সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের নামে হয়রানিমুলক মামলা

0
1089

অপরাধ বিচিত্রা:  দেশব্যাপি সাংদাবিকদের ওপর জুলুম নির্যাতন চলছে। তার প্রমাণ তুচ্ছ কারণে মামলা, গ্রেপ্তার ও কারাবরন। এ পর্যন্ত কত সাংবাদিক যে হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে নেই বলে জানা গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর এর বিরুদ্ধে অনেক প্রতিবাদ হয়। আইনটি বাতিলের জন্য অনেক আন্দোলন হলেও কোন লাভ হয় নাই। সরকার থেকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের কাজে কোন বাধা হবে না। কিন্ত বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের কারণেও অনেক সাংবাদিক মামলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিক কাজলকে গ্রেপত আর করে দীর্ঘ দিন কারাগারে রাখা হয়। সাংবাদিক রোজিনাকে সচিবালয় সিমাহীন হয়রানি করে মামলা দিয়ে কারাগারে বন্ধি রাখার পর বেগতিক দেখে সাককার তাকে ছাড়তে বাধ্য হয়। মোট কথা সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সর্বদা হয়রানি ও ঝুঁকির শিকার। অপরাধ বিচিত্রার সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ, পিতা: মো: চান মিয়া সরকার, স্থায়ী ঠিকানা: হাড়িয়া বৈদ্যপাড়া, পো: উদ্ধবগঞ্জ, থানা: সোনারগাঁ, জেলা: নারায়ণগঞ্জ বর্তমান ঠিকানা: ৫৩/৩ আবেদীন ভিলা (৪র্থ তলা) চাষাড়া, নারায়ণগঞ্জকে পুর্ব শত্রæতা ও সংবাদ প্রকাশের জেরে ষড়যন্তমুলকভাবে, অন্যের প্ররোচনায় ও প্রতিহিংসায় হেফাজত কান্ডে সোনারগাঁ থানায় মামলা নং ১৩ তারিখ ৯ এপ্রিল ২১ ইংতে বাদী রফিকুল ইসলাম নান্নু উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে  নাম অন্তর্ভুক্ত করে।

তিনি জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের নারায়নগঞ্জ জেলার সভপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকের আক্রোশের শিকার হন। তিনি নারায়নগঞ্জে পরিবেশ দুষন নিয়ে অনেক প্রতিবাদ করেন ও অপরাধ বিচিত্রায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। রুপগঞ্জে চৈতি গার্মেন্টস এর বর্জে পরিবেশ দুষন নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য নিয়ে প্রতিবাদ করেন ও সভা সমাবেশ করেন। তার এসব  জনকল্যাণ মূলক কাজ তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

তার বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জে মামলার ঘটনায় জানা যায় যে, ৩রা এপ্রিল বিকালে সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ একই পত্রিকা অপরাধ বিচিত্রার জেলা প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম ইমামের সাথে বিশেষ কাজে আনন্দ বাজার এলাকায় ছিলেন। মামুনুল হকের আটকের খবর শুনে সাংবাদিক ইমাম সাংবাদিক সুলতান মাহমুদকে নিয়ে ৩রা এপ্রিল সন্ধায় মাগরিবের আজানের সময় সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টে পৌছে। রয়েল রিসোর্টে গেলে দেখতে পান, মেইন গেইট বন্ধ, অনেক লোক জড়ো হয়ে আছে, ভিতরে প্রবেশ মুশকিল।

সাংবাদিক ইমাম তার বন্ধু ভিতরে থাকা সাংবাদিক বিদ্যুৎকে কল করলে বিদ্যুৎ এসে দক্ষিন দিকের গাড়ী পার্কিংযের গেইট খুলে তাদের ভিতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করে।  তখন যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ রনি গাড়ী নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। তখন সাংবাদিক ইমাম তার বন্ধু সাংবাদিক বিদ্যুৎ ও সুলতান মাহমুদকে নিয়ে বের হয়ে আসে। সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ চৌরাস্তা এসে সিএনজি যোগে নবীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে আসে রাত ৮টার মধ্যে। আসার সময় সিএনজি থেকেই ৭.৩৫ মিনিটে কথা বলেন কামাল বাদশার সাথে। ৭.৩৭ মিনিটে অপরাধ বিচিত্রা থেকে তাকে কল দিয়ে রয়েল রিসোর্টের ঘটনার লাইভ করতে বলা হয়।

তখন সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ নবীগঞ্জ গুদারা ঘাটের কাছাকাছি চলে এসেছেন অপরাধ বিচিত্রাকে জানান। সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ তাৎক্ষনিক ৭.৪১ মিনিটে জেলা প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম ইমামকে কল করলে ইমাম জানায় উদ্ধবগঞ্জ বাজারে আছে, তবে তার মোবাইলে চার্জ নাই লাইভ প্রোগ্রাম করার মত। সুলতান মাহমুদ ইমামকে বলেন বিশেষ প্রতিনিধি সফর উদ্দিন সবুরকে নিয়ে লাইভ করার জন্য।

কথা বলার মাঝখানে মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। সুলতান মাহমুদ তার নারায়ণগঞ্জ অফিসে প্রবেশ করে মোবাইল চার্জ দেয় এবং ‘জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাসিক সভা করেন। মোবাইল চার্জ হলে ৮.৫৪ মিনিটে সভা চলাকালীণ সময়ে বিশেষ প্রতিনিধি সবুরের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন এবং রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করেন।

তথ্যমতে, সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ কর্তৃক দায়ের কৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা ও অন্যান্য মামলার আসামী ওমর ফারুক পিতা: নুরা বেপারী, সাং-ভাটীবন্দর, থানা: সোনারগা এর প্ররচনায় এবং তিতাস গ্যাসের ৪৮ কোটি টাকা আতœস্বাৎকারী, বিদেশে অর্থ পাচার কারী রংধনু সিএনজি পাম্পের মালিক মোতাহার সিকদার মাসুমের প্রভাবে রফিকুল ইসলাম নান্নু সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের নাম ষড়যন্তমুলকভাবে, অন্যের প্ররোচনায় ও প্রতিহিংসায় হেফাজত কান্ডে সোনারগাঁ থানায় মামলা নং ১৩ তারিখ ৯ এপ্রিল ২১ইং তে অন্তর্ভুক্ত করে।

বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও অসহায়ের জমি দখলকারী রফিকুল ইসলাম নান্নুর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের নাম জড়ানো হয়েছে, যার প্রমাণ অপরাধ বিচিত্রার কাছে রয়েছে। ঘটনাটি জানার পর নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমকে ফোনে অবগত করলে তিনি আশ্চর্য হয়ে বলেন, “আপনার নামে মামলা করেছে, আপনি সোনারগাঁ ওসি ও সার্কেল এসপির সাথে কথা বলেন, বাকিটা পরে দেখা যাবে”।

অপরাধ বিচিত্রা থেকে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমানকে ঘটনাটি ফোনে অবগত করলে তিনি বলেন, মামলা থেকে সুলতান মাহমুদের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন।  এই ব্যাপারে অপরাধ বিচিত্রা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, পুলিশ সুপার, নারায়নগঞ্জ ও সোনারগাঁও থানার ওসি  বরাবর  আবেন করা হয়। কিন্তু আবেদনের প্রেক্ষিতে অদ্য পর্যন্ত কোন কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 3 =