ে এসে সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট……বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে বাকি ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামানের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। ফাঁসির আদেশ পেয়েছেন, রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো: হাসান, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

খালাস পেয়েছেন, মো: মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো: সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। বুধবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে আনা হয়। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা শুরু করেন। এ সময় জামিনে থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও কারাগারে থাকা ৮ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বহুল আলোচিত এ মামলায় পুলিশ যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিল, তাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের বিচার হয় জজ আদালতে। বাকি ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার চলছে বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে।

এদিকে চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, শুরু থেকেই জানতাম, রিফাত হত্যায় মিন্নি ছিল নাটের গুরু। এই মিন্নির ষড়যন্ত্রেই আমার ছেলের প্রাণ গেছে। পুলিশের দক্ষ পেশাদারিত্বের মাধ্যমে সব অপরাধী গ্রেপ্তার হওয়ায় এবং দ্রæত মামলার রহস্য উন্মোচন করায় বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। পুলিশের পক্ষ থেকে সততার সাথে দ্রæত এ মামলার রহস্য উন্মোচন করায় খুশি বরগুনাবাসীও। স্থানীয়রা বলছে, পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন ছাড়া এত দ্রæত রহস্যের জট খোলা সম্ভব হতো না। এর মাধ্যমে দেশের বিচারকার্য ও পুলিশের প্রতি আরও বেশি আস্থাশীল হয়েছে সাধারণ জনগণ। প্রতিটি জেলায় মারুফ হোসেনের মত পুলিশ সুপার থাকলে যেকোন অপরাধের রহস্য দ্রæত উন্মোচন করে বিচারকার্য শেষ করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।

বরগুনা বাসীর মন জয় করে গত বছর ডিসেম্বরে বরিশাল জেলার এসপি হিসেবে পদার্পণ করা মো: মারুফ হোসেন বরিশালে তার মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও বিচক্ষণতা কে আরও শাণিত করার মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশিং কর্মকাÐ বরিশাল বাসীকে উপহার দিবেন এই প্রত্যাশা বরিশালের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের। বরিশাল রেঞ্জ এর শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত মো: মারুফ হোসনে, (পিপিএম) মাদক উদ্ধার, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, আন্ত:জেলা ডাকাত গ্রেফতার, বাল্যবিবাহ রোধ, ইভ-টিজিং রোধ, ট্রাফিক আইন লংঘনে জরিমানা আদায়, কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং, উঠান বৈঠকসহ বিভন্ন ক্যাটাগরীতে কৃতীত্বপুর্ণ কাজের জন্য আগস্ট/২০২১ মাসের বরিশাল রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হওয়ায়  মো: মারুফ হোসনে, পিপিএম, পুলিশ সুপার, বরিশাল কে  ডিআইজি বরিশাল রেঞ্জ, বরিশাল এস এম আক্তারুজ্জামান শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার হিসেবে তাঁর হাতে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে মারুফ হোসেন বলেন, ” রাষ্ট্র কর্তৃক আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি একাগ্রতা,  নিষ্ঠা ও  দক্ষতার সাথে পালনে শতভাগ সচেষ্ট থাকি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার আমাকে আরো ভালো কাজের প্রেরণা যোগাবে। “রগুনা বাসীর মন জয় করে গত বছর ডিসেম্বরে বরিশাল জেলার এসপি হিসেবে পদার্পণ করা মো: মারুফ হোসেন বরিশালে তার মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও বিচক্ষণতা কে আরও শাণিত করার মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশিং কর্মকাÐ বরিশাল বাসীকে উপহার দিবেন এই প্রত্যাশা বরিশালের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

3 × 3 =